কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) থেকে : বোয়ালমারী উপজেলার ১০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও নেই বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্লিপের বরাদ্দ থেকে এই ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র ক্রয়বাবদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও উপজেলার কোনো বিদ্যালয়ই ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র না কিনে প্রধান শিক্ষকরা অর্থ হস্তগত করে রেখেছেন।
জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের স্লিপের বরাদ্দ থেকে এই ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র ক্রয়বাবদ উপজেলার প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টাকা দেয়া হয়। যেসব বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই সেসব বিদ্যালয়কে ২৫ হাজার আর যেসব বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে সেসব বিদ্যালয়কে ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু উপজেলার কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ই এই ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র কেনেনি। একটি পৌরসভাসহ ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলার মোট ১০২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটিতেও এখনো বসানো হয়নি বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা। ফলে শিক্ষকদের সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলক উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও অনেক শিক্ষক যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন না। এ বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন বসানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওয়ারেজ আলী খান বলেন, কোন ব্র্যান্ডের ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র কেনা হবে, এ বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা মতৈক্যে পৌঁছতে না পারায় এবং ব্র্যান্ডের নাম উল্লেখ না থাকায় প্রথমদিকে কেনা হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে স্থগিত করায় আর কেনা হয়নি। তবে ওই টাকা প্রত্যেক প্রধান শিক্ষকই সংরক্ষিত রেখেছেন বলে জানি। এ ব্যাপারে নির্দেশনা পেলে সে মোতাবেক প্রধান শিক্ষকরা ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবু আহাদ বলেন, প্রথমে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র ক্রয়ের নির্দেশনা এলেও পরে অন্য এক চিঠির মাধ্যমে ওই যন্ত্র ক্রয়াদেশ স্থগিত করা হয়। এ কারণে এই উপজেলার কোনো বিদ্যালয়েই ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র ক্রয় করা হয়নি।
ডিজিটাল হাজিরার যন্ত্র ক্রয়ের জন্য ১৫ হাজার টাকা নির্ধারিত ছিল। তিনি আরো বলেন, চালানের মাধ্যমে ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য স¤প্রতি রেজুলেশন করে উপজেলার প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।