মেডিকেল বোর্ড : লিভার সিরোসিসে খালেদার ব্লিডিং হচ্ছে

আগের সংবাদ

সর্বত্র শোকের ছায়া : থেমে গেল জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চরণযুগল

পরের সংবাদ

রামেক হাসপাতাল গ্যারেজ : রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার উন্মুক্ত নিলামের দাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সাইকেল ও মোটরসাইকেল গ্যারেজ থেকে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সময়মতো পরিশোধ হয় না টেন্ডারের টাকা। আজ মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে সর্বশেষ টেন্ডারের মেয়াদ। অথচ টাকা পরিশোধ করা হয়নি এখনো। ফলে নিলাম উন্মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ঠিকাদাররা। সরকারের রাজস্ব বাড়ানোর স্বার্থেই তাদের এ দাবি। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রামেক হাসপাতাল পরিচালকের কাছে লিখিতভাবে আবেদনও করেছে।
জানা গেছে, রামেক হাসপাতাল ফোর্থ ক্লাস কর্মচারী ইউনিয়ন থেকে পরিচালিত হয় হাসপাতালটির সাইকেল ও মোটরসাইকেল গ্যারেজ। ওই সংগঠনের বাইরের কেউ নিলামে অংশ নিতে পারেন না। ফলে অল্প দামে কর্মচারীদের কাছেই টেন্ডার দেয়া হয় গ্যারেজের। গ্যারেজের এ টেন্ডার দুই বছর মেয়াদি। সর্বশেষ গ্যারেজটির টেন্ডার পেয়েছেন আব্দুল খালেকের নামে হাসপাতালের এক কর্মচারী। টেন্ডারের দর কমলেও সাইকেল ও মোটরসাইকেল প্রতি ফি বাড়ানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, পূর্বে সাইকেলপ্রতি ৩ টাকা ও মোটরসাইকেলপ্রতি ৫ টাকা গ্যারেজ ভাড়া থাকলেও তা বাড়ানো হয়েছে ২০১৪ সালে। বর্তমানে গ্যারেজে সাইকেলের জন্য ৫ টাকা ও মোটরসাইকেল রাখলে দিতে হয় ১০ টাকা। অথচ নিলামে দর না বাড়িয়ে কর্মচারীদের কল্যাণের নামে তা আরো কমানো হয়েছে সর্বশেষ টেন্ডারে।
অভিযোগ রয়েছে, গ্যারেজের বিদ্যুৎ বিল টেন্ডার নেয়া প্রতিষ্ঠান থেকে আলাদাভাবে পরিশোধ করার কথা থাকলেও হাসপাতালের বিলের সঙ্গেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতালের জেনারেটর ব্যবহার করা হয় গ্যারেজে। সেটির জন্য পরিশোধ করা হয় না আলাদা কোনো মূল্য। এছাড়া টেন্ডারের টাকাও পরিশোধ করা হয় না সময়মতো। আজ সর্বশেষ টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হলেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত টাকা জমা পড়েনি হাসপাতালের অ্যাকাউন্টে। ফলে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের পুকুরের নিলাম সেখানকার ফোর্থ ক্লাস কর্মচারীদের কাছে কুক্ষিগত ছিল। তবে অনেক টাকা রাজস্ব হারানোর কারণে ওই পদ্ধতি ভেঙে দিয়ে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় ৮ বছর আগে। কিন্তু রামেক হাসপাতাল কর্মচারী ইউনিয়নের কাছে গ্যারেজের টেন্ডার ‘কুক্ষিগত’ হয়ে থাকায় লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এতে ক্ষতির মুখে স্থানীয় ঠিকাদাররাও। অথচ কর্মচারী ইউনিয়নের কোনো কার্যক্রম নেই। কল্যাণের পরিবর্তে সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর হোসেন নিজেই হত্যা মামলার আসামী হয়ে বরখাস্ত হয়েছেন। এসব কারণে টেন্ডার উন্মুক্ত করতে ঠিকাদাররা রামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম ইয়াজদানীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। ২১ নভেম্বর এসজে এন্টারপ্রাইজ, জারা এন্টারপ্রাইজ, সুমনসহ আরো কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ আবেদন জানায়।
এ ব্যাপারে এসজে এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুশফিক আহমেদ বলেন, ফোর্থ ক্লাস কর্মচারীদের টাকাও নেই। ফলে তারা বেশি দরে গ্যারেজ নিতে পারে না। আবার যে দরে তারা নেয়, ওই টাকাও ঠিকমতো পরিশোধ করতে পারে না। এতে লোকসান হচ্ছে সরকারেরই। যেকারণে আমাদেরও নিলামে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত। ঠিকাদার মো. সুমন বলেন, নিলামে আমাদের অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ করা হয়েছে। সবার জন্য উন্মুক্তভাবে দর হাঁকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বেশি দরদাতাই পাবেন টেন্ডার। এতে লাভ হবে সরকারের।
এ বিষয়ে রামেক হাসপাতাল গ্যারেজের টেন্ডারগ্রহীতা ও কর্মচারী আব্দুল খালেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। বক্তব্য জানতে রামেক হাসপাতাল ফোর্থ ক্লাস কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আছির উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তার বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল হান্নান ভোরের কাগজকে বলেন, ৩ যুগেরও অধিক সময় ধরে গ্যারেজের টেন্ডার হাসপাতাল কর্মচারীরাই নেন। ঢাকা অফিস থেকে নির্দেশনা মোতাবেক তাদের টেন্ডার দেয়া হয়। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই আমাদের। এছাড়া সর্বশেষ টেন্ডারের টাকা গতকাল পর্যন্ত পরিশোধ হয়নি বলে জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের কোষাধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়