পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : জঙ্গিবাদ বিস্তারের পথ হতে পারে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজের দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিতে না পারলে তাদের ঘিরে সহজেই জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটার আশঙ্কা করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে মুম্বাই হামলার ১৩তম বার্ষিকীতে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সহযোগিতায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে উদ্দেশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনার এখানে আছেন, তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন জানি, আমরা এটুকু বলতে চাই- এই যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা, এখান থেকেও জঙ্গির উত্থান হতে পারে। এ সমস্যাটা যদি শিগগির শেষ না হয়, তাহলে হয়তো আমাদের নতুন ডাইমেশনে জঙ্গির ?উত্থান হয়েও যেতে পারে। তিনি বলেন, আমরা সতর্ক রয়েছি, তারা আমাদের বেড়াজালের মধ্যে আছে, তারপরও আপনারা দেখছেন, তারা নিজেরা নিজেরা ক্যাম্পে রক্তক্ষরণ করছে। দেশে সন্ত্রাস, জঙ্গি ও মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী আমরা সেভাবেই ঢেলে সাজিয়েছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী যে কোনো ধরনের সহিংসতা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। সেজন্য তারা বড় রকমের আক্রমণ আগে থেকে আঁচ করতে পারছে। আমরা মনে করি, আমাদের জনগণও ঘুরে দাঁড়িয়েছে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। জঙ্গিবাদ দমনে ভারতসহ অন্যান্য দেশের সহযোগিতার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, তারা জঙ্গি দমনে আমাদের সহযোগিতা করা, গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করা, তাদের প্রযুক্তি আমাদের দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করা- সব কিছু করছেন। সেজন্য এই জিনিসটা আমাদের কাছে আরো সহজ হয়েছে। জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার পেছনে পাকিস্তানের ভূমিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, পাকিস্তান সব সময় আমাদের দেশের ওপর, ওদের ইন্টেলিজেন্স আইএসআইয়ের মাধ্যমে নানাভাবে আমাদের বিব্রত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা সে ব্যাপারে সব সময় খেয়াল রাখছি। যাতে করে তারা আর এই ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে, সেজন্য আমরা সব সময় তাদের গতিবিধির ওপর লক্ষ্য রাখছি। জঙ্গিবাদ দমনে ভারতের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সব সময় আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করে থাকি।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বরে মুম্বাইয়ের একাধিক স্থানে লস্কর-ই-তৈয়বার হামলার কথা তুলে ধরে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, ওই হামলার কথা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কারণ সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা সশস্ত্র সেনাদের ওপর ওই আক্রমণ করেনি, তারা আক্রমণ করেছিল যতটা সম্ভব জনবহুল স্থানে, সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে; হোটেল রেস্তোরাঁ, স্টেশন প্রভৃতি এলাকায়। তিনি বলেন, এখন তথ্য বলছে, তিনজন লোক সরাসরি এটা সমন্বয় করেছে, তাদের যোগাযোগের যন্ত্রপাতি ছিল। তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মানুষকে গুলি করার জন্য। তাদের বলা হয়েছে পাসপোর্ট দেখে দেখে বিদেশিদের চিহ্নিত করে

ঠাণ্ডামাথায় হত্যা করার জন্য। দোরাইস্বামী বলেন, এটা এমন ঘটনা, যা ভোলারও নয়, ক্ষমা করারও নয়। কারণ এটা অন্য কোনো জায়গায় না হয়ে বোম্বেতে হয়েছে এবং এটা ঘটেছে আরেকটি রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়। এটার পূর্বাপর যোগসূত্রও পাওয়া যায়। হামলা এমনভাবে ঘটেছে, যারা পেছনে রাষ্ট্র পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। যেখানে খুনিরা কোনো ধরনের বিচারের মুখোমুখি না হওয়ার নিশ্চয়তা পেয়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। যেটা ঘটেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়েও। কেবল নিজের অধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে, গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে অধিকারের জন্য। এজন্য কেবল বাঙালি হওয়ার কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছিল।
নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তৃতা করেন- শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলম, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল মো. আবদুর রশীদ (অব.), বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়