মেডিকেল বোর্ড : লিভার সিরোসিসে খালেদার ব্লিডিং হচ্ছে

আগের সংবাদ

সর্বত্র শোকের ছায়া : থেমে গেল জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চরণযুগল

পরের সংবাদ

হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ দারাজের বিরুদ্ধে : অনুসন্ধান শুরু করেছে সিআইডি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অর্থ পরিশোধ করে নির্দিষ্ট মান বা স্পেসিফিকেশনের পণ্য না দেয়া ও রিফান্ডসংক্রান্ত নানা অভিযোগের পর এবার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যেই এ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অর্থপাচারের অভিযোগে দারাজের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামী সপ্তাহে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ ফের ডেকেছে তদন্তকারী এ সংস্থাটি। যদিও দারাজের পক্ষ থেকে হাজার কোটি টাকা পাচারের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। আইন মান্যকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা সিআইডির অনুসন্ধানে সহযোগিতা করছে বলেও দাবি দারাজের।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নামে দারাজ অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থপাচার করেছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। দারাজের কাছে ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নথিপত্র দেখতে চাইলে গতকাল তারা কোনো কিছু দেখাতে পারেনি।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, দারাজের অর্থপাচারের বিষয়টির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। দারাজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুই দফা কথা বলেছি আমরা। তাদের কাছে কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানের পর এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ডিজিটাল পণ্য বিক্রির নামে দারাজ বিদেশি বিভিন্ন ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড হিসেবে ফিক্সড কার্ড ও রিচার্জেবল কার্ড বিক্রি করে আসছিল। একই সঙ্গে তারা বিদেশি বিভিন্ন ইন্টারনেটভিত্তিক চ্যানেলের সাবস্ক্রিপশন ফি পরিশোধের কার্ড, অ্যামাজনের গিফট কার্ড, গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপস স্টোরের গিফট কার্ড বিক্রি করে আসছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনানুযায়ী, বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড আমদানি নিষিদ্ধ। অথচ দারাজ তাদের ওয়েবসাইটে রীতিমতো প্রমোশনাল বিজ্ঞাপন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করছিল। এগুলো কেনাবেচার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এসব কার্ডের গ্রাহকরা সাধারণত বিভিন্ন সফটওয়্যারের অ্যাক্টিভেশন ফি, বিভিন্ন গেমসের

ডেভেলপমেন্ট টুলস ইত্যাদি কিনে থাকে। একই সঙ্গে দুনিয়াজুড়ে ভার্চুয়াল কার্ডের মাধ্যমে অর্থপাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন, মাদক ও অস্ত্র বেচাকেনা, অবৈধ অর্থের লেনদেন, বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের অর্থ পরিশোধ করা হয়। সিআইডি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিটের (বিএফআইইউ) কর্মকর্তারা দারাজের মার্চেন্ট একাউন্টের তথ্য বিশ্লেষণের কাজ শুরু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিআইডি ও বিএফআইইউর অনুসন্ধান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দারাজ তাদের ই-কমার্স সাইট থেকে ডিজিটাল পণ্যের সব বিজ্ঞাপন সরিয়ে নিয়েছে। ফলে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনের বিক্রির পরিমাণও অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশে বিদেশি ব্যাংকের ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ। এটা আইনবহির্ভূত একটি কাজ। এমন অভিযোগের বিষয়ে বিএফআইইউ ইউনিট কাজ করছে। দারাজের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশোর নামে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, তারা কোনো বিক্রেতা, প্রস্তুতকারক, সরবরাহকারী বা পেমেন্ট গেটওয়ে সেবা প্রদানকারী বা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান নয়। দারাজ শুধু বিক্রেতা ও ক্রেতার কেনাকাটা সম্পাদনের ক্ষেত্রে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। যেখানে বিক্রেতারা একটি ডিজিটাল শপ খুলে তাদের পণ্যের বিবরণ, ছবি ও দাম উল্লেখ করে তালিকাভুক্ত করে। আর গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো উল্লিখিত একটি পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে যে কোনো সময় যে কোনো স্থান থেকে পণ্য কিনতে পারে। বিক্রেতাদের সঙ্গে দারাজ একটি ব্যবসা পরিচালনার চুক্তি সম্পাদন করে। যেখানে বিক্রেতারা এই অঙ্গীকার করে, তারা দেশের সব আইন মেনে তাদের পণ্য দারাজের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করবে। এছাড়া যেসব পণ্যের ক্ষেত্রে অনুমোদন গ্রহণের প্রয়োজন, সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়