মাহমুদুর রহমান মান্না : খালেদা জিয়া এখন তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে যাচ্ছেন

আগের সংবাদ

ওমিক্রন ঠেকাতে চার সুপারিশ

পরের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে সালমান এফ রহমান : দেশে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হচ্ছে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১২ বছরে নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে পেরেছি। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ আসছে। বাড়ছে দেশি বিনিয়োগও। একই সঙ্গে দেশে-বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সম্মেলনকক্ষে প্রি-সামিট প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। দুদিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি জানাতে এ প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। আজ রবিবার ভার্চুয়ালি বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের পর আবার রেডিসন ব্লæর ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে এ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সালমান এফ রহমান বলেন, বিনিয়োগ একটা চলমান পক্রিয়া। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন করেছে সরকার। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। ভূমির নামজারি অনলাইনের আওতায় আনার মধ্য দিয়ে অধিকাংশ সেবা যুক্ত করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ আনার লক্ষ্যে এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগ আসার ক্ষেত্রে দুই জায়গায় সমস্যা চিহ্নিত করেছি উল্লেখ করে এ উপদেষ্টা বলেন, এর মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে এনবিআর। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আরো একটি বিষয় হচ্ছে অনলাইন সার্ভিস। আমি মনে করি সব ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন হওয়া খুুব জরুরি। তিনি আরো বলেন, বেসরকারি খাতে জবাবদিহিতা অনেক কম কিন্তু সরকারের জবাবদিহিতা অনেক বেশি। তারপরেও গত ১২ বছরে প্রধানমন্ত্রী যা কিছু করেছেন তা জবাবদিহিতার মধ্যে থেকেই করেছেন। মাথাপিছু আয় ৫০০ ডলার থেকে ১২ বছরে আড়াই হাজার ডলার করতে পেরেছেন।
তিনি আরো বলেন, পোশাক খাতকে ছোট করে দেখা উচিত না। এ খাতে এখনো আমরা অনেক পেছনে আছি। যদিও আমরা বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থায় আছি। কিন্তু ম্যানমেইড ফাইবার মাত্র ৩০ শতাংশ জায়গা দখল করে আছে। অথচ বিশ্বে ম্যানমেইড ফাইভার ৭০ শতাংশ, আর কটন ৩০ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশসহ ৫৪ দেশ থেকে ২ হাজার ৫৭৪ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এরমধ্যে ২ হাজার  ১০৯ জন বাংলাদেশি। বাকি ৪৬ জন বিদেশি নাগরিক। সম্মেলনে অংশ নিতে ইতোমধ্যে সৌদি আরবসহ অন্তত ১৫ দেশ থেকে বিনিয়োগকারীরা ঢাকায় এসেছেন। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, যেখানে রয়েছে অসীম বিনিয়োগের সম্ভাবনা’। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলফনসো গার্সিয়া মোরা এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেরেমি জারগেনস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন।
সম্মেলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্মেলনে কয়েকটি প্ল্যানারি সেশনের পাশাপাশি খাতভিত্তিক কারিগরি অধিবেশন হবে। সেখানে বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, তথ্যপ্রযুক্তি, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস এন্ড ইলেকট্রিক শিল্প, কৃষি, চামড়া, ওষুধশিল্প, স্বাস্থ্য, পুঁজিবাজার, পরিবহনসহ ১১টি খাত নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিটি সেশনে একজন বিশেষজ্ঞ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। এর ওপর দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন। সংশ্লিষ্ট খাতের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টারা বক্তব্য রাখবেন।
বিডা জানিয়েছে, বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা), বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনস অথরিটি (বেপজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটি (বিএইচটিপিএ), পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপিএ), ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) এই সম্মেলনে বিডাকে সহযোগিতা করছে। এক হাজার বিনিয়োগকারী এতে অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে দেশে।
বিডা জানায়, বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, তথ্যপ্রযুক্তি, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস এন্ড ইলেকট্রিক শিল্পসহ ১৪টি খাত নিয়ে আলোচনা হবে।
প্রতিটি সেশনে একজন বিশেষজ্ঞ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন। সংশ্লিষ্ট খাতের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা- বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকসহ (এআইআইবি) বৈশ্বিক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।
২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন অয়োজকরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়