মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র : মাইন বিস্ফোরণে তিন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত

আগের সংবাদ

সংসদ প্রাণবন্ত করার তাগিদ : বিশ্লেষকদের মতে, ‘৭০ ধারা বড় বাধা’, সংশোধনীর দাবি, কার্যকর বিরোধী দলের বিকল্প নেই

পরের সংবাদ

জাকির-রেজার ব্যাটে স্বস্তিতে দক্ষিণাঞ্চল

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নবম বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ফাইনালে মিরপুরে গতকাল মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে মাঠে নামে দক্ষিণাঞ্চল। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হলেও ১৮১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দক্ষিণাঞ্চল। তবে ষষ্ঠ উইকেটে জাকির হাসান ও ফরহাদ রেজার ৮০ রানের জুটিতে বিপদ কাটিয়ে স্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করেছে তারা। দুজনই অর্ধশতকের দ্বারপ্রান্তে আছেন। মধ্যাঞ্চলের পক্ষে একাই ৪ উইকেট নেন হাসান মুরাদ।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের চলতি আসরের ফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণাঞ্চল। শুরুতে দারুণ ছন্দে ছিল ফরহাদ রেজার দল। পিনাক ঘোষ ও এনামুল হক বিজয়ের উদ্বোধনী জুটিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন মধ্যাঞ্চলের বোলাররা। এরপর দলকে হতাশার চাদর থেকে উদ্ধার করেন হাসান মুরাদ। ১৩৭ রানের জুটি আরো বড় হওয়ার আগে আঘাত হানেন তিনি। এরপর ৪৪ রানের ব্যবধানে আরো চার উইকেট হারায় দক্ষিণাঞ্চল, যার মধ্যে আরো তিনটি উইকেট পান মুরাদ। এই বাঁহাতি স্পিনারের স্পিনজাদুতে প্রথম দিনে ১৮১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে ফরহাদ রেজার দল। এরপর অবশ্য জাকির হাসান ও অধিনায়ক ফরহাদ রেজা ৮০ রানের অপরাজিত জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন। ৪৪ রানে জাকির ও ৪৬ রানে ফরহাদ অপরাজিত আছেন। এর আগে দলীয় ১৩৭ রানে পিনাক ঘোষকে বোল্ড করেন হাসান মুরাদ। আউট হওয়ার আগে পিনাক ১৬১ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে ছিল ২টি ছক্কার মার। এরপর অমিত হাসানকে ১০ রানে মিড অনে রবিউল হকের ক্যাচ বানান আবু হায়দার রনি। ১৬২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় দক্ষিণাঞ্চল।
অবশ্য তখনো চালকের আসনে ছিল ফরহাদ রেজার দল। কিন্তু হাসান মুরাদ তখনো শিকারের অপেক্ষা ছাড়েননি। ৭৬ রান করে ক্রিজে থাকা এনামুল হক বিজয়কে ফেললেন লেগ বিফোরের ফাঁদে। আবেদনে ফিল্ড আম্পায়ার সাড়া দিলে আর ইনিংস বড় করা হয়ে ওঠেনি বিজয়ের। তার ১৭১ বলের ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে ছিল একটি ছক্কার মারও। তবে উইকেট পাওয়ার আনন্দে শিকার করতে ভুলে যাননি হাসান মুরাদ। একই ওভারের চতুর্থ বলে তুলে নেন তৌহিদ হৃদয়ের উইকেট। চার বল মোকাবেলায় এই ব্যাটসম্যান কোনো রান তুলতে পারেননি এই দিন। ১৬৩ রান তুলতে ৪ উইকেট নেই দক্ষিণাঞ্চলের। বিপদে পড়া দলকে উদ্ধার করতে পারেননি পঞ্চম উইকেটে নামেন শেখ মেহেদী হাসান। মুরাদ তার স্পিনজাদুতে তাকেও সাজঘরের পথ দেখান। ১৬ বলে ৯ রান করে তিনি মোহাম্মাদ মিঠুনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। ১৮১ রানে ৫ উইকেট নেই দক্ষিণাঞ্চলের। এক প্রান্ত আগলে ধরে তখনো ক্রিজে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছিলেন জাকির হাসান। এরপর ব্যাট হাতে দলের হাল ধরতে নেমে পড়েন দলটির অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে জাকির হাসানের সঙ্গে জুটি গড়ে তুলে রানের চাকা সচল রাখেন এ ব্যাটসম্যান। ৪৭ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে প্রথম দিন শেষ করেন দক্ষিণাঞ্চলের এ অধিনায়ক। তার ইনিংসটি ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার মারে সাজানো ছিল। অন্যদিকে জাকির হাসান ৬০ বল মোকাবেলা করে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। কোনো ছক্কা না হাঁকালেও তিনি ৪টি চারের মার মারেন। দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সংগ্রহ ২৬১ রান। দ্বিতীয় দিন দেখেশুনে খেলতে পারলে ফিফটির সঙ্গে দুই ব্যাটসম্যান দলকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। মধ্যাঞ্চলের পক্ষে ৭০ রানের বিনিময়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট তুলে নেন কক্সবাজারের ছেলে হাসান মুরাদ। বাকি এক উইকেট শিকার করেন আবু হায়দার রনি।
এদিকে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিএল ফাইনাল খেলা গতকাল শুরু হয়েছে ফ্লাডলাইট জ¦ালিয়ে। সকাল সাড়ে ৯টায় শুরুর কথা থাকলেও ভোরের কুয়াশার কারণে কিছুটা দেরি করেই শুরু হলো খেলা। তবে দেরি করে লাভ হয়নি, বরং চার দিনের টেস্টের প্রথম দিন ১০ ওভার কম খেলতে হলো। ফ্লাডলাইটের সিদ্ধান্ত নিয়ে ম্যাচ শুরু না করলেও হয়তো ওভারের সংখ্যাটা আরো কমে যেত। সেদিক থেকে কর্তৃপক্ষ দেরিতে হলেও সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে ম্যাচ ফিরিয়েছে। ভোরের কুয়াশা কাজে লাগাতে দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের ফাইনালে টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নিয়েছে মধ্যাঞ্চল। তবে তাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দেননি দক্ষিণাঞ্চলের দুই ওপেনার। শেষ দিকে মুরাদ হাসান তার স্পিনজাদুতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ না নিলে দিনটা পুরোপুরি দক্ষিণাঞ্চলেরই হয়ে থাকত। এবারের বিসিএলে ফাইনালের পোশাকি মহড়াটা অবশ্য কিছু দিন আগেই হয়ে গেছে। চট্টগ্রামে মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের লড়াইটা অবশ্য অমীমাংসিতই থেকে গেছে। দেশের ক্রিকেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা বিসিএলের শিরোপাটা দক্ষিণাঞ্চলেরই সম্পত্তি যেন। পাঁচবার শিরোপা জিতেছে তারা। ফাইনাল খেলেছে সর্বশেষ চারবারই। হ্যাটট্রিক শিরোপাও আছে তাদের। আরো একটি শিরোপার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তাদের সামনে মধ্যাঞ্চলের চ্যালেঞ্জ। এর আগের কয়েক আসরে ভালো দল গড়েও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি। এবার মিঠুন, সৌম্য, শুভাগতদের নিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে চায় বিসিএলের অন্যতম ধারাবাহিক এ দলটি।
চলতি আসরে তিন রাউন্ড শেষে সর্বোচ্চ ১২ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণাঞ্চল ও ১১ পয়েন্ট নিয়ে মধ্যাঞ্চল ফাইনাল নিশ্চিত করে। এর আগে মধ্যাঞ্চল দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিসিএলে। প্রথমবার ২০১২-১৩ মৌসুমে ও দ্বিতীয়টি ২০১৫-১৬ মৌসুমে। আর তিন আসর ধরে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণাঞ্চল। ৮ আসরের মধ্যে তারা শিরোপা জিতেছে ৫ বার। একটি জেতে উত্তরাঞ্চল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়