মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

হতাশা কাটিয়ে জয় নিয়ে ফিরল বার্সা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : লা লিগায় চলতি মৌসুমে ব্যর্থতার চাদরে মুড়ে গেছে জায়ান্ট ক্লাব বার্সেলোনা। লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেয়ে এখন তাদের পরিকল্পনা কোনো রকম টেবিলের সেরা চারে থেকে মৌসুমটা শেষ করা। এর মধ্যে আবার ইনজুরি করোনার হানায় একাদশ থেকে ছিটকে গেছেন তারকা ফুটবলাররা। তবে সব হতাশা কাটিয়ে বছরের প্রথম ম্যাচে জয় নিয়ে ফিরেছে বার্সেলোনা। স্প্যানিশ লিগে গতকাল মায়োর্কার বিপক্ষে ১-০ গোলের ব্যবধানে জিতেছেন জাভি হার্নান্দেজের শিষ্যরা। ম্যাচের একমাত্র জয়সূচক গোলটি করেন ডাচ স্ট্রাইকার লুক ডি ইয়ং।
বড়দিনের ছুটির পরে প্রতিপক্ষের মাঠে গতকাল লা লিগার ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ পর লিগে জয়ের দেখা পেল কাতালান দলটি। বড়দিনের বিরতির আগে সেভিয়ার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছিল তারা। করোনা ভাইরাস ও চোটের থাবায় জর্জরিত বার্সেলোনার ১৭ খেলোয়াড় মাঠের বাইরে। ‘বি’ দলের অনেককে নিয়ে মায়োর্কার বিপক্ষে দল সাজান বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ। বল দখলে শুরু থেকে একচেটিয়া আধিপত্য করা বার্সেলোনা দশম মিনিটে প্রথম উল্লেখযোগ্য সুযোগ পায়। তবে ‘বি’ দলের ১৭ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ইলিয়াসের শট বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন মায়োর্কার গোলরক্ষক মানোলো রেইনা। ২৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত সফরকারীরা। ফেররান হুতগøার পাসে লুক ডি ইয়ংয়ের শট গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও বল পোস্টে লাগে। পরের মিনিটে অস্কার মিনগেসার ক্রসে ডি-বক্সে ডি ইয়ংয়ের অসাধারণ ওভারহেড কিকে বল ক্রসবারে লেগে ফেরে। অবশেষে ডি ইয়ং বিরতির আগে ‘ডেডলক’ ভাঙেন। মিনগেসার ক্রসে দূরের পোস্টে লাফিয়ে হেডে গোলটি করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে ভালো একটি সুযোগ পান বার্সেলোনার নিকো গঞ্জালেস। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ১৯ বছর বয়সী এ স্প্যানিশ মিডফিল্ডারের শট লক্ষ্যে থাকেনি। বাকি সময়ে তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বার্সেলোনা। বরং তাদের ওপর চাপ বাড়ায় স্বাগতিকরা। ৮৪তম মিনিটে জর্দি এমবুলার জোরালো হেড পোস্টের সামান্য ওপর দিয়ে উড়ে যায়। যোগ করা সময়ে ইয়াওমে কস্তার ভলি দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। ১৯ ম্যাচে আট জয় ও সাত ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে উঠেছে বার্সেলোনা। আরেক ম্যাচে রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ ৩২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে। এদিকে সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে ২-০ গোলে হারা রিয়াল বেতিস ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে টেবিলের তিন নম্বরে। ১৮ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সেভিয়া। গেতাফের বিপক্ষে ১-০ গোলে হারা রিয়াল মাদ্রিদ ২০ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে।
এদিকে বার্সেলোনা দলের অন্তত ৯ জন করোনা আক্রান্ত। করোনার থাবায় জর্জরিত পুরো দল। কিন্তু লা লিগার নতুন নিয়ম অন্তত ১৪ জন ফিট থাকলে ম্যাচ খেলতে হবে। সে হিসেবে বার্সেলোনা গতকাল খেলতে গিয়েছিল মায়োর্কার বিপক্ষে। যদিও বার্সা ‘বি’ দল থেকে ৯ খেলোয়াড়কে সিনিয়র দলে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছিলেন কোচ জাভি হার্নান্দেজ। তবে করোনা জর্জরিত হলেও এবার যেহেতু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা কম, সেহেতু বার্সা কোচ জাভির লক্ষ্য যেভাবেই হোক মৌসুম শেষে সেরা চারটি দলের একটি হওয়া। গতকাল লা লিগের ম্যাচে সে লক্ষ্যে এক ধাপ এগিয়ে গেছে বার্সা। মায়োর্কার মাঠে গিয়ে স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়েছে কাতালানরা। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলে পঞ্চম স্থানে উঠে এলো বার্সা। চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে তাদের ব্যবধান মাত্র ১ পয়েন্টের। সমান ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৩২। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে একমাত্র গোল করে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন লুক ডি ইয়ং। এই এক গোলেই রায়ো ভায়েকানো ও রিয়াল সোসিয়েদাদকে পেছনে ফেলে দেয় বার্সেলোনা। বার্সার বিপক্ষে এই ম্যাচের আগে নিজেদের মাঠ সান মোইক্সে মায়োর্কা সর্বশেষ ৯ ম্যাচের মধ্যে হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচে। এই ম্যাচেও প্রায় সমতায় চলে এসেছিল মায়োর্কা। হাওমি কস্তা অসাধারণ একটি শট নেন বার্সা গোলপোস্ট লক্ষ্যে। কিন্তু তার চেয়েও দুর্দান্তভাবে সেই শটটি ঠেকিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান। ৯ জনের মতো কোভিড-১৯ পজিটিভ। রয়েছে প্রচুর ইনজুরি আক্রান্ত খেলোয়াড়। শুধু তাই নয়, নিষেধাজ্ঞার কারণেও খেলতে পারেননি কেউ কেউ। সব মিলিয়ে বার্সা স্কোয়াডের মাত্র ১১ জন ছিল যাদেরকে নিয়ে মায়োর্কার বিপক্ষে খেলতে যেতে হয়েছে জাভি হার্নান্দেজকে। এর মধ্যে আবার ছিলেন ২ জন গোলরক্ষক। যে কারণে তিনি বার্সা ‘বি’ দল থেকে খেলোয়াড় নিয়ে যান সান মোইক্সে। আনসু ফাতি, মেম্ফিস ডিপাই, মার্টিন ব্র্যাথওয়েটরা খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে।
. এছাড়া ওসমান ডেম্বেলে, আবদে এজালজৌলি, ফিলিপ কৌতিনহোসহ ৮ থেকে ৯ জন ফুটবলার করোনা আক্রান্ত। দলে নতুন আসা ফেরান তোরেসও কোভিড-১৯ পজিটিভ। ম্যাচের পর গোলদাতা লুক ডি ইয়ং বলেন, ‘আমি সত্যিই অভিভূত। খুবই খুশি যে আমরা ম্যাচটি জিততে পেরেছি। বিশেষ করে আমার গোলেই। এই জয়টা দলের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। প্রথমার্ধটা ছিল খুবই কঠিন। তবে সবচেয়ে বড় কথা আমরা শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পেরেছি, এটাই অনেক বড়।’
এদিকে করোনা শুধু যে বার্সেলোনা শিবিরে আঘাত হেনেছে এমন না, পুরো ইউরোপের ফুটবলই করোনায় জর্জরিত। এর আগে রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেও হানা দেয় করোনা। ফ্রান্সে বেড়েই চলছে আক্রান্তের সংখ্যা। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপার স্টার লিওনেল মেসি। পিএসজির হয়ে ফরাসি কাপে গত রাতের ম্যাচটি তার খেলা হবে না এটা নিশ্চিত। কবে নাগাদ মাঠে ফিরবেন, মেসি তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। এদিকে পিএসজি কোচ পচেত্তিনো জানিয়েছেন আগামী সপ্তাহে লিগ ওয়ানে লিওর বিপক্ষে খেলা হবে না তার। পিএসজির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, করোনা টেস্টে তাদের চারজন ফুটবলারের পজিটিভ ধরা পড়েছে। তারা হলেন হুয়ান বেরনাত, সার্জিও রিকো, নাথান বিতুমাজাল এবং লিওনেল মেসি। তাদেরকে দল থেকে আলাদা করে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তাদেরকে পিএসজির নিজস্ব স্বাস্থ্য প্রটোকলে রাখা হয়েছে। এদিকে অনেক সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়ে দিয়েছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি। তবে ওমিক্রন কিংবা অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্টে মেসি আক্রান্ত সে বিষয়ে তার ক্লাব পিএসজির পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দাপটে ইউরোপজুড়েই ফুটবল ম্যাচ বাতিল হচ্ছে। এর মধ্যে ইংলিশ ক্লাবগুলোর অবস্থা একেবারে নাজুক। বিশ্বজুরে নতুন করে আবার হানা দিয়েছে করোনা। সে ঝড় পিএসজির শিবিরে হানা দেওয়ায় চিন্তিত ক্লাব ও সমর্থকরা। মেসি ছাড়াও নেইমারকেও পাচ্ছে না পিএসজি। ইনজুরি থেকে সেরে উঠতে আপাতত ব্রাজিলেই থাকছেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়