টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

স্বাস্থ্যসেবায় লাগসই পরিকল্পনা প্রয়োজন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশের মানুষের সুস্বাস্থ্য হলো উন্নয়নযাত্রার পূর্বশর্ত। সময়ের ধারাবাহিকতায় আমাদের স্বাস্থ্যযাত্রা কি সন্তোষজনক গতিতে সামনে চলতে পেরেছে? স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রযাত্রা, সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণায় উঠে এসেছে দেশের স্বাস্থ্যসেবার মান নিয়ে করুণ চিত্র। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সেবার মান বাড়ার পরও দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা ৯৩ শতাংশ রোগী কোনো ওষুধ পান না। প্রায় ৮৫ শতাংশ রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে ছুটতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে। ফলে চিকিৎসা করাতে গিয়ে আর্থিক বিপর্যয়ের শিকার হন অনেক রোগী। সরকারি হাসপাতালগুলোর এটা নিত্যচিত্র। গত এক দশকে সার্বিকভাবে দেশের অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন হয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। কিন্তু মানুষের জীবন ও বেঁচে থাকার অবলম্বন স্বাস্থ্য খাত সমপরিমাণ গুরুত্ব পায়নি এতকাল। এজন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ মুহূর্ত থেকেই স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হচ্ছে, জিডিপির ৫ শতাংশের মতো অর্থ স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ দেয়া। বাংলাদেশে এক যুগের অধিককাল ধরে বাজেটে জিডিপির ১ শতাংশের কম বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থের কমবেশি ৭০ শতাংশ বেতন-ভাতা ইত্যাদির মতো অনুন্নয়নমূলক খাতে খরচ হয়। বাকি অর্থ স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ব্যবহৃত হওয়ার কথা। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামর্থ্যহীনতার কারণে প্রতি অর্থবছর স্বাস্থ্য বরাদ্দের একটি অংশ অব্যবহৃত থেকে যায়। তাই দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সামর্থ্যরে পরিধি বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। দুর্নীতি খেয়ে ফেলছে স্বাস্থ্য খাতকে। করোনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের আসল চেহারা খুলে দিয়েছে। দেখিয়ে দিয়েছে এ খাতটি কতটা দুর্বল। সরকারি বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার হলেও সাধারণ মানুষ চিকিৎসা, ওষুধ পেত। বিশ্লেষকরা বলছেন স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন বরাদ্দের ৮০ শতাংশই দুর্নীতির পেটে চলে যায়। দুদুক স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির ১১টি খাত চিহ্নিত করে সুপারিশও করেছিল। তার কোনো রেজাল্ট আমরা দেখিনি। দুদকের চিহ্নিত বিষয়গুলো হচ্ছে : কেনাকাটা, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, পদায়ন, চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার, ওষুধ সরবরাহ খাতে। সাদা চোখে দেখা দুর্নীতির বাইরে একটি অভিনব দুর্নীতির কথাও তখন বলে দুদক। আর তা হলো, দুর্নীতি করার জন্য অনেক অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা। এমন যন্ত্রপাতি কেনা হয় যা পরিচালনার লোক নেই। ওইসব যন্ত্রপাতি কখনোই ব্যবহার করা হয় না। ২০১৭ সালে টিআইবির খানা জরিপে স্বাস্থ্য খাতকে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া ৪২.৫ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে ঘুষ দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে অতীতে যারা জড়িত ছিলেন এবং এখনো আছেন, তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সময়ের দাবি। পাশাপাশি দেশের জনসাধারণের সামগ্রিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য লাগসই পরিকল্পনা প্রয়োজন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর শুভক্ষণে আমাদের স্বাস্থ্যযাত্রা সেই দিকেই ধাবমান হোক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়