নন্দন দেবনাথ, রাঙ্গামাটি থেকে : সারাদেশের ন্যায় করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার বই উৎসব না হলেও বিশেষ ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাতৃভাষায় রচিত বই বিতরণ করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রাঙ্গামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় ২৮ হাজার ৭৪৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৬৫ হাজার বই বিতরণ করা হচ্ছে। গত শনিবার সকাল থেকেই সরকারি নিদের্শনা অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূূত্রে জানা যায়, এ বছর প্রাথমিক পর্যায়ে রাঙ্গামাটিতে ৮৫ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থীকে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়াও চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ২৮ হাজার ৭৪৬ জন শিক্ষার্থীকে ৬৪ হাজার ৩০৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নিজস্ব মাতৃভাষায় বই বিতরণও শুরু হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে ৮ লাখ ৯০ হাজার বই। প্রথমদিন মাধ্যমিকে বই পেয়েছে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হবে। বছরের শুরুতে নতুন বই পেয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, বছরের

প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে আমরা খুব খুশি লাগছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আমার খুব ভালো লাগে, প্রথমদিন শুধু বইয়ের প্রতিটি পাতাই আমি খুলে দেখব, আর ঘ্রাণ নেব। নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, আমাদের হাতে যে সব বই এসেছে তা জেলার দুর্গম এলাকা পর্যন্ত সবল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বছরের প্রথমদিনই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে বই বিতরণ শুরু হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, চাহিদা অনুসারে বই আসছে। ইতোমধ্যে যেসব বই এসেছে তা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে এবং বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছু বই এখনো আসেনি। আশা করছি, সেগুলো কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে। আমরা রাঙ্গামাটির সব বিদ্যালয়ে দ্রুত বই বিতরণ কার্যক্রম শেষ করতে পারব।
উল্লেখ্য, করোনার মহামারি ঠেকাতে কয়েক ধাপে পুরো জেলা জুড়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে এসব বই প্রদান করা হবে। তবে করোনার জন্য এবার বই উৎসবের কোনো আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়নি।