নজরুল ইসলাম খান : খালেদা জিয়ার কিছু হলে রেহাই পাবেন না

আগের সংবাদ

নতুন বছরে সরকারের ১০ চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

ঝুঁকিপূর্ণ থার্টিফার্স্ট উদযাপন : নিষিদ্ধ ফানুস ও আতশবাজিতে সয়লাব আকাশ > রাজধানীতে ১০টিসহ দেশের ২০০ জায়গায় অগ্নিকাণ্ড

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রথম প্রহর ১২টার পর থেকেই ফানুস ও আতশবাজিতে রঙিন হয়ে ওঠে ঢাকাসহ দেশের আকাশ। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে পটকাবাজিও। এমন দায়িত্বহীন উদযাপনের কারণে রাজধানীর ১০টি জায়গায় ঘটে অগ্নিকাণ্ড। সেসব অগ্নিকাণ্ডের অধিকাংশেরই সূত্রপাত হয় ফানুসের আগুন থেকে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে যা ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ফলে অগ্নি ঝুঁকিতে পরে রাজধানীসহ সারাদেশ। ফায়ার সার্ভিস ও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর হটলাইন নম্বরগুলেতে থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন শুরুর মাত্র ২০ মিনিটে প্রায় ২০০টি অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এমন পরিস্থিতিতে এসব বিষয়ে নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতি আরোপের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন ফানুস, আতশবাজি ও পটকা উৎপাদন এবং সরবরাহ বন্ধে নজর দেয়াসহ পরিশীলিতভাবে উৎসব পালনে জোর দিতে হবে।
রাজধানীর তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী, ধানমন্ডি ও রায়েরবাগসহ প্রায় ১০টি জায়গা থেকে গত শুক্রবার রাতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। যার মধ্যে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে লাগা তিনতলা একটি ভবনের আগুন ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এছাড়া ঢাকার বাইরে থেকে আরো ১৯০টি আগুন লাগার ঘটনার ফোন আসে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানীতে লাগা প্রতিটি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের অনেকগুলো ইউনিট রওনা হয়ে যায়। রাত ১২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০টি ইউনিট এসব আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কেউ হতাহত না হলেও অনেক কিছু পুড়ে গেছে। এদিকে আগুনের ঘটনার পর অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তারা বিভিন্ন স্ট্যাটাসে তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে আকাশে ফানুস উড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসব ফানুসে প্রজ¦ালিত কেরোসিন বাতি বা মোমবাতি থাকায় এগুলো জ্বলন্ত অবস্থায় জনবহুল মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে। এতে অগ্নি নিরাপত্তাজনিত হুমকির সৃষ্টি হয়। মহানগরীতে ফানুস ওড়ানো অব্যাহত রাখলে যে কোনো সময় বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এছাড়াও ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকায় নিচু ভবন থেকে আতশবাজি বা ফানুস উপরে ওঠার সময় অনেকের ঘরেও প্রবেশ করছে যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন ভোরের কাগজকে বলেন, নববর্ষ মানুষ কীভাবে উদযাপন করে তা পুলিশ দেখে। তবে এবারের অবস্থা দেখে আমাদের মনে হয়েছে নববর্ষের উদযাপন অনুষ্ঠানে ফানুস ও আতশবাজির বিষয়ে ভাবা উচিত আমাদের।
অনেক সময় আগুন নিভে যাওয়ার আগেই ফানুস নিচে পড়ে যায়।

রাজধানী শহর ঢাকা ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থাকায় ফানুস থেকে অগ্নিকাণ্ড ও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে ২০১৮ সালেই ফানুস নিষিদ্ধ করে ডিএমপি। তবে গত শুক্রবারও ফানুস, আতশবাজি ও পটকা অবাধে বিক্রি করতে দেখা গেছে। রাজধানীর অলিগলিসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিষিদ্ধ ফানুস ও আতশবাজিতে সয়লাব যায়। ফলে এসব নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি গত শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে গুলশান-২ নম্বর চত্বরে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম যখন নিরাপত্তা ব্রিফিং করছিলেন তখনো আশপাশের এলাকায় বিকট শব্দে শত শত আতশবাজি ফুটতে শোনা যায়। এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আতশবাজি থামানোর বিষয় নয়। হাত দিয়ে আটকে রাখা যায় না। আতশবাজি না ফোটাতে আমি অনুরোধ করেছি। আতশবাজি ফোটায় টিনেজ ছেলেমেয়েরা। বাড়িতে গিয়ে দেখুন, আপনার ছোট ভাই দুটো আতশবাজি কিনে ফোটাচ্ছে। আমরা তো ঘরে ঘরে গিয়ে নিষেধ করতে পারব না। আমরা অনুরোধ করেছিলাম বয়স্ক মানুষ, শিশু ও অসুস্থ মানুষের কথা বিবেচনা করে এটি সীমিত রাখুন। আশা করি, সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়