লজিক প্রকল্প : রৌমারীতে সোলার পাম্প স্থাপন শুরু

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী প্রস্তুতি : বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকার ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হবে > ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে

পরের সংবাদ

নটর ডেম ছাত্রের মৃত্যু : সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন কত দূর?

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত বুধবার রাজধানীর গুলিস্তানে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য বহনকারী গাড়ি প্রাণ কেড়ে নিল টগবগে নাঈম হাসান নামে নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীর। ১৭ বছরের মেধাবী ওই শিক্ষার্থী নটর ডেম কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের মানবিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২ দিন ধরে বিক্ষোভ-অবরোধ করেছেন তার সহপাঠীরা। নিরাপদ সড়কের দাবিতে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরছেন এবং নাঈম হত্যাকারীর চালকের বিচার দাবি করছেন। নাঈমের এমন করুণ মৃত্যুতে আমরাও মর্মাহত। জানা যায়, প্রতিদিনের মতো বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কলেজে রওনা হয়েছিলেন নাঈম। কামরাঙ্গীরচর থেকে হেঁটে গুলিস্তান পৌঁছতে হতো। ঘটনার দিন নাঈম গুলিস্তান পৌঁছেছিলেন ঠিকই কিন্তু তার কলেজে যাওয়া হয়নি। রাস্তা পার হতেই বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ি চাপা দেয় তাকে। রাস্তায় পড়ে থাকা সংজ্ঞাহীন নাঈমকে পথচারীরা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে নাঈম মারা যান। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্ম হয়েছিলেন নাঈম হাসান। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস! নিরাপত্তাহীন সেই সড়কেই প্রাণ ঝরল নাঈমের। রাজধানীর পরিবহনে নজিরবিহীন নৈরাজ্য চলছে। শৃঙ্খলা ফেরাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। রাজধানীতে দিনের বেলায় ময়লাবাহী গাড়ি না চালাতে আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে নগরের সব বর্জ্য অপসারণের কথা। কিন্তু বাস্তবে দিনের বেলায়ও এসব গাড়ি চলতে দেখা যায়। ময়লার গাড়িটি চালাচ্ছিল সিটি করপোরেশনের সাবেক পরিচ্ছন্নতাকর্মী। এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রশ্রয় ছিল। সিটি করপোরেশন এ দায় কোনোভাবে এড়াতে পারে না। সড়ক নিরাপদ করতে হলে নতুন আইন কার্যকরের বিষয়টি বারবার সামনে আসছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ২০১৮ সালের আগস্টে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে পরের মাসে ১৯ সেপ্টেম্বর সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ পাস করা হয়। নতুন আইনে জরিমানা ও বিভিন্ন অপরাধে শাস্তির মাত্রা বাড়ানো হয়েছিল। একপর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে আইনটি সংশোধনের ঘোষণা দেয় সরকার। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও আইনটির সংশোধন কিংবা বিধি কিছুই হয়নি। নাঈমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার সহপাঠীরা পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে দাবি-দাওয়া তুলছেন। একই দাবি আমরা ২০১৮ সালেও দেখেছিলাম। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, পেশাদার লাইসেন্স প্রদানে স্বচ্ছতা, সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি, বিগত দিনের সব দোষীকে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায় ওভারব্রিজ, সব ধরনের দলীয় আচরণ ত্যাগ করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা, পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সর্বোচ্চ আইন প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকর করার দাবি তুলছে। শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলো যৌক্তিক। আধুনিক, মানসম্পন্ন ও নিরাপদ সড়ক পরিবহন যে কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকেও গতিশীল করে। তাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এজন্য সময়ের ধারাবাহিকতায় সড়ক পরিবহন আইনে যে বিষয়গুলো সংযোজিত হয়েছে, তার কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি মনে করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়