নজরুল ইসলাম খান : খালেদা জিয়ার কিছু হলে রেহাই পাবেন না

আগের সংবাদ

নতুন বছরে সরকারের ১০ চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েই ঘুরপাক বিএনপি

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রুমানা জামান : লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসা ইস্যুতে বছরজুড়ে ঘুরপাক খেয়েছে বিএনপির রাজনীতি। রাজপথের অন্যতম প্রধান দলটির দাবি- খালেদা জিয়ার অবস্থা সংকটাপন্ন। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা দিলেই তিনি সুস্থ হবেন। কিন্তু সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তাকে বিদেশে যেতে বাধা দিচ্ছে। এই ইস্যুতে রাজপথে সরব আছে দলটি। গত ১৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সূত্রমতে, একদিকে আন্দোলন অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে গোপন সমঝোতার চেষ্টা করছে বিএনপি। দুইভাবেই সুচিকিৎসার স্বার্থে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে মরিয়া দলটি। তাকে বিদেশ নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে পাঁচবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আইনের মারপ্যাঁচে এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
বছরের প্রথম থেকে মধ্যভাগ পর্যন্ত মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ভাটা পড়ে। তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে ইস্যুভিত্তিক জনসম্পৃক্ত সব কর্মসূচি পালন করে দলটি। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া, বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, পৌর নির্বাচনে কমিশনের ব্যর্থতা ও পদত্যাগের দাবিতে সারাদেশে পৌরসভা, থানা ও মহানগরে মানববন্ধন করে দলটি।
চলতি বছর দল পুনর্গঠনেও বেশ মনোযোগী ছিল বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে এ নিয়ে দলে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। দলের ভেতরের ক্ষোভের সঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন নেতাকর্মীরা। রণক্ষেত্র হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব, নয়াপল্টনসহ দেশের বিভিন্ন জেলা। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের হুঙ্কারের সঙ্গে সভা-সমাবেশেই নিজেদের মধ্যে

হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি ছিল নৈমিত্তিক চিত্র। আন্দোলন নয়, বরং দলটি বেশি আলোচিত হয়েছে নিজেদের কর্মকাণ্ডে।
জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ভোরের কাগজকে বলেন, বিএনপি একটি দুর্বিষহ সংকট অতিক্রম করছে। এরপরও আমরা দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করছি। দলের সব অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোকে সুসংগঠিত করা হচ্ছে। দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। সরকার জবরদস্তিমূলক ক্ষমতা দখল করে রাখায় তাদের অধীনে কোনো নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেবে না বিএনপি। এজন্য একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে দলটি। তবে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়েই বেশি চিন্তিত বিএনপি।
তারেকের স্কাইপে রাজনীতি ও চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তে টালমাটাল দল : কয়েকশ মাইল দূরে থেকে স্কাইপে চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই রাজনীতিতে সরব ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রতি সপ্তাহে স্থায়ী কমিটির নিষ্ফল বৈঠক আর দল পুনর্গঠনের নামে টাকার বিনিময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে পছন্দমাফিক নেতা বসিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এরপরই দলের প্রবীণ নেতারা রয়েছেন পদ হারানোর ভয়ে।
ইউপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা : পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভরাডুবির পরে চলমান ইউপি নির্বাচনসহ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত জানায় বিএনপি। ২৮ ফেব্রুয়ারি এ ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই চরম প্রতিকূল অবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সা¤প্রতিক নির্বাচনগুলোতে প্রমাণিত হয়েছে, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
কূটনীতিকদের কাছে নালিশই ছিল সান্ত¡না : বছরজুড়েই খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি এবং সরকারের বিভিন্ন সমালোচনামূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে কূটনীতিকদের কাছে নালিশ জানিয়েছে বিএনপি। যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুতে বিএনপিকে সোচ্চার দেখা গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার মিথ্যাচার করেছে বলে অভিযোগ বিএনপির। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে দলটি। এছাড়া কূটনীতিকদের দৃষ্টি আর্কষণে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরায় প্রচারিত প্রতিবেদন সম্পর্কে সরকারের ব্যাখ্যা চেয়েছিল দলটি।
জোট ছেড়েছে জমিয়ত, নিষ্ক্রিয় ২০ দল : বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছেড়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম। গত ১৪ জুলাই জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বলেন, জোটের শরিক দলের যথাযথ মূল্যায়ন না করা, শরিকদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই উপনির্বাচন এককভাবে বর্জন করা, আলেমদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ না করা, প্রয়াত জমিয়ত মহাসচিব নূর হোসেন কাসেমীর মৃত্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা না জানানো এবং তার জানাজায় শরিক না হওয়ায় জমিয়ত বিএনপি জোটে থাকছে না।
অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য দলও নিষ্ক্রিয়। ভিন্ন কর্মসূচি থাকলেও বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ কোনো কর্মসূচি ছিল না। বিএনপির দিকে শরিক ছোট দলগুলো তাকিয়ে থাকলেও জোটকে চাঙ্গা করতে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ বিষয়ে জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে জোট আছে কিনা জানি না।
জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলে অস্বস্তি : বছরের শুরুতে ১০ ফেব্রুয়ারি জিয়াউর রহমানের ‘বীর-উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তে অস্বস্তিতে ছিল বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানো হয়। দলের সিনিয়র নেতারা সভা-সমাবেশের বক্তব্যে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক লেপন করা হলো। ‘বীর-উত্তম’ খেতাবটি স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারই জিয়াউর রহমানকে দিয়েছিল; অথচ সরকার সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলকভাবে এ খেতাব কেড়ে নিতে চায়। পরে দলটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানানো হয়। এছাড়া চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে এমপি-মন্ত্রীদের নেতিবাচক বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানায় বিএনপি।
বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী পালন : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রণাঙ্গনের শহীদ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করে বিএনপি। ১ মার্চ রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির বছরব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে ঘটা করে ১৯ দিনের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
এ বছরও আসেনি জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা : ১৯৯৯ সালে জামায়াতকে নিয়ে চারদলীয় জোট গঠনের পর থেকেই সমালোচনার মুখে বিএনপি। এ বছর নতুন করে বিষয়টি আলোচনায় আসে। বছরের মধ্যবর্তী সময়ে গুজব ছড়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দেয়া হবে। নেতারা জানান, দলের স্থায়ী কমিটিতেও এ বিষয়ে কয়েক দফা আলোচনা উঠলেও খোদ নেতাদের মধ্যেই পাল্টাপাল্টি মত আর জামায়াতকে রাখা না-রাখার হিসাব মেলাতে গিয়ে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল জানান, জামায়াত ছাড়ার সময় এখনো আসেনি।
মির্জা আব্বাসের বক্তব্যে ইলিয়াস গুমের রহস্য : ‘আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই; কিন্তু গুমটা করল কে?’ ১৭ এপ্রিল একটি অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের এমন বক্তব্যে হইচই পড়ে বিএনপিতে। এ নিয়ে আব্বাসের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠিও দেয় দলটি। আব্বাসের পক্ষ থেকে দেয়া জবাবে সন্তুষ্ট না হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি বিএনপি।
টিকা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব : করোনা মহামারিতে সাধ্য অনুযায়ী ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে জনগণের পাশে থেকেছে বিএনপি। একই সঙ্গে করোনার ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে সরকারের লুটপাটের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে দলটি। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারত থেকে বেশি দামে কিনা হচ্ছে টিকা। ২ ডলারের করোনার টিকা ৫ ডলারে কেনা হচ্ছে কেবল দুর্নীতির জন্য। এই সরকার চুরি ও লুটপাট করে এদেশে একটি ডাকাতের শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতির চিত্র জনগণের সামনে তুলে ধরেছেন দলটির নেতারা।
ধারাবাহিক সাংগঠনিক বৈঠক : দল গুছিয়ে দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে বিএনপি। ১৪ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যেখান থেকে আন্দোলনে নামার আগে দল পুনর্গঠনে তাগিদ আসে। তারই ধারাবাহিকতায় হাইকমান্ড থেকে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি গঠনের নির্দেশ আসে; কিন্তু নানা কারণে তা পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি।
দলের ৮১টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৩০টির বেশিতে নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটিও রয়েছে। এছাড়া সারা দেশে তিন শতাধিক পৌর, উপজেলা ও থানা ইউনিটের কমিটিও হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার নির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ঢাকা দক্ষিণে আহ্বায়ক করা হয় আবদুস সালাম ও উত্তরে আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। দক্ষিণে সদস্য সচিব করা হয়েছে রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হককে উত্তরের।
করোনায় যাদের হারাল বিএনপি : করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিএনপির অন্তত চার শতাধিক নেতাকর্মী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সিলেট সাবেক মহানগর বিএনপি সভাপতি এম এ হক, ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লা হাসান, কুমিল্লা বিভাগ সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়া বিএনপি হারিয়েছে মওদুদ আহমদের মতো একজন বর্ষীয়ান নেতাকে। ১৬ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বছরজুড়ে নানা শঙ্কা : বছরব্যাপী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়টি ছিল সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ৩ মে শ্বাসকষ্ট সমস্যার কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি দেন। সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়ে তড়িঘড়ি করে খালেদার পাসপোর্ট নবায়ন করতে দেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুমতি না মেলায় খালেদা জিয়াকে নিজ বাসভবন ফিরোজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
১১ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ারে ফের ভর্তি করা হয়। ফলে আবারো সরকারের কাছে তাকে বিদেশে নিতে আবেদন করেন খালেদা শামীম এস্কাদার। ২৬ নভেম্বর শরীরের হিমোগেøাবিন একেবারেই কমে যায় খালেদা জিয়ার। নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে দলের ভেতরে ও বাইরে। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি জীবন-মৃত্যুও সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা ২৮ নভেম্বর জানান, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে ভুগছেন। তার অন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে নানা জটিলতা। দ্রুত তাকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র অথবা জার্মানি নিয়ে যেতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়