নরসিংদীতে আটক নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান

আগের সংবাদ

‘তোরে আমি কি জন্য একা যাইতে দিলাম’

পরের সংবাদ

অর্পিত সম্পত্তি আইন : সংশোধনী প্রসঙ্গে ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ ও বিস্ময়

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৪, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধনী প্রসঙ্গে সম্প্রতি ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্যে গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন নাগরিক সমন্বয় সেলের নেতারা। গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিক্রিয়া জানায় সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৬ নভেম্বর জাতীয় একটি দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী ভূমিমন্ত্রী অর্পিত সম্পত্তি অবমুক্ত করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘এখন আইনটির একটু সংশোধনী লাগবে। এ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে’।
সোমবার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন নাগরিক সমন্বয় সেলের সচিবালয়ে এক জরুরি সভায় ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত অর্পিত সম্পত্তির অবমুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এড. সুলতানা কামাল, নারী নেত্রী ও নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং এইচ ডি আর সির অবৈতনিক উপদেষ্টা ড. আবুল বারাকাত, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এড. রানা দাশগুপ্ত, ব্লাস্টের আইন উপদেষ্টা এড. এস এম রেজাউল করিম, সামাজিক আন্দোলনের এড. তরারক হোসাইন, অর্পিত সম্পত্তি প্রতিরোধ আন্দোলনের এড. সুব্রত চৌধুরী এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, এএলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা প্রমুখ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মামলার রায় হওয়ার পর সম্পত্তি অবমুক্ত করা যেখানে এখন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি সেখানে ভূমিমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্য গভীর উদ্বেগের ও বিস্ময় সৃষ্টিকারী। এর আগে একাধিকবার এই আইনটির সংশোধনীর প্রস্তাবের নামে এক শ্রেণির অসৎ আমলা আইনের বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস চালিয়েছেন। সেই প্রয়াস বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীকে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে বিরক্তি প্রকাশ এবং উদ্যোক্তাদের তিরস্কার করতে হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকেই তা জানা গেছে। সর্বশেষে ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের কয়েকটি সংশোধনী পাস হওয়ার মাধ্যমে অর্পিত সম্পত্তির ‘খ’ তফসিল বাতিল করা হয় এবং ‘ক’ তালিকাভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হয়। মামলার নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনালে ত্বরান্বিত হলেও এক শ্রেণির দুর্নীতিপরায়ণ প্রশাসনের কারণে এখনো অর্পিত সম্পত্তি আইন ক্ষতিগ্রস্ত অধিকাংশ সংখ্যালঘু পরিবার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনে প্রত্যাশিত প্রতিকার পায়নি। আপিল ট্রাইব্যুনাল থেকে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের রায় দেয়া হলেও অধিকাংশ জেলা প্রশাসক তা বাস্তবায়ন করছেন না। যদিও আইনে এই রায় কার্যকরের জন্য ৪৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে।
এ ছাড়াও হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে যে, আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অথচ ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান প্রতিশ্রæতি ছিল, অর্পিত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে। কিন্তু প্রায় ৩ বছর হতে চলল। অর্পিত সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া এখন শ্লথ হয়ে গেছে। প্রায় ১৩ বছর ধরে কাজ করা অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন নাগরিক সমন্বয় সেলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯ বছরে ২১ জেলার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে আসা আবেদনের ১০ শতাংশ সম্পত্তিও অবমুক্ত হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়