বন্ডে অনুমোদন দিল বিএসইসি

আগের সংবাদ

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল সড়ক : ২০১৮ সালের আন্দোলনের রেশ > ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম

পরের সংবাদ

পদ্মা চরের কাশবন তুলে চরভদ্রাসনে কৃষি বিপ্লব

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি : জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা নদী পাড়ের বিশাল বিশাল কাশবন ভেঙে চরাঞ্চলে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন বিএস ডাঙ্গী গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউদ্দিন খালাসীর ছেলে মো. রেজাউল হায়াত ওরফে শীপু খালাসী (৪২)। তিনি ফরিদপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে অফিস তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে চাকরিতে থাকার পরও অবসর সময়টুকু মজুরদের সঙ্গে কাজে লাগিয়ে পদ্মা চরের প্রায় সাড়ে চারশ বিঘা (দেড়শ একর) কাশবন উপড়ে ফেলেন। নিষ্ফলা জমিতে উৎপাদন করে চলেছেন শত শত মণ ধান, সরিষা, মসুর ও কালাই। ফরিদপুর বিএডিসির ডাল ও তৈলবীজ খামারের উপ-পরিচালকের পরামর্শে এবং ‘একখণ্ড জমিও অনাবাদি থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি পদ্মা চরের কাশবন ভেঙে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
শীপু খালাসী জানান, বর্তমানে আমার বাড়ি উপজেলা সদরে হলেও পুরাতন বসতভিটে ঘিরে মাথাভাঙ্গা গ্রামে পদ্মা পারে জেগে ওঠে বিশাল চর। কাশবন বেষ্টিত চর প্রায় ৩০ বছর ধরে জঙ্গলা জমি হিসেবে পড়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও ফরিদপুর বিএসডিসির উপ-পরিচালকের পরামর্শে ২০২০ সাল থেকে কাশবন উপড়ে ফেলে নিষ্ফলা জমিগুলো আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলেছি।
তিনি জানান, প্রথমে গ্রাস কাটার মেশিন দিয়ে বিশাল কাশবন জঙ্গল মুক্ত করা হয়েছে। পরে বড় ট্রাক্টর লাগিয়ে পর পর চার দফায় চাষ দিয়ে জমিগুলো আবাদযোগ্য করা হয়েছে। বনের জঙ্গল পরিষ্কার ও দেড়শ একর জমি আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছে। এতে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া মাসে ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নিয়মিত তিনজন মজুর জমিগুলো পরিচর্যা কাজে লাগানো হয়েছে।
সরেজিন ঘুরে দেখা যায়, কাশবন ভেঙে এ পর্যন্ত ২৫০ বিঘা জমিতে কালাই ফসল, ১১০ বিঘা মসুর, ৫০ বিঘা সরিষা ও ২৫ বিঘা জমিতে ধান ফসল আবাদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা একটি মৌসুমের ফসল ঘরে তুলেছেন এবং আরেকটি ফসল তোলা শুরু হয়েছে। এ দুটো ফসল মিলে তার খরচের টাকা প্রায় উঠে এসেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
তিনি এ পর্যন্ত বিক্রীত ফসলের মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টাকার তীল বীজ, ৪ লাখ টাকার কালাই, সোয়া ২ লাখ টাকার মসুর ও ২ লাখ টাকার ধানসহ সর্বমোট প্রায় পৌনে ১২ লাখ টাকার ফসল বিক্রি করেছেন। আর এ বছরের ফসলগুলো ঘরে তুলতে পারলে তিনি লাভের মুখ দেখবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া ফসলি মাঠ ঘেঁষে তিনি একটি গরু ও ছাগলের ফার্ম গড়েছেন। ‘তাজ এগ্রো ফার্ম’ নামকরণ দেয়া হয়েছে। ফার্মে ৩৫টি ছাগল ও ৮টি গরু রয়েছে।
মো. রেজাউল হায়াত ওরফে শীপু খালাসী আরো বলেন, পদ্মার চরে কাশবন ভেঙে যেটুকু উৎপাদনশীল জমি গড়েছি তা সম্পূর্ণ আমার নিজ উদ্যোগে নিজের পুঁজি খাটিয়ে করেছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পদ্মার চরাঞ্চলে পড়ে থাকা আরো অনেক কাশবন আবাদযোগ্য করে গড়ে তোলা সম্ভব। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মণ্ডল জানান, ইতোমধ্যে উপজেলার অনেকেই পদ্মার চরে নিষ্ফলা কাশবন ভেঙে আবাদযোগ্য করে তুলেছেন। আমরা তাদের ব্যাংকের লোন সহায়তা, সঠিক পরামর্শ ও অফিসিয়াল যাবতীয় সহায়তা প্রদান করে চলেছি এবং আধুনিক কৃষক শীপু খালাসী আমাদের কাছে আসলে আমরা তাকে যাবতীয় সহায়তা দিব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়