মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় স্থবির উত্তরের জনপদ : শীতজনিত রোগে আক্রান্ত বৃদ্ধ ও শিশুরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে কুড়িগ্রাম, নওগাঁ ও পঞ্চগড়সহ উত্তরের জনপদে। এতে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহের ফলে দেখা দিয়েছে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, আমাশয় এবং শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগ। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
কুড়িগ্রাম : গত তিন দিন ধরে উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠাণ্ডায় কুড়িগ্রামে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। কুয়াশা আর মেঘের ছটায় প্রায় সময়টাতেই ঢেকে থাকে গোটা জনপদ। সকাল থেকে হালকা কুয়াশায় সূর্যের আলো দেখা যায় না। দুপুর গড়িয়ে গেলে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও রোদের উত্তাপ তেমনটা অনুভূত হয় না। ফলে এ জনপদে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। শীতকে উপেক্ষা করে কেউ কেউ বাইরে বেরুলেও কষ্টের সীমা নেই তাদের।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস জানায়, গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত দিনের চেয়ে ৩ ডিগ্রি আরো কমেছে। এদিকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন গবাদিপশুও পড়েছে চরম কষ্টে। শীতবস্ত্রের অভাবে ও ঠাণ্ডার প্রকোপে অতি কষ্টে দিন কাটছে

জেলার হতদরিদ্র মানুষের। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের কষ্ট আরো চরমে পৌঁছেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলায় এবারের শীতে ছিন্নমূল মানুষের যাতে কষ্ট পেতে না হয় সেজন্য ইতোমধ্যেই ৩৫ হাজার কম্বল দেয়া হয়েছে এবং ৯ উপজেলায় আরো ১ কোটি ৯ লাখ টাকার শীতের কাপড়সহ কম্বল কিনে তা উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওদের মাধ্যমে বিতরণ চলছে।
মহাদেবপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর মহাদেবপুরসহ জেলার ১১ উপজেলায় প্রচণ্ড শীতে মানুষ জবুথবু হয়ে পড়েছেন। জেলায় সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত কম্বল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গত ১ জানুয়ারি থেকে উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ জেলার ১১ উপজেলায় শুরু হওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহে জেলার জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষসহ দিনমজুর শ্রেণির দৈনন্দিন কর্মজীবী নারী-পুরুষ শ্রমিকরা। প্রচণ্ড শীতের কারণে এসব শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। কর্মহীন বেকার কর্মজীবী মানুষ শীতের গরম কাপড় কেনা তো দূরের কথা তাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে আহার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ জেলা এবং উপজেলার নতুন ও ফুটপাতের পুরনো শীত কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন। এছাড়া শৈত্যপ্রবাহের ফলে জেলায় দেখা দিয়েছে বৃদ্ধ ও শিশুদের শীতজনিত নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, আমাশয় এবং শ্বাসকষ্ট রোগ। গতকাল সোমবার নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. মঞ্জুরে মোর্শেদ জানান, জেলা সদরসহ ১১ উপজেলায় সাধারণ পর্যায়ের চেয়ে ৬ থেকে ৭ শতাংশ শীতজনিত ওইসব রোগ বেড়েছে। খাবার স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ রয়েছে দাবি করে তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সার্বিকভাবে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলার শীর্তাত অভাবী ও অসহায় দুস্থ মানুষ শীতের গরম কাপড় পেতে জেলার সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভিড় করছেন। জেলা সদরসহ মহাদেবপুর, পতœীতলা, বদলগাছী, ধামুইরহাট, পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, মান্দা, আত্রাই ও রানীনগর উপজেলায় এবং নওগাঁ সদর, নজিপুর ও ধামুইরহাট পৌরসভা এলাকার জন্য সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে যে পরিমাণ কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। গতকাল সোমবার নওগাঁ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. কামরুল আহসান জানান, ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত ৪৭ হাজার ৯০০ পিস কম্বল জেলার ১১ উপজেলা এবং ওই সব পৌরসভা এলাকায় বসবাসকারী দুস্থ ও অসহায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে অতিরিক্ত কম্বল কেনার জন্য নতুন করে ৮৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই বরাদ্দকৃত অর্থে কম্বল কেনা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়