এবার রাজধানীতে গাড়িচাপায় সাইকেল আরোহী নিহত

আগের সংবাদ

প্রতিকারহীন মৃত্যুর মিছিল!

পরের সংবাদ

বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি : বাসযোগ্য বিশ্ব গড়তে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারি বিশ্বব্যবস্থার ভেতরের দুর্বলতাগুলো দেখিয়ে দিয়েছে। এর ফলে পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার ঢাকায় বিশ্বশান্তি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের আন্তর্জাতিকীকরণের লক্ষ্য নিয়ে গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুদিনের শান্তি সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের উদ্বোধনপর্বে ভিডিও কনফারেন্সে বঙ্গভবন থেকে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ সম্মেলন ‘ঢাকা শান্তি ঘোষণা’ শীর্ষক একটি সর্বসম্মত ঘোষণা দিয়ে শেষ হবে। সমাপনী পর্বে সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আয়োজনের জন্য স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সভাপতি ও সায়মা ওয়াজেদকে সদস্য সচিব করে ৪৬ সদস্যের আয়োজক কমিটি গঠন করা হয়। গত মার্চ মাসে এই সম্মেলনের অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ভারতের সাবেক মন্ত্রী সুরেশ প্রভাকর প্রভু। অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার সাবেকমন্ত্রী সৈয়দ হামিদ আলবার, বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক ও জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ারুল করিম চৌধুরী, মিসরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আরব লীগের

সাবেক মহাসচিব আমর মুসা, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের ধারণকৃত ভিডিও বার্তা অনুষ্ঠানে দেখানো হয়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বিশ্ব এখন অসংখ্য চ্যালেঞ্জ ও সংঘাতের মুখোমুখি। কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্ব ব্যবস্থার দুর্বলতা দেখিয়ে দিয়েছে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই এবং পারস্পরিক শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত না করি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে পারব না। এর মধ্যেই ধরিত্রী যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কবলে পড়েছে তাও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই ধর্ম, বিশ্বাস, বর্ণ এবং জাতিগত বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। একটি সুষম বিশ্ব ব্যবস্থা সবার জন্য অপরিহার্য। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত হবে না যে, আমরা সবাই ভাগাভাগি করে এমন একটি গ্রহে বাস করি, যার দায়িত্বও আমরা ভাগ করে নিয়েছি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, বিশ্বব্যাপী শান্তি প্রতিষ্ঠা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সর্বোত্তম পন্থা। আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংঘাতের সমাধান এবং বিশ্বব্যাপী শান্তির প্রচারের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব। ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারও সঙ্গে শত্রæতা নয়’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই নীতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মুক্তিযুদ্ধের পর মানবাধিকার ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার অর্জনের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, ওটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্তি। যার ফলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধুতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতার ভাষণ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, কীভাবে বৈশ্বিক বৈষম্য ও অবিচার আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য প্রকৃত হুমকি তা বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেছিলেন।
শান্তি সম্মেলনে যোগদানকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সবার একটি মূল্যবোধ, একটি আদর্শ এবং একটি স্বপ্ন রয়েছে এবং তা হলো শান্তি, আমরা শান্তি লালন করি। বিশ্বজুড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থাকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। আমরা শান্তিকে মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে দেখি। আমরা যে কোনো মূল্যে শান্তি অর্জন, টেকসই, প্রসার এবং শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ। তাই আমরা সবাই আজ এখানে যোগ দিয়েছি। এর চেয়ে মহৎ আর কিছু হতে পারে বলে আমি মনে করি না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখা আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য উপাদান। আমরা সবাই জানি যে, শান্তি হলো সম্প্রীতি, বন্ধুত্ব এবং সংঘর্ষের অনুপস্থিতির একটি সর্বজনীন ধারণা। শান্তি ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মধ্যে সহিংসতা বা ভয় থেকে মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়। বিভেদের পথ ত্যাগ করে, হাতে হাত মিলিয়ে শান্তির পথে একসঙ্গে চলার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়