মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

সিরিজ জিততে মুখিয়ে ভারত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তিন দশকের বেশি সময় ধরে টেস্ট সিরিজ খেলছে ভারত। তবে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে কখনো সাদা পোশাকে সিরিজ জিততে পারেনি তারা। এবার সুযোগ এসেছে বিরাট কোহলিদের সামনে। সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের প্রথম টেস্টে জিতে ১-০ তে এগিয়ে আছে তারা। জোহানেসবার্গে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে জয় তুলে নিতে পারলেই ইতিহাস গড়বে সৌরভ গাঙ্গুলির উত্তরসূরিরা। বাংলাদেশ আজ দুপুর ২টায় তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে দুদল পরস্পরের মুখোমুখি হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের মাটিতে দীর্ঘ তিন যুগ পর টেস্ট সিরিজ জেতে ভারত। এর আগে একই বছরের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়াকে তাদের ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারায় বিরাট কোহলিরা। গত বছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারা ভারতের বড় আক্ষেপ এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সাদা পোশাকের ম্যাচের সিরিজ জিততে না পারা। তবে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডকে তাদের ঘরের মাটিতে সিরিজ হারিয়ে এবার দারুণ ছন্দে লোকেশ রাহুলরা। দীর্ঘ তিন দশকে প্রোটিয়াদের মাটিতে যা ছিল দুঃসাধ্য এবার তা করে দেখাতে চান তারা। সেঞ্চুরিয়নে সিরিজের প্রথম টেস্টে ১১৩ রানের বড় জয় তাদের জোহানেসবার্গে সিরিজ জয়ের আশা দেখাচ্ছে। তাছাড়া আফ্রিকার মাটিতে এই একটি মাঠ যেখানে তারা টেস্ট ম্যাচে এখন পর্যন্ত অপরাজিত আছে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ খেলে এই মাঠে দুটিতেই জয় পেয়েছে ভারত। আর বাকি তিন ম্যাচের ফলাফল ছিল ড্র। সুতরাং আফ্রিকার মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ ভারতের সামনে। তাছাড়া বর্তমান পারফরম্যান্সে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সফরকারীদের জন্য এটাই সুযোগ সিরিজ জয় করে নেয়ার। কারণ প্রোটিয়া দলে নেই কোনো অভিজ্ঞ টেস্ট ব্যাটসম্যান, নেই কোনো অভিজ্ঞ বোলার। যারা দলে আছেন তারাও নতুন। আবার এদিকে হুট করে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিংলাইন আপকে দুর্বল করে দিয়েছে কুইন্টন ডি কক। পরিবারকে সময় দিতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজের অবসর ঘোষণা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ডি কক এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেয়াটা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। প্রচুর সময় লেগেছে আমার এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে। আমি দীর্ঘ সময় ধরে ভাবার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার ভবিষ্যৎ কী হবে, আমার প্রায়োরিটি কী হবে এসব কিছু মাথায় রেখেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার জীবনের প্রায়োরিটি এ মুহূর্তে সাসা এবং আমি আমাদের নতুন সদস্যকে পরিবারে স্বাগত জানাতে চলেছি। এই মুহূর্তে আমাদের জীবনে এটা একটা নতুন এবং সব থেকে উত্তেজনাকর অধ্যায়। আমি টেস্ট ক্রিকেটকে ভালোবাসি। আমি আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে ভালোবাসি। আমার ক্যারিয়ারের ভালো এবং খারাপ সময় সবটাকেই আমি ভালোবাসি। সেলিব্রেশান, হতাশা সবটুকুকেই আমি ভালোবাসি। কিন্তু এখন আমি আমার জীবনে এমন কিছু খুঁজে পেয়েছি, যা আমি সব থেকে বেশি ভালোবাসি।’
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের অতীত রেকর্ড মোটেও সুখকর নয়। সেটা টেস্ট হোক আর ওয়ানডে সংস্করণের ম্যাচ হোক। এ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের মাঠে ২১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে ভারত। এর মধ্যে ৪ জয়ের বিপরীতে হেরেছে ১০টি টেস্ট ম্যাচ। আর বাকি ৭ ম্যাচের ফলাফল ড্র। ওয়ানডে ম্যাচে অবশ্য কিছুটা এগিয়ে আছে সফরকারীরা। এই সংস্করণে অবশ্য সিরিজ জিতেছে ভিরাট কোহলিরা।
তবে ম্যাচ জয়ের পরিসংখ্যানে বেশ পিছিয়ে। প্রোটিয়াদের ২২ জয়ের বিপরীতে তারা জিতেছে মাত্র ১০ ম্যাচে। তবে অতীত এসব ব্যর্থতাকেই নিজেদের অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন লোকেশ রাহুল। তাছাড়া চলতি বছর তারা অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মাটিতেও টেস্ট সিরিজ জিতেছে। কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদের সফলতা পাওয়া বাকি। দুই পরাশক্তিকে হারিয়ে যে আত্মবিশ্বাস সঞ্চার হয়েছে, তা এই সিরিজে কাজে লাগাতে চান রাহুল।
সিরিজ শুরুর আগে ক্রীড়াবিষয়ক সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক রাহুল বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজটি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দল হিসেবে আমরা সব সময় বিদেশের মাটিতে সিরিজ খেলাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করি। ২০২১ সালে আমরা ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সিরিজ জিতেছি। যেটা আমাদের বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিততে বেশ আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারত এখনো কোনো টেস্ট সিরিজ জেতেনি। যেটা আমাদের বাড়তি অনুপ্রেরণা দিচ্ছে, ব্যর্থতা ঘুচিয়ে সিরিজ জিতে নেয়ার জন্য। শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার সফরে যে ভুলগুলো করে করেছিলাম তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এ সিরিজে জয় তুলে নিতে চাই।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত টেস্ট সিরিজে ভারতকে জিততে পরোক্ষ ভূমিকায় রেখেছিল লোকেশ রাহুল। সিরিজে তার ৩১৫ রানের অবদান ভারতকে ইংলিশদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে সাহায্য করেছে। সিরিজে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরারও ছিলেন। এদিকে প্রোটিয়াদের বিপক্ষেও সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরিয়নেও হেসেছে তার ব্যাট। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পাশাপাশি খেলেছেন ১২৩ রানের একটি ইনিংস, যা দলকে প্রথম টেস্ট ম্যাচে ১১৩ রানের বড় জয় পেতে সাহায্য করেছে।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা এখন পর্যন্ত ৪০টি টেস্ট ম্যাচের পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের ১৫ জয়ের বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ১৫ টেস্ট। বাকি ১০ ম্যাচ ড্র হয়। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট আগামী বছরের ৩-৭ জানুয়ারি জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তিন দিন বিরতি দিয়ে ১১-১৫ জানুয়ারি হবে সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচটি। এছাড়াও সফরে তিনটি ওয়ানডে ম্যাচও খেলবে বিরাট কোহলির দল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়