বন্ডে অনুমোদন দিল বিএসইসি

আগের সংবাদ

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল সড়ক : ২০১৮ সালের আন্দোলনের রেশ > ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম

পরের সংবাদ

ফেব্রুয়ারিতে শেষ হচ্ছে পদ্মা সেতুর পিচ ঢালাই কাজ : যান চলাচলে প্রস্তুত হবে মার্চে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেব দুলাল মিত্র : আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ হবে পদ্মা সেতুর পিচ ঢালাইয়ের কাজ। এখন মাত্র ৫ ভাগ কাজ শেষ হলেই পদ্মা সেতু স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপ নেবে। বর্ষা মৌসুম না থাকায় বেশ ভালোভাবেই প্রথম দফায় কার্পেটিংয়ের কাজ এগিয়ে চলছে। আগামী ডিসেম্বর মাসে পিচ ঢালাইয়ের পাশাপাশি সেতুতে সড়কবাতি লাগানোর কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যেই চীনে তৈরি সড়কবাতি দেশে এসে পৌঁছেছে। গ্যাসের লাইন লাগানোর কাজও বেশ এগিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত অক্টোবর মাসে সেতুতে রোডস্লাব বসানোর কাজ শেষে পিচ ঢালাইয়ের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তের ৪০ নম্বর পিলারে বসানো রোডস্লাবের ওপর পিচ ঢালাই বা রোড কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়। গত ১০ দিনে সিডিউল অনুযায়ী কাজ চলছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, গত ২৩ আগস্ট রোডস্লাব বসানোর কাজ শেষ হয়। রোডস্লাব বসানোর কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পিচ ঢালাইয়ের কাজ পিছিয়ে দেয়া হয়। কারণ বৃষ্টির মধ্যে পিচ ঢালাইয়ের কাজ করলে তা মানসম্পন্ন হবে না। বৃষ্টি অনেক ক্ষতি করবে। এ কারণেই প্রায় ২ মাস অপেক্ষার পর গত ১০ নভেম্বর থেকে জাজিরা প্রান্তের ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর থেকে পিচ ঢালাইয়ের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
তিনি আরো জানান, প্রথমে আড়াই ইঞ্চি পুরু পিচ ঢালাই চলছে। রোডস্লাবের ওপরে প্রথম স্তরে ৬০ মিলিমিটার পুরু কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ৪০ মিলিমিটার পুরু কার্পেটিং করা হবে। সব মিলিয়ে ১০০ মিলিমিটার পুরু কার্পেটিং হবে। কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন না হলে কার্পেটিং শেষ হতে প্রায় ৪ মাস সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে হিসাব করলে ফেব্রুয়ারি মাসে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার আশা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা এবং এই হিসাবে মার্চ মাসে সেতুর সড়কপথ যানবাহন চলাচলের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত থাকবে। কর্তৃপক্ষ চাইলে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলেও দেয়া সম্ভব হবে।
সেতু কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায়, সেতুর ওপর সড়কবাতি লাগানোর কাজ আগামী ডিসেম্বর মাসে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। পিচ ঢালাই কাজের পাশাপাশি সড়কবাতি লাগানোর কাজও চলবে। ইতোমধ্যেই চীনে তৈরি সড়কবাতিগুলো দেশে এসে পৌঁছেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সব সড়কবাতি সেতুতে স্থাপনের কাজও শেষ হবে। একই সঙ্গে সেতুতে এক্সপানশন সংযোগ, প্যারাপেট ওয়াল, মিডিয়াম স্পিডিংসহ নানামুখী কর্মযজ্ঞ পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে চলছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতুতে এক সময় স্প্যান বসানো ছিল বড় অগ্রগতি। এরপর রোডস্লাব ও রেলস্লাব বসানো অগ্রগতি মাইলফলক স্পর্শ করে। এখন

সড়কপথে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলা অনেক বড় অগ্রগতি। একই সঙ্গে সেতুতে গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপনের কাজও পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে চলছে। স্প্যানগুলোর মাঝখানের ফাঁকা অংশ জোড়া লাগানো হয়েছে। পিচ ঢালাই ছাড়া সেতুতে বড় মডিউলের কোনো কাজ বাকি নেই, যা বাকি আছে তা সবই সাইড লেবেলের কাজ। যেমন সেতুর সাইড ওয়াল নির্মাণকাজ এগিয়ে চলছে। স্ল্যাব কাস্টিং প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রতি দুই মডিউলের সংযোগস্থলে প্রায় ৩০ ফুট ফাঁকা স্থানে সাটারিং করে ‘অন স্পট’ ঢালাই দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুতে ২ হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাব ও ২ হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হয়েছে। ২০২২ সালের জুন মাসে সেতুটি ব্যবহারের জন্য খুলে দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। দ্বিতল বিশিষ্ট পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে রেল চলবে। রেললাইনের পাশ দিয়েই গ্যাসলাইন বসানো হচ্ছে। অন্যদিকে সেতুর উপর দিয়ে চলবে যানবাহন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়