প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীর কাঁটাখালী পৌরসভার আলোচিত মেয়র আব্বাস আলীকে আওয়ামী লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কারের সুপারিশের কপি গতকাল শনিবার সকালে ডাকযোগে দলটির কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ফলে তার গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনা আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। এদিকে আব্বাসের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া তিনটি মামলারই তদন্ত চলমান রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। তবে ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেলে প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে যে কোনো মুহূর্তে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। গতকাল শনিবার প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) তিনজন কাউন্সিলর পৃথক তিনটি মামলা করেছেন। তার মধ্যে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ও রাসিকের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিনের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন কাঁটাখালী পৌর মেয়র। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া ওই মামলার তদন্ত চলছে। ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপটির সত্যতা যাচাইয়ে কাজ করছেন একজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। একই সঙ্গে তার অবস্থান শনাক্তকরণে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তায় কাজ চলছে। আব্বাস আলী এখনো মেয়র পদে থাকলেও তাকে গ্রেপ্তারে কোনো বাধা নেই আইনে।
এদিকে দলীয় সূত্র বলছে, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য থেকে আব্বাস আলীকে অব্যাহতি দেয়ার পর তাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের বৈঠকে এ সুপারিশ করেন দলটির জেলা কমিটির নেতারা। গতকাল শনিবার সকালে ডাকযোগে সুপারিশের সেই কপি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পৃথক আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, আব্বাস আলীর গ্রেপ্তারের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তাকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আব্বাসের বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা পৃথক একটি ফৌজদারি মামলা করতে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, মেয়র আব্বাস যে দোষ করেছেন- তা তিনি নিজেই প্রমাণ করেছেন লাইভে এসে ক্ষমা চেয়ে। লাইভে এসে তার ক্ষমা চাওয়া এবং ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপের কথাগুলোই তাকে গ্রেপ্তারের জন্য যথেষ্ট। তার অবস্থান শনাক্ত করতে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সহায়তা নেয়া হচ্ছে। ওসি আরো জানান, সন্ত্রাস দমন
আইনের মামলা হলে জনপ্রতিনিধিকে গ্রেপ্তারে স্থানীয় সরকারের অনুমতি নেয়া লাগত। কিন্তু আব্বাসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা সিআরপিসি জাতীয়। এ মামলায় ‘সেনশন অর্ডার বা পূর্বানুমতির’ প্রয়োজন নেই। যে কারণে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে আব্বাস আলীকে।
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর কপি ও তার পৌরসভার কাউন্সিলরদের অনাস্থা প্রস্তাবের কাগজপত্র হাতে পেয়েছি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে ঢাকায় একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলেই সে অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।