নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : বহুল আলোচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তার মা রোকেয়া খাতুন। গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের বাসায় বসে রায়ের খবর শোনার পর তা দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান তিনি।
দুই বছরেরও বেশি সময় পর গতকাল আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান। মামলায় অভিযুক্ত ২৫ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। তাদের ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড আর পাঁচজনকে দেয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
রায় ঘোষণার পরপরই আবরারের মা রোকেয়া খাতুন, ছোট ভাই আবরাজ ফায়াজসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা দ্রুত কার্যকরেরও দাবি জানান।
আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছেন আমরা তাতে সন্তোষ প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি। যেদিন এ রায় কার্যকর হবে সেদিন ভাববো আমরা বিচার পেয়েছি। তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি। তবে আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।
আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ জানান, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। পরে ওই শিক্ষায়তনে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলা বিচারে আসে। দুই পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ১৪ নভেম্বর বিচারক রায়ের জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ রাখেন। কিন্তু আরো কিছু ‘সময় দরকার’ জানিয়ে সেদিন রায় পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর (গতকাল বুধবার) নতুন তারিখ রাখেন বিচারক।
উল্লেখ্য, আবরার ফাহাদ ১৩ মে ১৯৯৮ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে কুষ্টিয়া মিশন স্কুল ও পরে জিলা স্কুলে লেখাপড়া শেষ করে ২০১৮ সালে ৩১ মার্চ তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হন। আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
###
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।