মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

ফুটবলে নারী জাগরণ ও সাফ জয়ের গল্প

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ক্রিকেটের তুলনায় ফুটবলে বাংলাদেশ খুব বেশি উন্নতি করতে পারেনি। পৃথিবীজুড়ে যেখানে ফুটবলের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী সেখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট। এর পেছনে বড় কারণ ফুটবলে আশানুরূপ সাফল্যে এনে দিতে না পারা। বারবার সমর্থকদের হতাশ করা। তবে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মেয়েরা ফুটবল মাঠে আশার আলো নিয়ে হাজির হয়েছেন। তাদের সমর্থনে মাঠে হাজির হয় শিশু থেকে বুড়ো, এক কথায় সব বয়সের ক্রীড়াপ্রেমী। প্রতিপক্ষকে যখন হালি থেকে ডজন গোলে ভাসিয়ে মারিয়া মান্ডারা জয় তুলে নেয় এমন একটি ম্যাচে মাঠে হাজির না হয়ে কীভাবে ক্রীড়াপ্রেমী হওয়া যায়? গত বছরের ২২ ডিসেম্বর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সাফ শিরোপা জেতে বাংলাদেশের মেয়েরা। ওইদিন কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায়পূর্ণ ছিল। ফুটবলের তুলনায় বাংলাদেশে ক্রিকেট জনপ্রিয় সত্যি। এর পেছনে কারণটা ক্রিকেটে টাইগারদের পরাশক্তিদের বিপক্ষে দাপিয়ে বেড়ানো। যেটা ফুটবলে দেখা যায় না। তবে কমলাপুরে ওইদিন কিশোরীদের সমর্থনে আসা দর্শকদের সেই দৃশ্য মেয়েদের ক্রিকেটে কখনো হয়েছে এমনটা চট করে বলে ফেলা কঠিন। এর মানে ক্রিকেট ফুটবলের জায়গা দখল করে নিয়েছেন, বিষয়টা এমন না। আশার আলো নিয়ে দাঁড়ালে বাংলাদেশের ফুটবলের সমর্থনেও দর্শকরা গ্যালারি ফ্ল্যাশ লাইটের আলোয় আলোকিত করে তুলবেন। ফুটবলে বাংলাদেশের জাগরণের গল্প খুব সম্ভব শুরু হতে যাচ্ছে মারিয়া মান্ডাদের মাধ্যমে। সাবিনা খাতুনরা যেখানে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে এশিয়া কাপের টিকেট পেতে ব্যর্থ, সেখানে কিন্তু মারিয়ারাও পরপর দুইবার বয়সভিত্তিক সাফের শিরোপা জিতে নিল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন যদি শামসুন্নাহ, আঁখি খাতুন, আনাই মোগিনিদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করেন তাহলে সাবিনাদের ব্যর্থতা তারা ঘুচিয়ে তুলবেন। তারা লড়বেন এশিয়া কাপের টিকেট পাওয়ার জন্য নয়, বরং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। তাদের একের পর সাফল্য স্টেডিয়াম যখন কানায় কানায় পূর্ণ হবে, তখন দেশে ক্রিকেটের মতো গুরুত্ব দিয়ে তৈরি হবে ভিআইপি মানের স্টেডিয়াম। মানুষের জনপ্রিয়তা দেখে এগিয়ে আসবে নামি দামি কোম্পানির স্পন্সররা। ফুটবলারদের বেতন নিয়ে ভাবতে হবে না। অভিভাবকরা সন্তানকে শুধু ক্রিকেটার বানানোর চিন্তা না করে ফুটবলার তৈরির দিকেও মনোযোগ দেবেন। ফলে ফুটবলও পাবে প্রতিভাবান তরুণ-তরুণীর সন্ধান। যারা দেশের ফুটবলকে একদিন বিশ্বকাপের দোরগোড়ায় নিয়ে যাবে।
ফুটবলে মারিয়ারা দারুণ সম্ভাবনাময়ী। দেশের ক্রিকেটকে সাকিব-তামিমরা যেভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, পরিচর্যা পেলে ফুটবলকে ঠিক সেভাবে এগিয়ে নেবেন সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২১ সালের শিরোপাধারীরা। তারা ফুটবলে ঘটাবেন নারী জাগরণ। বাংলাদেশের মেয়েরা স্বপ্ন দেখবে ফুটবলার হওয়ার। ছেলেরাও উদ্যম নিয়ে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে এগিয়ে আসবে। তবে এই মারিয়ারা হুট করেই তো আর দর্শকদের মন জয় করে নেয়নি। তাদের করতে হয়েছে কঠোর অধ্যবসায়, অনুশীলন ও পরিশ্রম। আর তাদের মাঠের সাফল্য এই প্রতিবেদনেই তুলে ধরা হলো-
সাফল্যের শুরুটা ২০১৭ সালে। সেবার কমলাপুর স্টেডিয়ামে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা উৎসব করে বাংলাদেশের মেয়েরা। এর তিন বছর পর মেয়েরা আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসে। ২০১৮ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের কিশোরীরা ফের শিরোপা জিতে নেয়। ভুটানের সেই প্রতিযোগিতায় ফাইনালে নেপালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর তিন বছর কেটে গেল। এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ফেডারেশন বয়স এক বছর বাড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করেছে। এবারো বাংলাদেশের কিশোরীদের বাজিমাত। ঘরের মাঠের হাজার হাজার দর্শককে আনন্দের জোয়ারে ভাসিয়ে ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নেয় মারিয়ারা। এবার তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ সিনিয়র দলের হয়ে ট্রফি ঘরে তোলা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়