কাগজ ডেস্ক : ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ফ্রান্স থেকে ব্রিটেন যাওয়ার পথে রাবারের ডিঙি চুপসে গিয়ে ২৭ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু ঘটেছে। গত বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর ফ্রান্সের বন্দরনগরী ক্যালের উপকূলে এ ঘটনা ঘটে বলে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ জানায়। মৃতদের মধ্যে ৫ জন নারী এবং একটি ছোট্ট মেয়েও আছে। চুপসে যাওয়া ডিঙির দুই শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে পৃথক করা এই সংকীর্ণ সমুদ্র পথটিতে দুর্ঘটনায় এটিই সবচেয়ে বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর প্রাণহানির ঘটনা বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইংলিশ চ্যানেল বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জাহাজ চলাচল পথ আর এখানে ¯্রােতও বেশ প্রবল। মানবপাচারকারীরা সাধারণত অতিরিক্ত শরণার্থী বোঝাই ডিঙিগুলোকে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে ঢেউয়ের মর্জির ওপর ছেড়ে দেয়, আর এভাবেই ওই অভিবাসন প্রত্যাশীরা ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। স্থানীয় জেলেরা জানান, শান্ত সমুদ্রের সুযোগ নিতে গত বুধবার অন্য দিনের চেয়ে অনেক অভিবাসন প্রত্যাশী চ্যানেলটির ফ্রান্স উপকূল ছেড়ে যায়। তবে সমুদ্র শান্ত থাকলেও পানি হিমশীতল ছিল।
বুধবার ভোরে রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ফ্রান্সের উইমোহর কাছে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি দলকে বালিয়াড়ির আড়াল থেকে বের হয়ে একটি রাবারের ডিঙিতে উঠতে দেখেন। এই একই দলকে কয়েক ঘণ্টা পর চ্যানেলের ৩০ কিলোমিটার জলপথ নিরাপদে পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ডানজেনেস উপকূলে নামতে দেখা যায়। মৎস্যজীবী নিকোলা মারগোল রয়টার্সকে জানান, বুধবার ভোরে তিনি ছোট দুটি ডিঙি দেখেছিলেন, একটির মধ্যে লোকজন ছিল কিন্তু অপরটি ছিল খালি। তিনি জানান, আরেকজন মৎস্যজীবী একটি খালি ডিঙি ও কাছেই ১৫ জনকে নিশ্চল অবস্থায় ভাসতে দেখে উদ্ধারকারীদের খবর দেন, হয় তারা অজ্ঞান হয়ে ছিলেন অথবা মারা গিয়েছিলেন। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেগাল্ড দাগমানা জানান, বাতাস বের হয়ে ডিঙিটি চুপসে গিয়েছিল। স্থানীয় মেরিটাইম প্রিফেকচারের এক কর্মকর্তা জানান, বুধবারের দুর্ঘটনার আগে এই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেন যাওয়ার চেষ্টাকালে আরো ১৪ জন ডুবে মারা যান। এর আগে ২০২০ সালে সাত জন মারা যান ও দুই জন নিখোঁজ হন এবং ২০১৯ সালে চারজনের মৃত্যু ঘটে।
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স এ ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ আখ্যা দেন। মারা যাওয়া শরণার্থীরা মানবপাচারকারীদের শিকার হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।