কাগজ ডেস্ক : গত বছর স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টা করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি সমুদ্রে হারিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে ওয়াকিং বর্ডারস নামের একটি নজারদারি সংস্থা। নিখোঁজ এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে অন্তত ২০৫টি শিশুও আছে বলে গত সোমবার জানায় তারা।
সংস্থাটি জানায়, ২০২১ সালে সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া এই হতভাগ্যদের সংখ্যা আগের বছরের দ্বিগুণেরও বেশি। ২০১৮ সাল থেকে ওয়াকিং বর্ডারস এই সংখ্যা টুকছে। সে সময় থেকে আর কোনো বছরই এত বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়নি। ওয়াকিং বর্ডারস বা কামিনান্দো ফ্রন্তেরাস নামে পরিচিত এই সংস্থা সমুদ্রে বিপুলসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যুর জন্য ক্রমশ বিপজ্জনক রুট বেছে নেয়া, নি¤œমানের নৌকা ব্যবহার এবং বিপদে পড়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সহায়তার ক্ষেত্রে কিছু কিছু নৌযানের আতঙ্কগ্রস্ত থাকাকেই দায়ী করেছে বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। গত বছর সমুদ্র বা স্থলপথ দিয়ে কাগজপত্র ছাড়া আসা ৩৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী স্পেনে পৌঁছাতে সক্ষম হন বলে দেশটির সরকারি হিসাবে দেখা গেছে। এই সংখ্যা আগের বছরের কাছাকাছি। ওয়াকিং বর্ডারস জানায়, ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্পেন যেতে চেয়ে সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ৯০ শতাংশেরও বেশি ছিল দুর্ঘটনায় পড়া সেই ১২৪টি নৌযানের যাত্রী, যেগুলোর গন্তব্য ছিল ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ।
২০২০ সাল থেকে আফ্রিকা উপকূলে থাকা এই দ্বীপপুঞ্জটি স্পেন পৌঁছাতে চাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রধান গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে। সেই তুলনায় অনেক কম লোকই এখন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে স্পেনের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। কামিনান্দো ফ্রন্তেরাস প্রতিষ্ঠাতা হেলেনা মালেনো রয়টার্সকে বলেন, তারা মূলত নৌযানে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে বিপদে পড়ার পর সাহায্য চাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য রাখা ‘হটলাইন’ এবং নিখোঁজদের সন্ধান চাওয়া পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য জোগাড় করে থাকেন। তারা প্রতিটি নৌযানের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করে। এক মাস বা তার বেশি সময় ধরে নিখোঁজ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তারা মৃত ধরে নেয়।
জাতিসংঘের অভিবাসনবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএমের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের শুরু থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ৯৫৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন বা মারা গেছেন। ২০১৪ সালে সংস্থাটি হিসাব রাখা শুরু করার পর এ পথে এটাই সর্বোচ্চ নিখোঁজ। আইওএম মূলত সরকারি রেকর্ড, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং ওয়াকিং বর্ডারসসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছ থেকে তথ্য নেয়। সংস্থাটি বলছে, তাদের হিসাবে নিখোঁজের তুলনায় প্রকৃত সংখ্যা ‘সম্ভবত কয়েকগুণ বেশি’। স্পেন তাদের তীরে পৌঁছানোর চেষ্টায় মৃতদের কোনো হিসাব রাখে না। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াকিং বর্ডারসের দেয়া তথ্য প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে রাজিও হননি বলে জানায় রয়টার্স।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।