নৌপুলিশের অভিযান : ৩৫ লাখ মিটার জাল জব্দ

আগের সংবাদ

পঞ্চম দফায়ও সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা > ভোটে ঝরল আরো ১১ প্রাণ : পুলিশের গাড়িতে আগুন, আহত শতাধিক, আটক অর্ধশত

পরের সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড সংক্রমন : ওমিক্রনের উত্থানে মহামারি পতনের আশা বিজ্ঞানীদের

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ওমিক্রনের বিস্তার ঘটছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। তার গতির দ্রুততা হার মানিয়েছে সব কল্পনাকেও। যুক্তরাষ্ট্রে গত সোমবার শুধু একদিনেই ১০ লাখের বেশি সংক্রমিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত দুই বছর ধরে বিশ্বজুড়ে করোনার তাণ্ডবকালেও কখনো কোনো দেশে একদিনে এর অর্ধেকও শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিস্তারের মধ্যে গত বছর ৭ মে ভারতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ১৪ হাজার রোগী শনাক্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। অন্যদিকে একদিন আগে ইউরোপে সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা জানায় একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, গত এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ নাগরিকের একজন কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। গত সোমবার একদিনেই ৩ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়। স্কুল আর অফিস বন্ধ করে দিতে হচ্ছে অনেক এলাকায়। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা বিঘিœত হওয়ার শঙ্কা জাগছে বাজার পরিস্থিতি নিয়েও। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। পরিস্থিতি দেখে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলো খোলার পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রে ২ হাজার ৭৫০টির বেশি স্কুল বন্ধ রয়েছে। রয়টার্স বলছে, গত সোমবার নিউইয়র্কে যত জনের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছিল, তাদের প্রতি তিনজনে একজন পজেটিভ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ এ শহরে সংক্রমণের হার ৩৩ শতাংশের বেশি, যেখানে জাতীয় হার ১৮ শতাংশ।
এদিকে নতুন কয়েকটি গবেষণায় করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠছেন বিজ্ঞানীরা। আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়ালেও মারাত্মক অসুস্থতা এবং হাসপাতালে ভর্তির পরিমাণ কম। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিউনোলোজিস্ট মোনিকা গান্ধী বলেন, আমরা বর্তমানে সম্পূর্ণ ভিন্ন পর্যায়ে আছি। ভাইরাসটি সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকবে, কিন্তু আমি আশা করছি এই ভ্যারিয়েন্টটি আমাদের এত বেশি প্রতিরোধ ক্ষমতা দেবে যে, তাতে করে মহামারি শেষ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে ভারতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ভোট সামনে রেখে প্রচারণায় থাকা মুখ্যমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার সকালে নিজেই টুইট বার্তায় জানান, পরীক্ষায় আমার কোভিড পজেটিভ এসেছে, উপসর্গ মৃদু। বাড়িতে ‘আইসোলেশনে’ আছি। গত কয়েক দিনে যারা আমার সংস্পর্শে এসেছেন, তারা দয়া করে ‘আইসোলেশনে’ থাকুন, কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নিন। দিল্লিতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আগ্রাসী ধরন ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যাও। দিল্লিতে ‘হলুদ’ সতর্কতা সংকেত বহাল রয়েছে এখন। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, যাদের নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিল, তার ৮১ শতাংশে ওমিক্রন মিলেছে। তবে ভারতে বর্তমানে অসুস্থ থাকা রোগীর সংখ্যা মোট শনাক্তের ১ শতাংশেরও কম। তাছাড়া সুস্থ হওয়ার হার উন্নীত হয়েছে ৯৮ দশমিক ২ শতাংশে। দেশটিতে অতিসংক্রামক ওমিক্রন রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭০০ জনে। চলমান গণটিকাদান কর্মসূচিতে দেশজুড়ে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস টিকার ১৪৬ কোটি ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার ১৫ থেকে ১৮ বছরের ৩৮ লাখ কিশোর বয়সিকে টিকা দেয়া হয়।

৪৬টি মিউটেশন
হলো ভাইরাসের
ফ্রান্সে মিলল নয়া
ভ্যারিয়েন্ট ‘ইহু’

কাগজ ডেস্ক : করোনার রূপ ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের শেষ হতে না হতে ফের ভাইরাসের নয়া রূপের খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। অন্তত তেমনটাই দাবি করেছেন ফ্রান্সের এক দল বিজ্ঞানী। ফ্রান্সের মেডিটেরানি ইনফেকশন নামে একটি সংস্থার গবেষকরা কোভিডের এই রূপের নাম দিয়েছেন ‘ইহু’।
গবেষকদের দাবি, এই নয়া রূপটিতে ভাইরাসের অন্তত ৪৬টি মিউটেশন হয়েছে। ফলে এর সঙ্গে লড়াইয়ে কোভিডের চলতি টিকাগুলো কার্যকর নাও হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। ফ্রান্সের মার্সেই শহরে ১২ জনের শরীরে করোনার এই নয়া রূপের খোঁজ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এই শহরের অনেকেই নিয়মিত আফ্রিকার দেশগুলোতে যাতায়াত করেন। বিশেষত ক্যামেরুনে তারা বেশি যান। সে দেশ থেকে ভাইরাসের এই নয়া রূপ রোগীর শরীরে প্রবেশ করছে কিনা তা বোঝার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। বর্তমানে করোনার ওমিক্রন রূপই বিশ্বে বিভিন্ন প্রান্তে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাইরাসের এই নয়া রূপ ইহু কতটা সংক্রামক তা এখনো স্পষ্ট জানাননি গবেষকরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুধু ফ্রান্সেই কয়েকজন রোগীর শরীরে এর উপস্থিতির কথা জানিয়েছে। তাই একে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনার নয়া রূপ ঘোষণার আগে আরো কিছুটা খতিয়ে দেখতে চাইছে তারা।
এ প্রসঙ্গে একটি দীর্ঘ টুইট করে মহামারি বিশেষজ্ঞ এরিক ফেইগল-ডিং বলেন, এখন করোনার নতুন রূপগুলো একের পর এক আসতে থাকবে। তার মানে এই নয় যে তারা প্রত্যেকেই বিপজ্জনক। সংখ্যা বৃদ্ধি করার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে এটির বিপজ্জনক হয়ে ওঠার মাত্রা। মূল ভাইরাসটি থেকে কতগুলো মিউটেশন হচ্ছে তাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানান তিনি। গত বছর প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খবর মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারপর বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে করোনার এই রূপ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়