নরসিংদীতে আটক নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান

আগের সংবাদ

‘তোরে আমি কি জন্য একা যাইতে দিলাম’

পরের সংবাদ

কুমিল্লায় হত্যাকাণ্ড : খুনিদের ছাড় নয়

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত সোমবার নিজ কার্যালয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন কুমিল্লা সিটির কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও সহযোগী হরিপদ সাহা। খুনিরা কার্যালয়ে প্রবেশ করে বুকে ও মাথায় ৯টি গুলি করে। হত্যাকাণ্ডে ৫-৮ জন অংশ নেয়। তারা মুখোশ এবং মাথায় হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে বৃষ্টির মতো গুলি চালায়। এমন হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবাক হতে হয়েছে। কেন এমন হত্যাকাণ্ড তদন্তে নেমেছে তারা। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। জনজীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। সামান্য শত্রæতার বশে মানুষ হত্যা করছে মানুষকে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দায় মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরই বর্তায়। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এমন বক্তব্য দায় এড়ানোর বার্তাই দেয়। ঘটনা ঘটার পর তৎপর হওয়ার মধ্যে কৃতিত্ব নেই। ঘটনা যাতে না ঘটে, এমন পরিবেশ তৈরি করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। জানা যায়, কাউন্সিলর সোহেল সোমবার তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মুখোশধারী ৮-১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল অফিসে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। সন্ত্রাসীরা কাউন্সিলরসহ কয়েকজনকে গুলি করার পর আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এ সময় তাদের ওপরও গুলি করা হয়। এদিকে কাউন্সিলরকে গুলি করার ঘটনা স্থানীয় মসজিদের মাইকে জানানোর পর শত শত মানুষ ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে আসে। স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ কাউন্সিলরসহ আহতদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। জোড়া হত্যার ঘটনায় শাহ আলম নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহ করছে নিহতদের পরিবার। সে একজন মাদক চোরাকারবারি বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে আটক করতে পারলে পুরো ঘটনার রহস্য বের করা যাবে। শাহ আলমের সঙ্গে কাউন্সিলর সোহেলের বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। সোহেল কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকে শাহ আলমের মাদক ব্যবসায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া শাহ আলম গ্রুপের সঙ্গে কাউন্সিলর সোহেলের বিভিন্ন কারণে বিরোধ চলছিল। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে সমাজে খুন-খারাবিসহ নানা অপরাধ ঘটছে। ভোগবাদী হয়ে উঠছে মানুষ। এ কারণে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে একে অপরকে নৃশংস খুন করতে দ্বিধা করছে না। সাধারণভাবে এ ধরনের খুন-খারাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই নির্দেশ করে। দেশে আইনের শাসন, অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা বলবৎ থাকলে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকারই কথা। আমাদের দেশে এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে তা স্বীকার করতেই হবে। অনেক আলোচিত চাঞ্চল্যকর হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা বিচারহীন থাকছে দিনের পর দিন। অপরাধীরা নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে লঘুদণ্ডে পার পেয়ে যেতে পারছে। নাগরিকদের রক্ষা করাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত তার রহস্য উদ্ঘাটন করা এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়