বন্ডে অনুমোদন দিল বিএসইসি

আগের সংবাদ

ছাত্র বিক্ষোভে ফের উত্তাল সড়ক : ২০১৮ সালের আন্দোলনের রেশ > ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম

পরের সংবাদ

কিশোরগঞ্জে পোস্টারে এমপির ছবি : সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয়ে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কামরুল আহসান কল্লোল, নীলফামারী থেকে : নির্বাচন কমিশনের বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কিশোরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চলানো হচ্ছে। পোস্টারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছবি ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা করায় প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে বড়ভিটা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বাবাসহ তিন ছেলে প্রার্থী হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা। বাবার প্রতীক লাঙ্গলের পক্ষে তিন ছেলেই এখন কর্মী হিসেবে কাজ করায় এমন অভিযোগ অন্য প্রার্থীদের।
সরজমিন কিশোরগঞ্জ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, এ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মো. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির পোস্টারে শোভা পাচ্ছে দলীয় প্রধানের পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতার ছবি। নির্বাচন কমিশনের পরিপত্র-৪ অনুযায়ী প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী রাজনৈতিক দলের মনোনীত হলে সেই ক্ষেত্রে তিনি কেবল তার দলের বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি পোস্টার বা লিফলেটে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ওই প্রার্থী তার পোস্টারে দলের প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসাইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমানের ছবি ব্যবহার করেছেন।
একই কায়দায় বড়ভিটা ইউনিয়নে জাপার মনোনীত প্রার্থী ফজলার রহমান দলীয় সাংসদের ছবি ব্যবহার করেছেন নির্বাচনী পোস্টারে। ওই প্রার্থীর তিন ছেলে আবু সাঈদ আখতারুজ্জামান ঘোড়া প্রতীক, আবু হেনা মোস্তফা জামান আনারস প্রতীক ও আবু সাজ্জাদ মোস্তফা জামান দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে নামমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। তাদের নিজের কোনো পোস্টার বা নির্বাচনী প্রচারণার মাইকিং নেই। বাবার লাঙ্গল প্রতীকের কর্মী হিসেবে মাঠে কাজ করছেন। এভাবে গ্রামের ও নিকটাত্মীয় আরো চারজনের মনোনয়ন পত্র দাখিল করে চেয়ারম্যান হিসেবে নামমাত্র প্রার্থী দিয়ে লাঙ্গল প্রতীকের পক্ষে কাজ করছেন। এ প্রসঙ্গে অটোরিকশা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও যুবলীগ নেতা জগলুল হায়দার জানান, পোস্টারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ছবি ব্যবহার করে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। এছাড়া তিন ছেলে ও চার নিকটাত্মীয়ের প্রার্থিতা নিয়ে ইউনিয়নবাসীর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে এজেন্ট নিয়োগের মাধ্যমে তাদের সমর্থনের এজেন্ট সংখ্যা বাড়ানোই মূল উদ্দেশ্য। এতে কেন্দ্র দখল বা গোলযোগ সৃষ্টি করার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে প্রার্থী হিসেবে কোনো প্রচারণা নেই সেখানে ভোটকেন্দ্রে ওইসব প্রার্থীর এজেন্ট রাখার যুক্তি নেই। তিনি বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বড়ভিটা বাজারের রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, শুনেছি এ ইউনিয়নে ১৪ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। কিন্তু আমরা ৫ জন প্রার্থীর পোস্টার, মাইকিং ও কর্মী দেখতে পাচ্ছি। বাকিগুলো লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীর ছেলে, ভাতিজা, জামাতা ও প্রতিবেশী। তারা ভোটকেন্দ্রের বুথে প্রার্থী হিসেবে নিজের দুজন করে এজেন্ট দিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করবে বলে লোকজন মুখে মুখে রটেছে।
মুঠোফোনে কথা হয় জাপা প্রার্থীর ছেলে আবু সাজ্জাদ মোস্তফা জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, বর্তমান যুগে প্রচারণায় মাইকিং বা পোস্টার লাগে না। প্রযুক্তির যুগে মোবাইলে সবকিছু প্রচার করা যায়। বাবার হয়ে কাজ করছেন কিনা। উত্তরে তিনি জানান, তাই বলতে পারেন। সংসদ সদস্যের ছবি পোস্টারে ব্যবহার করার প্রসঙ্গে জাপা মনোনীত প্রার্থী মো. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি জানান, বিষয়টি তার জানা ছিল না। তাই নতুন পোস্টার দিয়ে ওইসব পোস্টার ঢেকে দেয়া হচ্ছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, পোস্টারে দলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যের ছবি ব্যবহারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়া বড়ভিটা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে একই পরিবারের চার প্রার্থীর কারণে ভোট কেন্দ্রগুলো বিশেষ নজরদারির মধ্যে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়