টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

হোমনা সদরের বেহাল সড়কে চরম ভোগান্তি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. কামাল হোসেন, হোমনা (কুমিল্লা) থেকে : হোমনা উপজেলা সদরের চৌরাস্তা মোড় থেকে রেহানা মজিদ মহিলা কলেজ পর্যন্ত পৌর এলাকার এক কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। সড়কটি দেখলে মনে হবে এটি পুকুর অথবা খাল। মাত্র এক কিলোমিটারের এ সড়কটি সংস্কার না করায় উপজেলার উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ-খোয়া উঠে গেছে অনেক আগেই। এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দের। এবড়োথেবড়ো সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে। গর্তগুলোতে পানি জমে আছে। হোমনা অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ মডেল স্কুল এন্ড কলেজের সামনের সড়কে বিশাল গর্তে গাড়ি আটকে গিয়ে প্রায়ই যানজটের সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এতে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকরা। তারপরও কোনো উপায়ান্তর না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে যাতায়াত করছেন ভুক্তভোগী মানুষজন।
হোমনা চৌরাস্তার সিএনজি স্টেশনের লাইন ম্যান মো. পারভেজ হাসান বাবু বলেন, এ সড়ক ব্যবহার করেই হোমনা উপজেলার দুলালপুর, দড়িচর, রামকৃষ্ণপুর, চুনারচর, বাগমারা, রামপুর, পাথালিয়াকান্দি, দৌলতপুরসহ বাঞ্ছারামপুর ও মুরানগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন কম করে হলেও এ সড়কে পাঁচ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশা এবং ট্রাক, মাইক্রোবাসসহ আরো শতাধিক যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাত্র এক কিলোমিটার সড়ক খারাপ হওয়ায় এসব যানবাহন চলাচল করতে চরম দুর্ভোগে পড়ছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো যানবাহন সড়কের গর্তে আটকে যাচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশাগুলো উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। কোনো উপায়ান্তর না থাকায় যানবাহন চালকরা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে যানবাহন চালাচ্ছেন।
চৌরাস্তার লাইনম্যান আরো বলেন, সড়ক খারাপ হওয়ায় এমন কোনো দিন নেই যে, কোনো সিএনজিতে মাল লাগে না। প্রতিদিনই সিএনজিগুলোত মাল লাগিয়ে ঠিক করে নিতে হয়।
সিএনজি চালক শামীম মিয়া বলেন, সড়কের গর্ত অনেক বড় বড় এতে সব সময়ই পানি লেগে থাকে। পানি বেশি হয়ে গেলে কিছু দিন পর পর স্থানীয় লোকজনসহ আমরা নিজেরা মেশিন লাগিয়ে সড়কের পানি নিষ্কাশন করে থাকি। কারণ পানি নিষ্কাশন না করলে একেবারেই চলাচল করা যায় না।
এ সড়কের অটোচালক মানিক মিয়া বলেন, কম করে হলেও এই সড়কে প্রতিদিন শতাধিক অটো চলে। সড়ক খারাপ হওয়ার কারণে প্রায়ই আমাদের অটোগুলো উল্টে যায়। এতে আমাদের অটোগুলো যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি এর যাত্রীসহ আমরা চালকরাও অহরহ আহত হচ্ছি। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় সড়কের গর্ত বেশি হওয়ায় আমাদের অটোর বেশির ভাগ অংশই পানিতে ডুবে যায়। এতে পানিতে যাত্রীর ও আমাদের শরীর পানিতে ভিজে যায়। ফলে বৃষ্টির সময় যাত্রীরা বেশি অটোতে উঠতে চায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা নির্মল দেব বলেন, আমরা উপজেলা সদরে বসবাস করলেও এই সড়কটির কারণে ঘর থেকে বের হতে মন চায় না। কারণ বের হলেই হয়তো হাঁটু সমান পানির ওপর দিয়ে নয়তো, সিএনজি অটোরিকশায় উঠতে হয়। সড়কটির এ অবস্থায় আমরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।
এ সড়কের পাশের ব্যবসায়ী আরিফ, কালাম ও আতাউর বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে থাকে। ধরতে সব সময়ই সড়কে পানি থাকে। এতে আমাদের ব্যবসার চরম ক্ষতি হচ্ছে। সড়কে পানি থাকায় দোকানে ক্রেতা আসতে না পারায় আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পথে। এ সড়কে সিএনজি অটোকিশায় করে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা দিতে হোমনায় আসা দুলালপুর শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার ও আইরিন আক্তার জানান, সড়কের বড় বড় গর্তের কারণে সিএনজির ভিতরে থেকেও মনে হচ্ছে এই বুঝি পড়ে গেলাম। সিএনজিতে উঠেও সব সময় ভয়ে থাকি কখন যেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যাই।
এ ব্যাপারে হোমনা পৌর মেয়র এডভোকেট মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সড়কের অবস্থা অনেক খারাপ। সড়কটি আমার পৌরসভার ভেতরে থাকলেও এটি এলজিইডির অধীনে। চৌরাস্তা থেকে দুলালপুর পর্যন্ত এলজিইডির সড়ক। হোমনা উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম রনি বলেন, এটাকি এলজিইডির সড়ক, এটা তো পৌরসভার সড়ক, আমি নতুন এসেছি, খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উপসহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন বলেন, চৌরাস্তা থেকে দুলালপুর পর্যন্ত সড়ক এলজিইডির ঠিক আছে, কিন্তু রেহানা মজিদ মহিলা কলেজ পর্যন্ত এটা পৌরসভার অংশ। ইচ্ছা করলে এই পর্যন্ত পৌরসভা সংস্কার করতে পারবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়