মোটরসাইকেল ধাক্কায় রমনায় নারী নিহত

আগের সংবাদ

উল্লাপাড়ার শুঁটকি মাছে সমৃদ্ধ হবে রাজস্ব খাত

পরের সংবাদ

সড়কে হত্যার অবসান হোক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দুঃখজনক হলো সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করেও শৃঙ্খলায় আনা সম্ভব হয়নি। আইন-কানুন মানার বালাই নেই। চালক-হেলপাররা বেপরোয়া। সংঘবদ্ধ মালিক-শ্রমিকদের কাছে যাত্রীরা একপ্রকার জিম্মি হয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাস হয়। সংসদে পাস হওয়ার পর গেজেটও জারি করা হয়। এরপরও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে আইনটি বাস্তবায়ন করতে পারছিল না সরকার। পরে নতুন এ আইন সংশোধনও করে। কিন্তু এরপর কার্যকর কিছু আমরা দেখিনি। সড়ক দুর্ঘটনা এখন অন্যতম জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণে নতুন আইনটি কার্যকরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিল। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু একটি জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধানের জন্য সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানো এবং দুর্ঘটনাকেন্দ্রিক অপরাধের বিচার ও শাস্তি প্রদানের জন্য একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ আইনের প্রত্যাশা অনেক পুরনো। কিন্তু কোনো সরকার এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নিয়েছে বলে মনে হয় না। ২০১৮ সালে রাজধানীতে বেপরোয়া এক বাসের চাপায় দুই কলেজশিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ-প্রতিবাদের চাপে পুরনো আইন সংশোধন করে অপরাধের দণ্ডের মাত্রা বাড়ানোসহ কিছু কঠোরতা আরোপ করা হয়। সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী, গাড়ির লাইসেন্স না থাকলে সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ভুয়া লাইসেন্সের জন্য শাস্তি আরো বেশি। সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে নতুন আইনে। ফিটনেসবিহীন গাড়ির জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। একইভাবে বিভিন্ন ধারায় ট্রাফিক আইন অমান্যের জন্য বাড়ানো হয়েছে শাস্তি ও জরিমানা। আইনের প্রয়োগে বাধা নিয়ে প্রভাবশালীদের ভূমিকা লক্ষণীয়। এভাবে আইনটি ঝুলে থাকে। সম্প্রতি নটর ডেমের ছাত্রসহ কয়েক ছাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর আইন বাস্তবায়নের বিষয়টি সামনে আসছে। সড়ক-মহাসড়কে বেঘোরে মৃত্যু কারোরই কাম্য নয়। একটি মৃত্যু একটি পরিবারের কাছে সারাজীবনের জন্য গভীর ক্ষতের কারণ হয়ে থাকে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে জারি রয়েছে, বেরও হয়েছে অনেক কিছু। তবু বছর বছর দুর্ঘটনা নতুন রূপে হাজির হচ্ছে, এটা অনাকাক্সিক্ষত। এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের দ্রুত সক্রিয়তা জরুরি। আমরা মনে করি, এই আইন বাস্তবায়ন করতে হলে মূলে হাত দিতে হবে। বিআরটিএ স্বচ্ছ হলে সড়ক-মহাসড়কে নৈরাজ্য প্রায় কমে আসবে। আধুনিক, মানসম্পন্ন ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন যে কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকেও গতিশীল করে। পরিবহন খাত এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আঞ্চলিক যোগাযোগ ছাড়াও আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় এখন পরিবহনে যুক্ত। তাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এজন্য সময়ের ধারাবাহিকতায় সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন নয়, নতুন আইনে যে বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, তার কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি মনে করছি। প্রতিনিয়ত বেড়ে চলা দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আর শৈথিল্যের সুযোগ নেই। সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দিয়ে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়