মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

সুগন্ধায় লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড : মারা গেলেন দুই সন্তান হারানো রাসেলও > অথরিটির দুর্বলতা আছে : নৌ প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ রাসেল শেখ (৩৮) নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ নিয়ে রাসেলের পরিবারের ৯ সদস্যের ৬ জনেরই মৃত্যু হলো লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। আর সব মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৭-এ।
এর আগে, রাসেলের দুই সন্তান জীবন (১৪) ও ইমন (৯), তার শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম (৬০) এবং শ্যালকের স্ত্রী রুমা (২০) ও রুমার মেয়ে অহনা (৩) দগ্ধ হয়ে মারা যান। তবে তার দুই সন্তানের মরদেহ এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এদিকে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় দগ্ধদের দেখতে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে যান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন রাসেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দগ্ধ রাসেল আমাদের এখানে ভর্তি হন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা যান তিনি। তার শরীরের ১৮ শতাংশ দগ্ধ এবং শ্বাসনালি পুড়ে গিয়েছিল।
নিহত রাসেলের ভাই মুন্না শেখ জানান, তাদের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার নোওয়াপাড়া গ্রামে। বাবার নাম মৃত গাফফার শেখ। বর্তমানে সবুজবাগ মাদারটেক চৌরাস্তা এলাকায় থাকতেন। লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের পর রাসেলের স্ত্রী পুতুল (৩২), শ্যালক কালু (২৮) ও রবিনকে (১৬) আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। আর রাসেলের শাশুড়ি মনোয়ারা বেগম, কালুর স্ত্রী রুমা আক্তার, তার মেয়ে অহনা ঘটনাস্থলে মারা যায়। কিন্তু রাসেলের দুই ছেলে ইমন (৮) ও জীবনের (১২) মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।
বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এর আগেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেটা তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছি। মেরিন কোর্টে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছর। এই আইনে সীমাবদ্ধতা আছে, এখানে আমাদের আরো কাজ করতে হবে। আমরা কাজ করছি। আমরা যারা অথরিটি আছি, আমাদের দুর্বলতা আছে। মালিকসহ যারা এর সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট আছেন তাদেরও দুর্বলতা আছে। এই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা আমাদের একটি চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, ধীরে ধীরে কিন্তু দুর্ঘটনা কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আগুনে পুড়ে যাওয়া জলযান এটাই প্রথম। এভাবে কখনো পুড়েনি বা পুড়ে যাওয়ার কথা নয়। আমাদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট এলেই আমরা জানতে পারব এটার মূল কারণটা কী? রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি, ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমাদের একটা ধারণা হয়েছে। নৌ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হলে তা মালিকের চাপে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, মালিকদের কাছে জিম্মি কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এটা দীর্ঘদিনের অভ্যাস। এটা রাতারাতি সমাধান করা যাবে না। আমাদের বোধের অভাব আছে। আমরা একা ভালো থাকতে চাই। কিন্তু একা ভালো থাকা যাবে না। সম্মিলিতভাবে ভালো থাকতে হবে। আর অভিযান চলমান আছে, বন্ধ হবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অবশ্যই যাত্রীবান্ধব ও নিরাপদ সেবা দিতে হবে। যারা সেবা দিতে পারবে না, তারা এই সেক্টরে থাকতে পারবে না। যে আইন আছে, সেই আইনে চলছি। এখন আইনটাকে রিনিউ (নবায়ন) করতে কার্যক্রম চলছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় পৌঁছলে সুগন্ধা নদীতে গত ২৩ ডিসেম্বর আগুনে পুড়ে যায়। এ দুর্ঘটনায় এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, লঞ্চটিতে অন্তত ৪০০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকের দাবি, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজারের মতো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়