মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

দুই খুনি গ্রেপ্তার : বিয়েতে রাজি না হওয়ায় হত্যা করা হয় রুনাকে

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতেই মূলত রুনা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। আর এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে খুঁচিয়ে চোখ উপড়ে ফেলা হয় তার। নরসিংদীর রায়পুরায় ধানক্ষেত থেকে গৃহবধূর চোখ উপড়ানো লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডি এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর। গতকাল রবিবার সকালে রাজধানী মালিবাগের সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর নরসিংদীর রায়পুরার চর মরজালের একটি ধানক্ষেত থেকে রুনা আক্তার নামে এক গৃহবধূর চোখ উপড়ানো লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী সৌদি প্রবাসী আবুল কালাম মিয়ার স্ত্রী ও একই গ্রামের উত্তর পাড়া এলাকার মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়ার মেয়ে। নিহত রুনা আক্তার ও কালাম মিয়ার সংসারে ৩ সন্তান রয়েছে। জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রুনা বাবার বাড়ি থেকে মামার বাড়ি যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাত ৮টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বর বন্ধ পায়। ১৩ ডিসেম্বর সকালে স্থানীয় লোকজন গ্রামের ধানক্ষেতে রুনার লাশ পড়ে থাকতে দেখে। এ ঘটনায় মৃতের বাবা মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় ১৭ ডিসেম্বর মামলা করে। ক্লুলেস এ ঘটনার তদন্ত কর?তে গিয়েই গত শনিবার খোরশেদ মিয়াকে নেত্রকোনার কলমাকান্দা ও আব্দুর রাজ্জাক খানকে নরসিংদীর রায়পুরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, রুনা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের কালাম মিয়ার বিয়ে হয় ২০১০ সালে। তাদের ঘরে আল আমিন, আফসার ও খাদিজা নামে তিন সন্তান রয়েছে। গ্রামের বিভিন্ন এনজিও সমিতি থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সাড়ে ৩ বছর আগে শ্রমিক ভিসায় স্বামী আবুল কালাম মিয়াকে সৌদি আরব পাঠায় সে। কিন্তু ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ আসে স্ত্রী রুনার ওপর। রুনা স্বামীকে জানালে যৌতুক বাবদ বাপের বাড়ি থেকে টাকা পরিশোধ করতে বলে। কিন্তু রুনার পরিবারের সচ্ছলতা ছিল না। রুনা টাকা পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করলে সংসারের খরচার টাকাও দেয়া বন্ধ করে দেয় কালাম। এ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে মনোমালিন্য ও নির্যাতনের শিকার হয় রুনা। পরে নারী নির্যাতনের মামলা করলে ক্ষুব্ধ হয়ে চার মাস আগে ডিভোর্স লেটার পাঠায় কালাম। বাধ্য হয়ে তিন সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতে ফিরতে হয় রুনাকে। কাজ শুরু করেন সবজি ক্ষেতে। এরই মধ্যে নতুন করে বিবাহের জন্য প্ররোচনা দিতে থাকে দূর সম্পর্কের মামা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর চার সন্তানের জনক বৃদ্ধ খোরশেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ ঠিক করেন। এজন্য ৯০ হাজার টাকা খরচাও আদায় করেন আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিবাহে অমত জানায় রুনা। এ নিয়ে আব্দুর রাজ্জাক ও খোরশেদ মিয়া ক্ষিপ্ত হয়। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধানক্ষেতে গিয়ে হাত পা বেঁধে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে ও চোখ উপড়ে ফেলে। এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তা ধর বলেন, এ মর্মান্তিক ঘটনায় আরো দুজন জড়িত। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার দুজনকে নরসিংদী আদালতে সোপর্দ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়