লজিক প্রকল্প : রৌমারীতে সোলার পাম্প স্থাপন শুরু

আগের সংবাদ

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কী প্রস্তুতি : বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকার ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হবে > ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে

পরের সংবাদ

গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজ : সভাপতির দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় প্রভাষককে মারধর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : গুরুদাসপুর রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের ঘটনায় কলেজ রেজুলেশন মোতাবেক নিয়োগপ্রতি ১ লাখ টাকা কলেজের উন্নয়ন ফান্ডে জমা না দেয়ার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষক প্রতিনিধিকে মারধর ও শোকজ করা হয়েছে। উপজেলার রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রভাষক ও শিক্ষক প্রতিনিধি মাজেম আলীকে গভর্নিং বডির সভাপতির উপস্থিতিতে মারধর করা হয়। এমনকি বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগও রয়েছে কলেজ কমিটির বিরুদ্ধে।
শিক্ষকদের সূত্রে জানা যায়, অবৈধভাবে চার বছর ধরে গভর্নিং বডি সক্রিয় থেকে ইচ্ছামতো দুর্নীতি করে যাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষকদের শোকজ করার প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় গত ২০ নভেম্বর প্রভাষক মাজেম আলীকে মারধর করেন গভর্নিং বডির সদস্য আব্দুল বারী। এতে অসুস্থ হলে ওই শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। অতঃপর সভাপতিসহ ওই সদস্যের নামে থানায় জিডি করেন শিক্ষক মাজেম আলী। পরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের চাপে পড়ে কোর্ট থেকে ওই জিডি তুলে নিতে বাধ্য হন। এর আগেও ওই শিক্ষককে প্রতিহিংসামূলক সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ আলী নিয়মনীতি না মেনে নিজেই শোকজ করেন। যার প্রেক্ষাপ্রটে শিক্ষকরা গুরুদাসপুর থানায় আরেকটি জিডি করেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষক মাজেম আলী জানান, গত ২০ নভেম্বর অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধে বাধা দেয়ায় প্রভাষক মাজেম আলীকে মারধর করা হয়। এরপর সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মায়ারানীকে জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়ে তার স্থানে রুহুল করিম আব্বাসীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয় কলেজ পরিচালনা পর্ষদ। কলেজের সভাপতি শাহনেওয়াজ আলী ও সাবেক অধ্যক্ষ কলেজের তহবিল থেকে ২৫ লাখ টাকা এবং এফডিআরের ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। যার প্রেক্ষাপটে কলেজ শিক্ষকরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত অভিযোগও দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে ওই এফডিআরের ৬ লাখ টাকা মামলার চাপে পড়ে কলেজে ফেরত দিতে বাধ্য হয়।
এদিকে সাবেক অধ্যক্ষ মায়ারানী চক্রবর্ত্তীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে বাদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গভর্নিং বডির অবৈধ নিয়োগে বাধা প্রদান করায় আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চার বছর শাহনেওয়াজ আলী সভাপতি থাকাকালে ২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে নিয়োগ দিয়েছেন। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার বেশি নিয়োগ বাণিজ্য করলেও কলেজের উন্নয়ন তহবিলে কোনো টাকা দেননি। বিধিবহির্ভূতভাবে সময় পার হয়ে যাওয়ার পরেও নতুন করে সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এছাড়া দীর্ঘ ২০ বছর পর বেতন হওয়া ডিগ্রি শিক্ষকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অন্যায় কাজের প্রতিবাদ ও কলেজের উন্নয়ন তহবিলে টাকার দাবি করতে গেলে শিক্ষক প্রতিনিধি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে কোনো ছাত্রীর নাম উল্লেখ না করে জনৈক ছাত্রীর কথা বলে কোনো তদন্ত ছাড়াই প্রভাষক মাজেম আলীকে শোকজ করা হয়। মারধরের বিষয়ে জিবির সদস্য আব্দুল বারী জানান, গত ২০ নভেম্বর শিক্ষক প্রতিনিধি মাজেম আলীর সঙ্গে মিটিংয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুহুল করিম আব্বাসী বলেন, ছাত্রীর ঘটনাটি সন্দেহজনক। তাই তদন্ত করে আসল রহস্য উদঘাটন করা হবে। কলেজ পরিচালনা পরিষদের নির্দেশে প্রাথমিকভাবে প্রভাষক মাজেম আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। তবে নোটিস প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে লিখিত জবাব দিয়েছেন শিক্ষক মাজেম আলী। কিন্তু ছাত্রীর নাম-ঠিকানা বলতে রাজি হননি তিনি। এ বিষয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ আলীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভি না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়