কাগজ ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আজ সোমবার থেকে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি করেছে সে রাজ্যের সরকার। আনন্দবাজার জানাচ্ছে, বাংলায় গত চার দিনে চার গুণ বেড়েছে সংক্রমণ। ফলে বাতিল করা হয়েছে একাধিক সরকারি অনুষ্ঠান। গতকাল রবিবার নবান্নে জরুরি বৈঠক শেষে নতুন বিধিনিষেধের ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে, কিন্তু মোট যাত্রী আসনের ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। এদিকে সাধারণ জনগণের বেষ্টনী পেরিয়ে এবার সরকারের আইনি দপ্তর লালবাজারেও হানা দিয়েছে করোনা। কলকাতা
পুলিশের দুই আইপিএসসহ প্রায় ৫০ পুলিশ কর্মী কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবর জানা গেছে। এর আগে রাজ্যের একাধিক চিকি?ৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছিল। এবার কলকাতা পুলিশের মুখ্য কার্যালয়ে এক সঙ্গে ৫০ জনের বেশি কোভিড পজিটিভ রোগীর সন্ধান পাওয়া গেল। এদের মধ্যে একজন যুগ্ম কমিশনার এবং একজন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারও রয়েছেন।
এদিকে লাফিয়ে আক্রান্ত বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যা বাড়াতে বলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর। দ্বিতীয় ঢেউয়ের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে হাসপাতালগুলো। অন্যদিকে, নতুন বিধিনিষেধের আওতায় লোকাল ট্রেন সন্ধ্যা ৭টা থেকে বন্ধ রাখা হচ্ছে। ট্রেনে মোট আসনের অর্ধেক যাত্রী নেয়া যাবে। তবে দূরপাল্লার ট্রেন চলবে স্বাভাবিক নিয়মে। রাত ১০টার মধ্যে শপিংমল, বাজার, সিনেমা হল বন্ধ করতে হবে। রাত ১০ থেকে ভোর ৫ পর্যন্ত রাত্রিকালীন কার্ফ্যু জারি থাকবে গোটা রাজ্যে। যে কোনো সামাজিক আয়োজনে ৫০ জনের বেশি অতিথি থাকবে না। সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী হাজির থাকতে পারবে। সমস্ত পার্ক, চিড়িয়াখানা, সুইমিং পুল, জিম, সেলুন, বিউটি পার্লার সব বন্ধ থাকবে। ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প পিছিয়ে দেয়া হয়েছে এক মাস।
এদিকে আজ সোমবার কলকাতার ১৬টি স্কুলে টিকাকরণের মাধ্যমে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের কোভিড টিকাকরণ শুরু হচ্ছে। তবে যারা স্কুলছুট বা স্কুলে পড়ছে না, এমন ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের টিকা পৌরসভার ৩৯টি টিকাদান কেন্দ্রের যে কোনো একটিতে নিয়ে দিয়ে আসতে হবে। টিকা নেয়ার জন্য সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থীর নাম এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত হয়েছে। এছাড়া নতুন বিধিনেষেধের আওতায়, সর্বোচ্চ ৫০ জন নিয়েই পালন করতে হবে বিয়েবাড়িসহ সব সামাজিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে সুরক্ষাবিধি প্রতিপালনের দিকেও। সঠিকভাবে মাস্ক পরে এবং দূরত্ব বজায় রেখে পালন করতে হবে সামাজিক অনুষ্ঠান। অন্যদিকে কারো মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ ২০ জনকে নিয়ে শবযাত্রা করার কথাও ঘোষণা করা হয় রাজ্যের পক্ষ থেকে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।