মেডিকেল বোর্ড : লিভার সিরোসিসে খালেদার ব্লিডিং হচ্ছে

আগের সংবাদ

সর্বত্র শোকের ছায়া : থেমে গেল জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের চরণযুগল

পরের সংবাদ

মাঠ থেকে হাসপাতালে ইয়াসির আলী : শঙ্কামুক্ত তবুও ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের ছেলে ইয়াসির আলীর অভিষেকটা হয়েছে চট্টগ্রামেই। আর সেই হোম ভেন্যুতেই গতকাল চোটে পড়েন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক টেস্টে চোটে পড়ার বেশ কয়েকটি ঘটনাই আছে। এই তো কয়েকদিন আগে ইয়াসির আলী রাব্বি চোটে পড়ার আগে টেস্ট অভিষেকে ভয়াবহ চোটে পড়েন উইন্ডিজের জেরেমি সোলোজানো। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল শাহীন শাহ আফ্রিদির শর্ট বল ইয়াসির আলী চৌধুরীর হেলমেটে আঘাত করে ৩০তম ওভারের পঞ্চম বলে। দ্রুতগতির বলে চোট পেয়েছিলেন বোঝা যাচ্ছিল। মাঠে ফিজিও আসার পর তার সঙ্গে কথা বলে খেলা চালিয়ে গেলেও, পানি পানের বিরতির সময় ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছাড়েন এই মিডলঅর্ডার ব্যাটার।
প্রথম ইনিংসে ভালো খেলতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন ইয়াসির আলীর। শুরুর দিকে লিডটা বেড়েছে তারই কল্যাণে। কিন্তু ৩৬ রান নিয়ে খেলতে থাকা ডানহাতি এই ব্যাটারকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আহত হয়ে। হাসপাতালে মাথায় স্ক্যান করানোর পর অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছে বিসিবি।
ঘটনার পর পর ইয়াসিনকে মাথার স্ক্যান করাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার বদলে কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। সিটি স্ক্যানশেষে বিসিবি জানিয়েছে, স্ক্যান রিপোর্টে ইয়াসির আলীর অবস্থা স্থিতিশীল। আপাতত ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালেই পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি।
ইয়াসির আলী রাব্বির ঘটনার এক সপ্তাহ আগে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের জেরেমি সোলোজানো অভিষেক টেস্টে মাথায় চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে ফিল্ডিং করতে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন।
শর্ট ফাইন লেগে ফিল্ডিং করছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান দিমুথ করুনারতেœর সজোরে মারা বলটি আঘাত করে তার মাথায়। হাসপাতালে নিতে হয়েছে তাকে। সেখানে স্ক্যানট্যান করার পর সুখবরই মেলে। আঘাতটা জোরে হলেও বড় কিছু ঘটেনি সোলোজানোর।
গতকাল লিটন দাসের সঙ্গে অসাধারণ ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী রাব্বি। নামের পাশে জমা করে ফেলেছিলেন ৩৬ রান। পাকিস্তানি বোলারদের আগুন মাখানো বোলিং উপেক্ষা করে বাংলাদেশ দলকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
কিন্তু পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির একটি শট বল ডাক করতে গিয়েও আঘাত লাগে হেলমেটে। বলে প্রচণ্ড গতি থাকার কারণে সেই আঘাতটা লাগে মাথায়ও। এক ওভার কোনোরকম ব্যাট করে যেতে পারলেও ব্যাথার কারণে মাঠ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন তিনি।
রাব্বির কনকাশন সাব হিসেবে মাঠেও নামিয়ে দেয়া হয় নুরুল হাসান সোহানকে। যিনি ব্যাট করতে নেমে ১৫ রান যোগ করে আউট হয়ে যান।
ওই সময়ই জানানো হয়, আঘাতের অবস্থা কী তা জানতে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ইয়াসির আলী রাব্বিকে। স্ক্যান রিপোর্ট আসার পর দেখা গেলো, মাথায় কোনো গুরুতর কিছুই হয়নি। কোথাও কোনো রক্ত জমাট বাঁধেনি। বিসিবির মিডিয়া বিভাগ জানাচ্ছে, মেডিকেলি স্ট্যাবল রয়েছেন রাব্বি। তবুও, সতর্কতার কারণে ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে অবজারবেশনে রাখা হচ্ছে তাকে।
ইয়াসির আলী রাব্বি এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেরেমি সোলোজানোর আগেও অভিষেকে বেশ কয়েক জন যারা চোট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন ভারতের শিখর ধাওয়ান।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেকে ঘটে শিখর ধাওয়ানের। মোহালিতে ১৮৭ রানের দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেছিলেন। সেই ইনিংসটিতে একটা রেকর্ডও করেছিলেন ধাওয়ান।
অভিষেকে দ্রুততম শতক। কিন্তু ধাওয়ান ইনিংসটাকে আরো বড় করতে পারেননি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হাতে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
র‌্যানকিন আয়ারল্যান্ডের হয়েই খেলা শুরু করেছিলেন। তবে টেস্ট খেলতে ইংল্যান্ডে চলে যান। আয়ারল্যান্ড তখনো টেস্ট পরিবারের সদস্য হয়নি। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজে তার টেস্ট অভিষেক হয়। এই পেসারের অভিষেকটা ভুলে যাওয়ার মতোই।
অনেক স্বপ্নের টেস্ট খেলতে নেমে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে তিনি বোলিং করতে পেরেছিলেন মাত্র ৮.২ ওভার।
২০১৭-১৮ অ্যাশেজ সিরিজে অভিষেক হয় ইংল্যান্ডে পেসার ক্রেইগ এভারটনের। ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসার প্রথম থেকেই দারুণ বোলিং করছিলেন।
গতি আর সুইংয়ের সমন্বয়ে তুলে নিয়েছিলেন স্টিভ স্মিথের উইকেট। কিন্তু ভাগ্য তাকে সহায়তা করেনি। ব্যাটিংয়ে নেমে প্যাট কামিন্সের বাউন্সার লাগে তার পাঁজরে। মাঠ থেকে বেরিয়ে যেতে হয় তাকে। তবে সুস্থ হয়ে তিনি সিরিজের বাকি টেস্টগুলোতে খেলেছিলেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালে টেস্ট অভিষেক হয় ভারতের শার্দুল ঠাকুরের, মোহাম্মদ শামিকে বিশ্রাম দেয়ায় টেস্টের দোয়া খুলে গিয়েছিল ঠাকুরের জন্য। কিন্তু অভিষেক টেস্টেই কুঁচকির চোটে পড়েন তিনি। বোলিং করতে পেরেছেন মাত্র ১০টি বল।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৮ সালে নিজের টেস্ট অভিষেকেই চোট পান পাকিস্তানের ইমাম উল হক।
সেটি ছিল আয়ারল্যান্ডেরও অভিষেক টেস্ট। ইমাম চোট পান ম্যাচের প্রথম বলেই। নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে ইমামের চোটটা ছিল চরম দুর্ভাগ্যজনক।
আজহার আলীর ডাকে একটি রান নিতে দৌড় শুরু করেছিলেন ইমাম। কিন্তু দৌড়ের একপর্যায়ে আয়ারল্যান্ড দলের নেইল ও ’ব্রায়ান ও টাইরন কেনের মাঝে পড়ে যান তিনি।
তাদের সঙ্গে ধাক্কা খান। ভালোই চোট পান তাতে। পরে অবশ্য চিকিৎসা শেষে মাঠে ফিরতে পেরেছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়