বন্ডে অনুমোদন দিল বিএসইসি

আগের সংবাদ

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল সড়ক : ২০১৮ সালের আন্দোলনের রেশ > ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম

পরের সংবাদ

মানবতাবিরোধী অপরাধ : বিএনপির সাবেক এমপি মোমিনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বগুড়ার আদমদীঘির পলাতক আব্দুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।
ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিয়োজিত আইনজীবী আবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল মোমিন তালুকদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও গণহত্যার ৩টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জনকে হত্যা ও ১৯টি বাড়ি অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংসেরও অভিযোগ রয়েছে।
রায়ের পর প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন সাংবাদিকদের বলেন, আব্দুল মোমিন তালুকদারে বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা বলা হয়েছে রায়ে।
এর আগে, গত সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার জন্য গতকালকের দিনটি ধার্য করেন। তারও আগে গত ৩১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করবেন বলে মামলাটি সিএভি (অপেক্ষমাণ) রেখে আদেশ দেন।
মোমিনের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ : প্রথম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল দুপুরের দিকে আসামি আব্দুল মোমিন তালুকদারসহ পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে ২০ জন পাকিস্তানি সেনা নিয়ে বগুড়ার আদমদীঘি থানার কলসা বাজার, রথবাড়ি ও তিয়রপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করতে অপারেশন চালায়। ওই দিন আসামি নিজে তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কলসা গ্রামের ইসলাম উদ্দিন প্রামাণিকসহ হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেন।
দ্বিতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবরে অভিযান চালিয়ে একই থানার কাশিমালা গ্রামে হামলা চালিয়ে ১৬ থেকে ১৭টি বাড়ি লুণ্ঠন এবং সেদিন পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেন।
তৃতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে আব্দুুল মোমিন তালুকদার রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নিয়ে আদমদীঘি থানার তালশন গ্রামের অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন।
২০১৮ সালের ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি আব্দুল মোমিন মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। আদমদীঘি থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে সহযোগিতা করেন অন্যান্য রাজাকার ও পাকিস্তান বাহিনীকে। তার বিরুদ্ধে মোট ৭১৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন আব্দুল মোমিন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়