সংসদীয় কমিটি ; এক এনআইডিতে পাঁচের বেশি সিম নয়

আগের সংবাদ

ইউপি নির্বাচন : পোস্টারে ছেয়ে গেছে ভোলাহাটের জনপথ

পরের সংবাদ

আবরার হত্যায় ২৬ পরিবারের স্বপ্নভঙ্গ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৯, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আবরার ফাহাদ ও তার হত্যার সঙ্গে জড়িত ২৫ আসামির সবাই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের ঘিরে ছিল পরিবার তথা বাবা-মায়ের আকাশ সমান স্বপ্ন। এ হত্যাকাণ্ডে প্রথমে আবরারের বাবা-মায়ের স্বপ্ন ভাঙে। আর এ হত্যা মামলায় গতকাল ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ায় তাদের বাবা-মায়ের স্বপ্নও ভেঙে গেল বলে আহাজারি করে জানান তারা।
রায়ের পর আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, অনেক কষ্ট করে সন্তানকে মানুষ করছিলাম। কুষ্টিয়ায় আমাদের এলাকায় শিক্ষার হার অনেক কম। আমার ছেলে বুয়েটে (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তি হওয়ায় গ্রামবাসীর মুখে মুখে প্রশংসা ছিল। গর্বে আমার ও আবরারের মায়ের বুক ভরে যায়। স্বপ্ন ছিল ছেলে দেশের একজন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল বলে কাঁদতে থাকেন তিনি।
অনেকক্ষণ চুপ থেকে তিনি বলেন, ঢাকায় আগে কখনো না আসায় বুয়েটে ভর্তির পর আমাকে ও তার মাকে ঘুরতে নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু ঢাকায় আসলাম ঠিকই। তবে তার মৃত্যুর খবর শুনে। আমাদের সব আশা শেষ হয়ে গেল বলে আবার নীরবে কাঁদতে থাকেন তিনি।
এদিকে রায় ঘোষণার পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি অমিত সাহার মা দেবী সাহা কেঁদে বলেন, আমার ছেলে নির্দোষ। সে ঘটনার দিন দুর্গাপূজার জন্য বাড়িতে ছিল। আমার সব শেষ হয়ে গেল। ছাত্রলীগ করায় তাকে সাজা দেয়া হলো।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুহতাসিম ফুয়াদের বাবা আব্দুর তাহের বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। মামলা হওয়ার পর থেকে ছেলের শোকে আমরা বেঁচে না থাকার মতোই আছি। আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।
উচ্চ আদালতে যে যাব সে সামর্থও নেই।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্নার মা কুলসুম আরা শেলী প্রিজন ভ্যানের সামনে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। মুন্নার মা বলেন, আমার স্বামী ফার্নিচার ও স’মিলের ব্যবসা করতেন। ১২ বছর আগে তিনি মারা গেছেন। আশা-ভরসা ছিল মুন্না। কিন্তু এখন সেই আশাও রইলো না। তিনি বলেন, আমার ছেলে নির্দোষ। ঘটনার দিন মুন্না আমার সঙ্গে ওর এক কাজিনের বিয়েতে ছিল। তারপরও ওর কেন সাজা হলো বুঝতে পারছি না। আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আশা করছি, সেখানে ন্যায়বিচার পাব।
এছাড়া অনেক আসামির স্বজনরা তার সন্তানের মঙ্গল কামনায় রোজা রেখেছিলেন। কিন্তু আশা ভঙ্গ অবস্থায় খালি কোলে বাসায় ফিরতে হয় তাদের। এমন একজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুজাহিদুর রহমানের বাবা, মা, চাচা ও ফুফু। তারা আদালতে আহাজারি করতে থাকেন। রায় দেখতে আসা উৎসুক মানুষরাও বলতে থাকেন, সবাই মেধাবী শিক্ষার্থী। ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে বাবা মায়ের স্বপ্ন ভঙ্গের পাশাপাশি চোখের পানির কারণ হলো!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়