মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

সেমিতে মোহামেডান

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : ফেডারেশন কাপ ফুটবলের প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে গতকাল চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পা রাখে ঢাকা মোহামেডান। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচটি ২-১ গোলের ব্যবধানে জিতে নেয় সাদা-কালো জার্সিধারীরা। মোহামেডানের হয়ে আরাফাত হোসেন ও শাহরিয়ার ইমন একটি করে গোল করেন। যোগ করা সময়ে ব্যবধান কমান আবাহনীর এবিমোবোই থ্যাঙ্কগড পিটার।
গত বছর সাইফ স্পোর্টিংয়ের কাছে টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গিয়েছিল মোহামেডান। অন্যদিকে গত আসরে সেমিফাইনাল খেলা চট্টগ্রাম আবাহনীর পথচলা এবার থামল কোয়ার্টার ফাইনালে। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গতকাল ম্যাচের শুরুতে ছিল দারুণ লড়াইয়ের আভাস। দ্বিতীয় মিনিটেই আক্রমণ শানায় মোহামেডান। কিন্তু ডান দিক থেকে ওবি মোনেকের নিচু ক্রস সুলেমানে দিয়াবাতে ও শাহেদ মিয়া দুজনই নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে নষ্ট করেন সুযোগ। এরপর দুদলের খেলায় ছিল না প্রত্যাশিত গতি। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে হঠাৎই ম্যাচে প্রাণ ফিরে পায়। পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে প্রায় ৪০ গজ দূরে এসে হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর আক্রমণ নষ্ট করে দেন মোহামেডানের গোলরক্ষক সুজন হোসাইন। চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবলাররা লাল কার্ডের আবেদন জানালেও রেফারি সুজনকে দেন হলুদ কার্ড।
রেফারির সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে ম্যাচ কমিশনার সৃজিত কুমার ব্যানার্জির কাছে আবেদন জানাতে প্রেস বক্সে চলে আসেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ম্যানেজার আরমান আজিজ। সৃজিত ভিডিও দেখে পরে বিষয়টি দেখার প্রতিশ্রæতি দিলে চলে যান আরমান। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বল দখলের লড়াইয়ে দিয়াবাতেকে ফাউল করেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার কামরুল হাসান। কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি সামলে নেন রেফারি। হলুদ কার্ড দেখান কামরুলকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে শাখাওয়াত হোসেন রনির শট ফেরান মোহামেডানের গোলরক্ষক। এরপর ৬৩ মিনিটে মোনেকের জোরালো কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। ৬৫ মিনিটে এগিয়ে যায় ফেডারেশন কাপের ১০ বারের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান। অনিক হোসেনের ছোট পাসে বক্সের ভেতর থেকে শাহেদের প্লেসিং শট আরাফাত হোসেনের পা ছুঁয়ে জালে জড়ায়। ৭৩ মিনিটের অবাক করা গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক সাইফুল ইসলামের পাস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি কামরুল। বলের দিকে ছুটে আসেন মোহামেডানের শাহরিয়ার ইমন। তাড়াহুড়ো করে কামরুল ক্লিয়ার করতে শট নিয়েছিলেন কিন্তু বল ইমনের পায়ে লেগে চোখের পলকে জালে জড়ায়। সাত মিনিট পর আরিফের ক্রসে চট্টগ্রাম আবাহনীর রুবেল মিয়া ক্রসবারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে থ্যাঙ্কগড হেডে ব্যবধান কমান। কিন্তু তা দলের হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।
এর আগে গ্রুপ ‘এ’ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে ঢাকা মোহামেডান। তাদের গ্রুপে অন্য দুই প্রতিপক্ষ স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ ও বসুন্ধরা কিংস। টার্ফে খেলা ঝুঁকিপূর্ণ ও টুর্নামেন্টের সূচি বদলের অভিযোগ জানিয়ে আসরে অংশ নেয়নি বসুন্ধরা কিংস। ফলে সহজে কোয়ার্টার ফাইনালের রাস্তা খুলে যায় ঢাকা মোহামেডানের। তবে গ্রুপের একমাত্র ম্যাচে স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘের বিপক্ষে জ¦লে উঠতে পারেননি তারা। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। অবশ্য টাইব্রেকারে ম্যাচটি মোহামেডান শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলের ব্যবধানে জিতে নেয়। কিন্তু সেটি শুরু গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণের জন্য। অর্থাৎ জয়ী দল হিসেবে ৩ পয়েন্ট তাদের টেবিলে যোগ হয়নি। এদিকে আগামী ৬ জানুয়ারি সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের বিজয়ী দল। অর্থাৎ সেমিতে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব কিংবা স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘকে।
এদিকে চট্টগ্রাম আবাহনী কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পথে বাংলাদেশ পুলিশ এফসিকে গ্রুপপর্বের ম্যাচে হারিয়েছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। তবে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে তারা হোঁচট খায় সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে। জামালদের বিপক্ষে তারা ম্যাচটি হারে ২-১ গোলের ব্যবধানে। এর আগে চট্টগ্রাম আবাহনী প্রতিযোগিতাটিতে একবার চ্যাম্পিয়নে মর্যাদা লাভ করে। ২০১৭ সালে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে তারা ঢাকা আবাহনীকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা জেতে। তবে এবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই তাদের বিদায় নিতে হলো।
এদিকে ফেডারেশন কাপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে আজ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী কামাল স্টেডিয়ামে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে মাঠে নামবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। গ্রুপপর্বের ম্যাচে দুই দলই ড্র করেছিল। তবে টাইব্রেকারে শেখ জামালের বিপক্ষে রহমতগঞ্জ হারলেও ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে জয় তুলে নিয়েছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। অর্থাৎ দুদলের বিদেশি ফরোয়ার্ডদের শক্তির ভিড়ে শেখ রাসেলে বড় শক্তি তাদের গোলরক্ষক আশ্রাফুল আলম রানা।
অন্যদিকে আসরের শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে শেখ জামালের বিপক্ষে একই মাঠে মুখোমুখি হবে ঢাকা আবাহনী। আসরের সর্বোচ্চ ১১ বারের শিরোপাধারী ঢাকা আবাহনী। এক ডজন ট্রফি জেতার আগে তাদের প্রথম বাধা শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। ফেডারেশন কাপে তিনবার শিরোপা জিতেছে ধানমন্ডির ক্লাবটি। সদ্যসমাপ্ত স্বাধীনতা কাপ ফুটবলে জায়ান্ট ক্লাব বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী ফেডারেশন কাপেও শিরোপার যোগ্য দাবিদার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়