মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

ঢাবির ডিন নির্বাচনে নীল ও সাদা দলের প্রার্থী চূড়ান্ত

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : আগামী ১৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি অনুষদের ডিন নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। একটি অনুষদে নীল দলের দুজন প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল ৮টি অনুষদে প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও ২টি অনুষদে কোনো প্রার্থীই খুঁজে পায়নি।
গতকাল রবিবার ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ থাকছে।
নীল দলের প্রার্থীরা হচ্ছেন- কলা অনুষদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক আবদুল বাছির, আইন অনুষদে আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অর্গানাইজেশন স্ট্র্যাটেজি এন্ড লিডারশিপ বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আবদুল মঈন, বিজ্ঞান অনুষদে ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সামাদ, জীববিজ্ঞান অনুষদে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান, ফার্মেসি অনুষদে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সীতেশ চন্দ্র বাছার, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাফিজ মো. হাসান বাবু, চারুকলা অনুষদে অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের অধ্যাপক নিসার হোসেন, আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সস অনুষদে অধ্যাপক মো. জিল্লুর রহমান নীল দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে নীল দলের পক্ষে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান দুজনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। শনিবার নীল দলের এক সভায় ভোটের মাধ্যমে ডিন নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অধ্যাপক জিয়াউর রহমান দুজনই ৭২টি করে ভোট পান। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুজনই প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক আবদুস সামাদ বলেন, অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অধ্যাপক জিয়াউর রহমান দুজনই আপাতত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামীকাল সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে নীল দলের শিক্ষকদের একটি অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হবে। সেখানে দুজনের মধ্যে যিনি জিতবেন তিনিই ওই অনুষদে নীল দলের চূড়ান্ত প্রার্থী হবেন। যিনি হারবেন তিনি ৫ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন।
সাদা দলের প্রার্থীরা হলেন- কলা অনুষদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানউল্লাহ, বিজ্ঞান অনুষদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এমরান কাইয়ুম, জীববিজ্ঞান অনুষদে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, ফার্মেসি অনুষদে ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক মো. শাহ এমরান, ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হায়দার আলী এবং চারুকলা অনুষদে গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইসরাফিল রতন সাদা দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে আইন এবং আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে সাদা দলের কোনো প্রার্থী নেই। সাদা দলের নেতাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের ওপর রাজনৈতিক চাপ ইত্যাদি কারণে সাদা দল এখন কোণঠাসা। ফলে শিক্ষকরা সাদা দলের প্রার্থী হতে ভয় পান।
দুই অনুষদে শিক্ষকদের কেউ প্রার্থী হতে রাজি হননি বলে জানালেন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, আইন এবং আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদে আমাদের প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা রাজি হননি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের ভোটার কমে গেছে। নতুন ভোটারদের দলীয়ভাবে চাপ দেয়া হয়। এমন নানা কারণ এর জন্য দায়ী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৩টি অনুষদ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ ১০টি অনুষদ বাদে অন্য তিনটি অনুষদ পরিচালনা করেন সরকার মনোনীত ডিনরা। ওই তিনটি অনুষদ হলো- শিক্ষা অনুষদ, ওষুধ অনুষদ এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসা বিজ্ঞান ও গবেষণা অনুষদ । অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ অনুষদগুলোর ডিনরা ভোটের মাধ্যমে দুই শিক্ষাবর্ষের জন্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ডিন নির্বাচন হয়। সেখানে ১০টি অনুষদের ৯টিতে জেতে নীল দল ওই ডিনদের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুন।
করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে তাদের ভারপ্রাপ্ত ডিন হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান । তখন বলা হয়, পরবর্তী নির্বাচিত ডিন দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত তারা ভারপ্রাপ্ত ডিনের দায়িত্বে থাকবেন। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অবসরে যান, আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্যের দায়িত্ব পান, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রেষণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান আর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন প্রেষণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হন। তাদের জায়গায় উপাচার্য অন্য চারজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত ডিনের দায়িত্ব দেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়