মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

লাখ টাকা থাকলেই শুল্ক কাটছে ব্যাংক : ন্যূনতম ১৫০, সর্বোচ্চ ৪০ হাজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ব্যাংকে রাখা আমানত থেকে সরকার নির্ধারিত হারে আবগারি শুল্ক কাটছে ব্যাংকগুলো। গত বছরের শেষ দিকে নয়তো নতুন বছরের প্রথম দিনেই গ্রাহকরা তাদের মোবাইলে এ সংক্রান্ত খুদে বার্তা পেয়েছেন। বার্তাটিতে তার যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে, সেই অ্যাকাউন্ট থেকে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা কেটে রাখার কথা বলা হয়েছে। তবে আবগারি শুল্ক সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকেই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ এ শুল্কের হার নিয়েও আপত্তি তুলেছেন।
তেমনি একজন গ্রাহক নাসরিন পারভীন রীটা। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর প্রায় মধ্য রাতে আমার মোবাইলে একটা এসএমএস আসে। সেখানে লেখা রয়েছে ৩ হাজার টাকা কেটে রাখা হয়েছে এক্সাইজ ডিউটি হিসেবে। আমি প্রথমে ভাবলাম হয়তো আমার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। কিন্তু পরে আরো কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম তাদেরও টাকা কাটা হয়েছে। তবে আমার টাকার অঙ্কটা বেশি। এর কারণ আমি এখনো বুঝতে পারছি না।
ব্যাংক আবগারি শুল্ক হলো ব্যাংক আমানতের ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে সরকারের কর বা শুল্ক। ২০২০ সালের জুলাই থেকে হিসাব করে বছরান্তে এখন সেই অর্থ রাজস্ব বোর্ডের হয়ে কেটে নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। বছর শেষ হওয়ায় এখন সবার অ্যাকাউন্ট থেকে এ টাকা কেটে সরকারি কোষাগারে জমা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
বর্তমান নিয়মে সারা বছরে যদি ব্যাংক হিসাবে স্থিতি ১ লাখ টাকার কম থাকে, তাহলে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। কিন্তু সারা বছরের কোনো সময় যদি ব্যাংক হিসাবে ১ লাখ টাকার বেশি কিন্তু ৫ লাখ টাকার কম থাকে, তখন ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হচ্ছে। আর সারা বছরের কোনো সময় যদি ব্যাংক হিসাবে ৫ লাখ টাকার বেশি কিন্তু ১০ লাখ টাকার কম থাকে, তখন তাকে ৫০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হচ্ছে এক বছরের জন্য।
অন্যদিকে ব্যাংক হিসাবে বছরের কোনো সময় অর্থের পরিমাণ ১০ লাখ টাকার বেশি হয়েছে, কিন্তু ১ কোটি টাকা ছাড়ায়নি, সেসব হিসাব থেকে ৩ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি টাকার বেশি ছিল কিন্তু ৫ কোটি টাকার কম ছিল, এমন হিসাবধারীদের ১৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হচ্ছে। সারা বছরের কোনো সময় যদি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি টাকার বেশি থাকে, তখন ৪০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। বছরে একবারই এ শুল্ক নেয়া হয়ে থাকে।
আবগারি শুল্ক কেন কেটে নেয়া হয়? এ প্রশ্নের জবাবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুর রহমান বলেন, এটা সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির একটা প্রক্রিয়া। সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইন্টারনাল রিসোর্স ডিভিশন, যেটাকে আইআরডি বলে তাদের নির্দেশনা মতো হয়। এখানে ব্যাংকের কোনো আয় নেই। পুরোটাই ব্যাংক সরকারের হয়ে সংগ্রহ করে সরকারের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়।
প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে সঞ্চয়ী হিসাব (যেমন বেতন-ভাতার টাকা কিংবা সারা বছর যেসব হিসাবে লেনদেন হয়) থেকে আবগারি শুল্ক কাটে ব্যাংকগুলো। কারণ ব্যাংকের হিসাব-নিকাশের সময় জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর। অন্যদিকে স্থায়ী আমানতের হিসাবের ক্ষেত্রে যখন এফডিআর মেয়াদ পূর্তি হয়, তখন সঙ্গে সঙ্গে আবগারি শুল্কের টাকা কেটে রাখা হয়।
এ বিষয়ে কমিউনিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক আকসিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, আবগারি শুল্ক কেটে রাখায় কয়েক দিন ধরে আমরা গ্রাহকদের কাছ থেকে ফোন পাচ্ছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী আবগারি শুল্ক কাটা হচ্ছে। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, গ্রাহকদের ভয়ের কিছু নেই।
বাংলাদেশে কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব এখন এক লাখ ছুঁই ছুঁই। প্রতি বছরই কোটি টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ১০-১২ হাজার করে বাড়ছে। আর সার্বিকভাবে ব্যাংক হিসাব আছে কয়েক কোটি। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আবগারি শুল্ক আদায় হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়