পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

বিআরটিসিতে হাফ ভাড়া চালু বেসরকারি গণপরিবহন নারাজ : মালিকদের সঙ্গে বিআরটিএর ফের বৈঠক আজ

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হাফ ভাড়া’ চালু করার বিষয়টি সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির বাসে নিশ্চিত করা হলেও বেসরকারি গণপরিবহন মালিকরা এতে রাজি নন। তবে বেসরকারি বাসের ভাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কী হবে তা নিয়ে আজ শনিবার গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আজ শনিবার আবারো বৈঠক করবে। এর আগে বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষে নিষ্ফল বৈঠক হয়।
দুই সপ্তাহ ধরে শিক্ষার্থীরা হাফ পাসের দাবিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে। রাজধানীর পাশাপাশি চট্টগ্রামেও একই দাবিতে আন্দোলন চলছে। অবশেষে গতকাল শুক্রবার এই দাবির আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বিআরটিসি বাসের ভাড়া শতকরা ৫০ ভাগ কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণার পর এখন থেকে সারাদেশে বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে পারবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র দেখিয়ে এই সুবিধা পাবেন। কিন্তু অন্য সময়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেদিন বন্ধ থাকবে সেদিন তাদের স্বাভাবিক ভাড়া দিয়েই চলাচল করতে হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারের এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
বিআরটিসি বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নেয়া নিশ্চিত করা হলেও বেসরকারি বাসে তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতুল্লাহ বলেন, বেসরকারি বাসে হাফ ভাড়ার কোনো বিধান কখনোই ছিল না। বিআরটিসি বাস সরকার ভর্তুকি দিয়ে চালায়, তারা চাইলে শিক্ষার্থীদের কম ভাড়ায় যাতায়াতের সুযোগ দিতে পারে। কিন্তু বেসরকারি খাতের পক্ষে

এটি সম্ভব নয়। এটা করা হলে জেলা শহরগুলোতেও প্রভাব পড়বে। সারাদেশের পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, মালিকদের লোকসান গুণতে হবে। এমন অনেক বাস মালিক আছেন যাদের একটা বা দুইটা বাস আছে। তারা খুব সামান্য লাভ করেন। তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি হাজি আবুল কালাম বলেন, বিআরটিএ এর সঙ্গে বৃহস্পতিবারের সভায় বাস মালিকদের পক্ষ থেকে ‘হাফ ভাড়া না নেয়ার’ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু বিআরটিসি বাসে হাফ ভাড়া চালু করতে বলেছি। এখন লাখ লাখ শিক্ষার্থী দিনে ও রাতের যে কোনো সময় যাতায়াত করে। একটি বাসে মোট যাত্রীর প্রায় অর্ধেক ছাত্র ও পাসধারী যাত্রী চলাচল করে। এ কারণে হাফ ভাড়া চালু করা হলে পরিবহন মালিকরা ব্যবসায়ীকভাবে লোকসানে পড়বে। এখন পরিবহন খরচ আগের চেয়ে বেড়েছে। সরকার অনেক ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেয়। যদি বেসরকারি বাসের জন্য ভর্তুকি দেয়া হয় তাহলে হাফ পাস চালু করা সম্ভব, তা না হলে সম্ভব হবে নয়।
এদিকে আজ বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বেসরকারি বাস-মিনিবাসে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে হাফ ভাড়া নিয়ে আলোচনায় বসবে। এই বৈঠকেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে এই বৈঠকের পর বেসরকারি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ না করলেও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ভাড়া মওকুফের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহনে ‘হাফ ভাড়া’ চাওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকার। হাফ ভাড়া নেয়া হলেও এতে মালিকদের লোকসান হবে না। তাই শিক্ষার্থীদের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ঘোষণা দেয়ার পরও বাসগুলো এখনো ‘সিটিং সার্ভিস’ ‘গেটলক সার্ভিস’ ‘ওয়েবিল সিস্টেম’ বহাল রেখে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নেয়া হলেও মালিকদের লোকসান হবে না। এখনো বাস ও মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণে ৭০ শতাংশ আসন গড় বোঝাই ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ আসনের ভাড়া ৭০ শতাংশ যাত্রীকে পরিশোধ করতে হয়। তাই ৩০ শতাংশ আসনে শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ ভাড়া নির্ধারণ করায় আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়