পুলিশের স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা : আসামি অজ্ঞাত কয়েক হাজার

আগের সংবাদ

‘ওমিক্রন’ নিয়ে সতর্ক সরকার

পরের সংবাদ

অর্থবছরের ৪ মাস : হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আফতাবুজ্জামান তাজ, হাকিমপুর (দিনাজপুর) : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রথম চার মাসে (জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতির পরিমাণ দেখা দিয়েছে ২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নির্ধারিত আমদানি খাতে চার মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৫৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১২৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩১২ কোটি ২৯ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছিল ৩৯৯ কোটি ২৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আহরণ প্রায় ২৮ শতাংশ বেশি হওয়ায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দর থেকে ৪৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে অর্থবছরের বাকি সময়ে এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর শুরুর জুলাইয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, আগস্টে ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বিপরীতে ২৬ কোটি ৬৯ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকার বিপরীতে ৩৫ কোটি ১৯ লাখ এবং সর্বশেষ অক্টোবরে ৩৯ কোটি ২ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। সে হিসেবে আমদানি খাতে প্রথম চার মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৫৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১২৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা ঘাটতির পরিমাণ ২৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয়েছিল ১০৩ কোটি ৪৬ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
বন্দরের আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ীরা জানান, হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানির জন্য একটিমাত্র প্রধান সড়ক যা অপ্রশস্ত, ভাঙাচোরা ও বিভিন্ন খানা-খন্দে ভরপুর। বন্দরের সড়কের বেহাল দশার ফলে সর্বদা দীর্ঘ সময় ধরে যানজট লেগেই থাকে।
অতিরিক্ত যানজটের কারণে স্বাভাবিকভাবে ট্রাক চলাচলের ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হয়। সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে। এ বন্দরে আছে পর্যাপ্ত জায়গার সংকট। বন্দরের শ্রমিক, ট্রাকচালক ও চালকের সহকারীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত শৌচাগার ব্যবস্থা।
বন্দরে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষের বিপরীতে রয়েছে গোসলের জন্য মাত্র একটি হাউস ও ১০টি টয়লেট। পর্যাপ্ত শেডের অভাবে বর্ষার মৌসুমে পণ্য লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর হলে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বন্দরটিকে আধুনিকায়ন করা হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার যেমন বাড়বে তেমনি রাজস্ব আহরণের মাত্রা অধিক সম্ভব হবে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান ভোরের কাগজকে জানান, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রার অধিক অর্জিত হওয়ায় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি নির্ধারণ করে দেয় এনবিআর। যার ফলে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরো জানান, এ বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার। এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গত বছরের তুলনায় কম হওয়ার কারণে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তাছাড়া পেঁয়াজের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমদানি-রপ্তানি বাড়লেই রাজস্ব আহরণ বাড়বে। তবে বর্তমানে যে হারে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলছে তাতে অর্থবছরের বাকি সময়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়