এবার রাজধানীতে গাড়িচাপায় সাইকেল আরোহী নিহত

আগের সংবাদ

প্রতিকারহীন মৃত্যুর মিছিল!

পরের সংবাদ

সাধারণ ঠাণ্ডা জ¦র ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যও আছে ওমিক্রনে : গবেষকদের ধারণা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে এখন এক বড় আতঙ্কের নাম করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ওমিক্রন অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক কিনা, এর আক্রমণ অনেক বেশি তীব্র কিনা কিংবা এটি ডেল্টাকে টপকে বিশ্বজুড়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম কিনা- সে সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে না পারলেও তারা ধারণা করছেন ওমিক্রন করোনার অন্যান্য ধরন বিশেষ করে ডেল্টার থেকেও ভয়ংকর হয়ে দেখা দিতে পারে। এরকম পরিস্থিতিতে কোনো কোনো গবেষক ধারণা করছেন কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সম্ভবত সাধারণ ঠাণ্ডার জন্য দায়ী অন্য একটি ভাইরাসের জেনেটিক উপাদানের অংশকে সঙ্গে নিয়ে অন্তত একবার নিজের জিন বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটিয়েছে। তাদের মতে কোনো দেহের আক্রান্ত কোষে দুটি ভাইরাসের সংমিশ্রণের ফলে এটা হতে পারে।
গবেষকদের ভাষ্য, ওমিক্রনের যে জেনেটিক বিন্যাস তা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত সার্স-সিওভি-২-র আগের সংস্করণগুলোতে দেখা যায়নি; কিন্তু এই বৈশিষ্ট্য অন্য অনেক ভাইরাসেই দেখা যায় যেসব ভাইরাসের কারণে সাধারণ ঠাণ্ডা জ¦র দেখা যায়।
কেমব্রিজ, ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক ডাটা অ্যানালেটিক্স ফার্মের ভেঙ্কি সৌনদরারাজন বলেছেন, সুনির্দিষ্ট এই জেনেটিক উপাদান নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে ওমিক্রন সম্ভবত নিজেকে আরো বেশি মানুষের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে, যা তাকে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ফাঁকি দিতেও সাহায্য করছে। গত বৃহস্পতিবার ওয়েবসাইট ওএসএফ প্রিপ্রিন্টসে প্রকাশিত গবেষণায়ও তিনিই নেতৃত্বে ছিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
জিন বিন্যাসে সাধারণ ঠাণ্ডার ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য থাকার ফলেই হয়তো ওমিক্রন মৃদু উপসর্গ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপসর্গ ছাড়াই

সহজে ছড়াতে পারছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এখনো ওমিক্রন অন্য ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় বেশি সংক্রামক কিনা, এর আক্রমণ অনেক বেশি তীব্র কিনা কিংবা এটি ডেল্টাকে টপকে বিশ্বজুড়ে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম কিনা তা জানেন না। এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আরো কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
আগের কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ফুসফুস এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের কোষ একই সঙ্গে সার্স-সিওভি-২ ও সাধারণ ঠাণ্ডার করোনা ভাইরাসকে আশ্রয় দিতে পারে। এ ধরনের কোনো ক্ষেত্রে একই হোস্ট কোষে দুটি ভাইরাসের সংমিশ্রণ ঘটতে পারে এবং নতুনটির একাধিক কপি তৈরি করতে পারে, যেগুলোর জিন বিন্যাসে আগের দুই ভাইরাসের জেনেটিক উপাদান থাকে।
সৌনদররারাজন এবং তার সহকর্মীদের গবেষণা বলছে, সম্ভবত দুই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির দেহে সার্স-সিওভি-২’র কোনো সংস্করণ অন্য ভাইরাসের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য নিজের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছে। সৌনদরারাজনদের এই গবেষণা এখনো অন্য গবেষকদের দ্বারা যাচাই বা পিয়ার রিভিউড হয়নি।
সৌনদরারাজন বলেছেন, ওমিক্রনের মতো একই জেনেটিক বিন্যাস ঠাণ্ডার জন্য দায়ী এইচসিওভি-২২৯ই নামে পরিচিত করোনা ভাইরাস এবং এইডসের জন্য দায়ী হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসে (এইচআইভি) অনেকবারই দেখা যায়। ওমিক্রন যেখানে প্রথম শনাক্ত হয়েছে, সেই দক্ষিণ আফ্রিকায় এইচআইভির হার সবচেয়ে বেশি; এই এইচআইভি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং সাধারণ ঠাণ্ডার ভাইরাস ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
ওমিক্রনের মিউটেশনের উৎস, ক্ষতিকর প্রভাব ও সংক্রামক ক্ষমতা নিশ্চিত হতে আরো গবেষণা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক এই ভ্যারিয়েন্টটি সম্ভবত কোনো প্রাণিদেহের কোষে রূপ বদলেছে, এরকম একটি ধারণাও আছে। তবে সৌনদরারাজনের মতে গবেষণার ফল আসা পর্যন্ত এখন যেসব কোভিড-১৯ এর টিকা আছে সেগুলো নেয়া জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়