নরসিংদীতে আটক নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান

আগের সংবাদ

‘তোরে আমি কি জন্য একা যাইতে দিলাম’

পরের সংবাদ

ভয়ংকর মাদক ‘ডিওবি’ উদ্ধার : এলএসডির চেয়েও ভয়ংকর > আসছে পোল্যান্ড থেকে > খুলনায় তিনজন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে প্রথমবারের মতো পোল্যান্ড থেকে আসা ‘ক’ শ্রেণির মাদক ডিমেথোক্সিব্রোমোএমফেটামিন (ডিওবি) উদ্ধার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। খুলনায় অভিযান পরিচালনা করে ডিওবি চক্রের সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- আসিফ আহমেদ শুভ, তার বন্ধু অর্ণব কুমার শর্মা এবং সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের খুলনার বয়রা বাজার শাখার ম্যানেজার মামুনুর রশীদ। গত সোমবার ধারাবাহিক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তারের পরে ডিএনসি বলছে, এলএসডি মাদকের খোঁজে অভিযান পরিচালনা করে ডিওবি চক্রের সন্ধান মেলে।
এলএসডির চেয়ে ভয়ংকর এ মাদকটি সেবনকারীদের কাছে প্রতি ব্লট ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। এটি সেবনে তৃতীয় নয়ন খুলে যায়। বিমানবন্দরের কুরিয়ারে মাদকটি ধরা না পড়ায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আনা হচ্ছিল এটি। ডিএনসির রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা জানান, ডিওবি নেয়া সেবনকারীকে যে কোনোভাবে প্রভাবিত করা যায়। ফলে সেবনকারী নির্দেশিত কাজ করতে উদ্যমী হয়ে ওঠে। এর জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করতে হয়। বেশি পরিমাণে সেবন করলে মৃত্যু হতে পারে।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিএনসির ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, ডার্ক ওয়েবসাইট থেকে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে ২০০ ব্লট ডিওবি কিনেন খুলনার যুবক আসিফ আহমেদ শুভ। অর্ডার করার এক মাসের মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদকের চালানটি সরাসরি তার বাসায় পৌঁছায়। বিমানবন্দরগুলোতে উন্নতমানের স্ক্যানার না থাকায় কুরিয়ারে আসা ডিওবি ধরা পড়েনি। তবে স্ক্যানারের এলএসডির মতো অন্য ধরনের মাদক দেশে আসতে পারে, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। গত আগস্ট মাসে কী ওয়ার্ড ‘স্টাশ’ শব্দটি পান গোয়েন্দারা। এরপর চলে অনুসন্ধান। তিন মাসের বেশি সময় অনুসন্ধান করার পর এই মাদকের সন্ধান মিলেছে।
ডিএনসির সহকারী পরিচালক (ঢাকা মেট্রো উত্তর) মেহেদী হাসান বলেন, গ্রেপ্তারের সময় শুভর বাসায় এলএসডি আর অর্ণবের বাসায় পাওয়া যায় ডিওবি। পোল্যান্ড থেকে কিনে ডিওবির ব্লটগুলো অর্ণবের বাসায় রাখা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শুভ জানান, তিনি দুই মাস আগে ২০০ ব্লট ডিওবি নিয়ে আসেন। সেগুলো তিনি নিজে সেবন করতেন এবং মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করতেন। নতুন ক্রেতা তৈরি করতে কিছু ব্লট বিনামূল্যেও দিয়েছেন তিনি।
অভিযানে থাকা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন বলেন, শুভ পোল্যান্ড থেকে দুই শতাধিক ডিওবি এনেছিলেন। আমরা অভিযানের সময় তার কাছে পেয়েছি ৯০টি। বাকিগুলো বিক্রি ও সেবন করেছে। খুলনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ডিওবি বিক্রির জন্য শুভর বিক্রেতা

রয়েছে বলে জানান হেলাল উদ্দিন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫-৬ জন সেলার আছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে একজন সেলার।
ডিএনসি কর্মকর্তারা বলেন, খুলনা থেকে মাদক কারবারি দুজনের সঙ্গে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের বয়রা শাখার ব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি মাদক কারবারিদের সঙ্গে যোগসাজশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পার্সেল পাঠাতেন। অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, বিমানবন্দর এবং কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে উন্নত স্ক্যানার স্থাপনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি। দেশে মাত্র একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের স্ক্যানার রয়েছে। বাকিদের কাছে যে ধরনের স্ক্যানার আছে তা দিয়ে এ ধরনের মাদক ধরা পড়ে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়