নৌপুলিশের অভিযান : ৩৫ লাখ মিটার জাল জব্দ

আগের সংবাদ

পঞ্চম দফায়ও সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা > ভোটে ঝরল আরো ১১ প্রাণ : পুলিশের গাড়িতে আগুন, আহত শতাধিক, আটক অর্ধশত

পরের সংবাদ

গ্রেপ্তার ৩ : কোটি টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে যুবককে শ্বাসরোধে হত্যা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর দারুসসালাম এলাকা থেকে অপহৃত নুরুল আমিন (২৮) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার জহুরাবাদ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। ডিবি পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর, তারাই নুরুল আমিনের লাশ বের করে দেন। প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে, নিহতের স্বজনদের কাছে দাবিকৃত কোটি টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে শ্বাসরোধ করে নুরুল আমিনকে হত্যা করে ওই জায়গায় ফেলে দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আরিফুল ইসলাম, ইমরান হোসেন ও ইয়ামিন মোল্লা।
ডিবির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মানস কুমার পোদ্দার বলেন, গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে দারুসসালাম থানা এলাকা থেকে নুরুল আমিন নামে এক ব্যক্তি নিখোঁজ হন। এ বিষয়ে ভিকটিমের চাচা দারুসসালাম থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তী সময় গ্রেপ্তারকৃতরা ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ভিকটিমের চাচাকে ফোন করে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের চাচা দারুসসালাম থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। একপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ভিকটিমের পূর্ব পরিচিত। তারা জহুরাবাদ এলাকায় ইমরানের ভাড়া বাসায় ভিকটিম নুরুল আমিনকে ডেকে নিয়ে সুকৌশলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ভিকটিমের লাশ বস্তাবন্দি করে জহুরাবাদের বেড়িবাঁধে ফেলে দেয়। পরবর্তী সময় গ্রেপ্তারকৃতদের দেখানো মতে জহুরাবাদের বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে ভিকটিমের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, নুরুল আমিনের বাড়ি নরসিংদীতে। নুরুল আমিনের চাচা মো. শফিউদ্দিন আহমেদ একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। নুরুল আমিন ছোটবেলা থেকেই তার চাচা শফিউদ্দিনের কাছে থাকতেন। টাকাটা তার কাছেই চাওয়া হয়েছিল। শফিউদ্দিন আহমেদ জানান, তার আশঙ্কা অপহরণের পরপরই নুরুল আমিনকে হয়তো হত্যা করা হয়েছে। তারা খুন করেই ক্ষান্ত হননি, মুক্তিপণও আদায় করতে চেয়েছিল। নুরুল আমিনের যুক্তরাজ্যে যাওয়ার কথা ছিল বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নুরুল আমিন রাত ১০টার মধ্যেই ঘরে ফেরেন। রবিবার বিকালে বাসা থেকে বের হন তিনি। বড় ভাইয়ের শ্বশুরবাড়িতে নুরুল আমিনের মা আসায় তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় বড় ভাইয়ের মোটরসাইকেলে চড়ে আসছিলেন। রাত ১১টা পর্যন্ত নুরুল আমিন বাসায় না ফেরায় তারা খোঁজ শুরু করেন। ওই সময় তার মুঠোফোনটিও বন্ধ ছিল। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা দারুসসালাম থানায় যান। থানা চত্বরেই মোটরসাইকেলটি দেখতে পেয়ে তারা পুলিশের কাছে জানতে চান চালককে দেখেছেন কিনা।
পুলিশ জানায়, তারা বেড়িবাঁধের ওখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় মোটরসাইকেলটি দেখে থানায় নিয়ে আসে। গত সোমবার দুপুরের দিকে নুরুল আমিনের মুঠোফোন থেকে একটা ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে শফিউদ্দিনের কাছে এক কোটি টাকা চাওয়া হয়।
স্বজনরা জানান, অপহরণের দিন বাড়ি ফেরার পথে তার একটি ফোন আসায় তিনি কাউকে না বলে কোথাও গিয়েছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা বন্ধু-বান্ধবরা পরিবারকে জানিয়েছে, ফোনটা আসামাত্রই তাড়াহুড়ো করে নুরুল আমিন চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তার মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়