কাগজ প্রতিবেদক : নটর ডেম কলেজের ছাত্র নাঈম হাসানের হত্যাকারীর বিচারের দাবিসহ ছাত্রদের অন্যান্য দাবির সঙ্গে শুধু একমতই নয় ঘাতক সেই খুনির ফাঁসি দাবি করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। গতকাল বৃহস্পতিবার নগর ভবনের সামনে নিহত শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সমাবেশে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, আমি জানি এই কষ্ট কী। মেধাবী ছাত্র নাঈম আমার সিটি করপোরেশন এলাকার সড়কে আমার করপোরেশনের গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হবে, সেজন্য আমি রাজনীতিতে আসি নাই। আমার কাছে আমার সন্তানের সুখ, সন্তানের হাসি, সন্তানের ভালোবাসা অনেক অনেক মূল্যবান। তিনি বলেন, এই শহরের সড়কে আর যেন কোনো নাঈমের প্রাণহানি না ঘটে।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমি ওয়াদা করছি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সব জঞ্জাল মুক্ত করব ইনশাল্লাহ। আমাদের তারপরও আইনের আওতায় থাকতে হয়। আমাদের সরকারি নীতিমালা-নিয়মকানুন মানতে হয়। সেই নিয়মকানুন মেনেই গাড়ি চালকের গাড়ি চালানোর দায়িত্ব ছিল। সে সেই দায়িত্ব পালন করেনি। আরেকজন ভাড়াটিয়া গাড়িচালককে দিয়ে গাড়ি চালিয়েছে। সুতারং সবাইকেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। যার দায়িত্ব ছিল তাকে আমরা সাময়িক বরখাস্ত করেছি। চাকরি থেকেও তাকে অপসারণ করব। যে চালক গাড়ি চালানো অবস্থায় ছিল সে খুনি। তার সর্বোচ্চ শাস্তি আমরা নিশ্চিত করব। আমিও সেই খুনির ফাঁসি চাই।
আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবির পক্ষে সরকারের উচ্চপর্যায়ে এডভোকেসি করবেন জানিয়ে তাপস বলেন, কোনো বহিরাগত যেন ডিএসসিসির গাড়ি চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারের কাছ থেকে সব দাবি আদায়ের ব্যবস্থা করব। ঢাকা নিরাপদ শহর হবে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল। নিরাপদ সড়ক করতে আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি আমার সন্তানের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে এসেছি। আসার দিনেই নাঈমকে হারাব সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। নাঈম শুধু আপনাদের ভাই না, আপনাদের বন্ধু না……..সে আমার সন্তান। সন্তান হারা বাবা-মাকে সান্ত¡না দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই। আমিও মাত্র পৌনে চার বছর আগে আমার বাবা-মাকে হারিয়েছি। আমার মনেও কষ্ট ছিল। আমার মনেও আক্রোশ ছিল।
বড় হয়ে বাবা-মার হত্যার বিচার চাইব। নিজ হাতে খুনিদের খুন করব। কিন্তু আমি করি নাই। আমি সব কষ্ট বুকে ধারণ করে আমার মায়ের শর্ত পূরণ করেছি। মানুষের মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছি। শিক্ষা নিয়ে বাবা-মা হত্যার বিচার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য এজলাসে দাঁড়িয়েছি। এ সময় ছাত্রদের দাবি মেনে নাঈমের নামে এ বছরের মধ্যে দক্ষিণ সিটির নিজস্ব অর্থায়নে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের ঘোষণা দেন তিনি।