পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ : পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির ঘটনা অনিয়ম ও গাফিলতিতে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুরেশ চন্দ্র রায়, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) থেকে : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়ায় ফেরিডুবির অন্যতম কারণ কর্তৃপক্ষ ও কর্মচারীদের অনিয়ম ও গাফিলতি বলে জানা গেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। বিলম্বে হলেও প্রকাশিত হয়েছে সেই তদন্ত প্রতিবেদন। নানা অনিয়ম, সমন্বয়ের অভাব, অদক্ষতা আর গাফিলতির কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া বেশকিছু ফেরি অগ্নিকাণ্ডসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ফেরিডুবির ঘটনায় কাউকে গুরুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়নি বলে প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে। এতে যে কোনো সময় আরো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের ৫৩টি ফেরির মধ্যে ৫০টি ফেরির নেই ফিটনেস সার্টিফিকেট। চারটি ফেরিতে রয়েছে অকেজো রাডার, বাকি ২৯টির তাও নেই। পানির গভীরতা পরিমাপের ১২টি যন্ত্রের সাতটিই নষ্ট। তদন্ত প্রতিবেদনে সার্বিক সমস্যা সমাধানে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সাত সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত টিম নৌ মন্ত্রণালয় সচিব মো. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
গত ২৭ অক্টোবর পাটুরিয়ায় ফেরি আমানত শাহ ডুবি তদন্ত রিপোর্টে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়িয়া রোডে ফেরি দুর্ঘটনার বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি কারণেই একের পর এক ফেরি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, প্রায় সব ফেরিতেই বিভিন্ন পাম্পের ফুটো ও ইঞ্জিন কক্ষের তলায় জমানো পানি, ফেরির এডজাস্ট পাইপ অ্যালুমোনিয়াম ফয়েল বা অন্য কোনো তাপ নিরোধক ঢাকনা দিয়ে আচ্ছাদিত রাখার নিয়ম থাকলেও বেশ কয়েকটি উন্মুক্ত থাকায় অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা রয়েছে। ফেরিতে বরাদ্দকৃত লুব অয়েল নিয়মিত ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
ফেরির পূর্ণ ডকিং, সুষ্ঠু রক্ষণাবক্ষেণ, বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা, মেয়াদোত্তীর্ণ ফেরি প্রত্যাহার, প্রয়োজনীয়সংখ্যক ফেরি ক্রয়, মাস্টারসহ সংশ্লিষ্টদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা ও দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা, কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটি নিশ্চিত করা, ফেরি পন্টুন ত্যাগের পূর্বে ত্রæটি-বিচ্যুতি শতভাগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, কর্মচারীদের বার্ষিক ৬০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ প্রদানসহ নানাবিধ বিষয়ে সুপারিশ করেছে তদন্ত দল।
বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামকে অতি সম্প্রতি বদলি করে ভূমি আপিল বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ শামীম আল রাজী।
সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেন, আমি এখন বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্বে নেই। তবে তদন্ত কমিটি একটি গতানুগতিক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এর চেয়ে বেশিকিছু বলতে রাজি নন তিনি।
আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়ম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি কারণেই বারবার ফেরি কোনো না কোনো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এককভাবে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি প্রতিবেদনে।
তবে লুব অয়েল সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও ফেরিতে ব্যবহার না হয়ে কোথায় যাচ্ছে, প্রায় প্রতি মাসে ফেরি মেরামতের জন্য উত্তোলিত টাকার যথাযথ ব্যবহার হয়েছে কিনা এবং বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যানের বদলির কারণ সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিত জানা যায়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়