মেয়র প্রার্থীদের সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ২১ লাখ টাকা : নাসিক নির্বাচন

আগের সংবাদ

নতুন কারিকুলাম নিয়ে তালগোল : কাজ চলছে এনজিওর প্রেসক্রিপশনে > কমিটি থেকে ৪ বিশেষজ্ঞের পদত্যাগ > বই ছাপা হয়নি তবু পাইলটিং

পরের সংবাদ

ওমিক্রন ঠেকাতে বিধিনিষেধ, রেস্টুরেন্টে খেতে টিকা সনদ : মার্চ-এপ্রিলে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বজুড়ে ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। দেশেও কোভিড-১৯ সংক্রমণ ফের উর্ধ্বমুখী। ওমিক্রন মোকাবিলায় নানামুখী প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। দেশের জেলা পর্যায়ে হাসপাতালসহ করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা, দেশের প্রবেশ পথগুলোতে স্ক্রিনিং কার্যক্রম জোরদারসহ বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে এখনই লকডাউন দেয়ার কথা ভাবছে না সরকার। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে ওমিক্রন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম প্রমুখ। এ ছাড়া মাঠ পর্যায় থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), বিভাগীয় কমিশনার, স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক, সিভিল সার্জনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের পরিস্থিতি এখনো হয়নি। আমরা সুপারিশও করিনি। লকডাউনের পর্যায় পর্যন্ত যাতে না যেতে হয়, সেজন্যই এ বৈঠক। যা যা পদক্ষেপ নেয়ার, সেগুলো নিই। এরপর দেখা যাক কী দাঁড়ায়।
ওমিক্রন প্রতিরোধে যেসব বিধিনিষেধ আরোপের উদ্যোগের

কথা আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বন্দরগুলোতে আরো নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো, সব ধরনের অনুষ্ঠান কমানো, পরিবহনে সিট কমিয়ে চালানো, মাস্ক পরা নিশ্চিতে প্রয়োজনে জরিমানা করা হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য করোনা প্রতিরোধী টিকা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রাখার কথাও বলা হয়েছে।
এছাড়া কোয়ারেন্টাইনে ঢিলেঢালা পরিহার করা, টিকা গ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। যারা টিকা নিয়েছে তারা মাস্ক পরা অবস্থায় স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে। তবে যারা টিকা দেবে না তারা রেস্টুরেন্টে বসে খেতে পারবে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমরা সারাক্ষণই করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি আমাদের মনে হয়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য ক্লাস কমাতে হবে, কমিয়ে দেবো। প্রয়োজনে ক্লাস বন্ধ করে দেবো।
এদিকে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, ওমিক্রনের কারণে আগামী মার্চ-এপ্রিলে আবারো সংক্রমণ বাড়তে পারে। জেলা পর্যায়ে হাসপাতালের পুরো প্রস্তুতি জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে।
বুস্টার ডোজ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মহাপরিচালক বলেন, এখন দেশে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার পাশাপাশি বুস্টার ডোজও (৩য় ডোজ) দেয়া হচ্ছে। মূলক ফ্রন্টলাইনার এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সিদের বুস্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে। তবে যাদের কোমরবিডিটি আছে, করোনায় আক্রান্ত হলে যাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বেশি তারাও বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বয়স কোনো বাধা হবে না। বুস্টার ডোজের বয়সসীমাও কমানো হবে। শিগগিরই স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে ঘোষণা করবেন।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে টিকা কার্ড নিয়ে টিকাকেন্দ্রে যেতে হবে। তাকে বলতে হবে যে, তার শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে। একটা লোকের ক্যান্সার আছে, কিন্তু বয়স ৪০ বা তারও কম। সে বাদ যাবে কেন? ক্যান্সার ছাড়াও যারা এন্টিক্যান্সার ড্রাগ খাচ্ছেন, রেডিয়েশন পেয়েছে, কেমোথেরাপি পেয়েছে, ইমিউনটি দুর্বল এ ধরনের মানুষকে আমরা প্রাধান্য দিতে চাচ্ছি। টিকার জন্য নিবন্ধন করার সময়ে সব তথ্য নেয়া হয়েছে। ফলে তা দেখেই নিশ্চিত হওয়া যাবে যে তার কোমরবিডিটি আছে কিনা।
তিনি বলেন, টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণদের তালিকা বড় হচ্ছে। অনেকে দোকান বা অন্য মোবাইল ফোন থেকে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তাদের এসএমএস পাঠানো হলেও তারা রেসপন্স করছেন না। ফলে তালিকা বড় হচ্ছে। প্রবাসীদের অনেকেই দেশের বাইরে ২ ডোজ টিকা নিয়েছেন। দেশে এসে তারা বুস্টার ডোজ নিতে চাইলে করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখন যে প্রযুক্তিতে কাজ করছি সেখানে এই অপশনটি রাখা হয়নি। ফলে তাকে আমরা টিকার প্রথম ডোজ দেখিয়ে ৩য় টিকা দিয়ে দিতে পারব। পরবর্তী প্রযুক্তিতে তা সংযুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত দেশে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। আর গত ২৮ ডিসেম্বর বুস্টা ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়