কাগজ ডেস্ক : গল টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বোলিংয়ে দাপট দেখিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বোলাররা। স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগে লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারতেœর ১৪৭ রানের ইনিংসের সাহায্যে ৩৮৬ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। দিন শেষে ২৭৩ রানে পিছিয়েছিল সফরকারীরা। কাইল মায়ের্স ২২ রানে এবং জেসন হোল্ডার ১ রানে অপরাজিত ছিলেন। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন রামেশ মেন্ডিস।
এর আগে শ্রীলঙ্কার গলেতে প্রথম দিন তাণ্ডব চালানো শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদের দ্বিতীয় দিন খুব একটা এগোতে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলাররা। ৩৮৬ রানে বেঁধে ফেলেন লঙ্কানদের ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই সামাল দেন দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েট ও জার্মেইন ব্লাকউড। তবে দুইজন দলকে খুব বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। তাদের ওপেনিং ৪৬ রানের জুটিতে প্রথম আঘাতটি হানেন লঙ্কান স্পিনার লাসিথ এমবুলদেনিয়া। তার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ব্লাকউড। তিনি একটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৩ বলে ২০ রান করেন। এরপর ক্রিজে এসে স্থির হওয়ার সুযোগ পাননি এনক্রুমা বোনার। তাকে সাজঘরের পথ দেখান আরেক স্পিনার প্রবীণ জয়াউইক্রমা। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের পর খেলবেন কি খেলবেন না এই দ্ব›েদ্ব শেষ পর্যন্ত ব্যাট লাগিয়ে সরানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যে ব্যাটের কানায় লেগে বল ওঠে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে। তিনি ১১ বলে ১ রান করতে সক্ষম হন। এরপর যেন ক্যারিবীয় শিবিরে ধস নামতে থাকে। এতক্ষণ ম্যাচের হাল ধরে থাকা ওপেনার ব্রাথওয়েট মাঠ ছাড়েন দলীয় ৮০ রানে। তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান রামেশ মেন্ডিস। ব্রাথওয়েট ১১৫ বলে ৪১ রানের ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৭টি বাউন্ডারির মার। দলের খাতায় আর তিন রান যোগ না হতেই রামেশ ঘূর্ণিতে কুপোঘাত শাই হোপ। তিনি ৩১ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন। মাঠে রস্টন চেজকেও স্থির হতে দেননি মেন্ডিস। ইনিংসে তার তৃতীয় শিকার চেজ ব্যাট হাতে ২৪ বলে মাত্র ২ রান করেন। ৮৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে ক্যারিবীয়রা। পুরনো ক্ষতে ব্যথা বাড়িয়ে দেন জয়াউইক্রমা। তিনি এসে আবার সাজঘরে ফেরান জমেল ওয়ারিকেনকে। এই ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান ৮ বলে ১ রান করে মাঠ ছাড়ে। এর মায়ের্স ও হোল্ডার এসে আসা-যাওয়ার মিছিলে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান। গলে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান। মায়ের্স ২০ বলে ৫ বাউন্ডারির সাহায্য ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন। হোল্ডার ২ বলে ১ রান করে ক্রিজের অন্য প্রান্তে অপরাজিত ছিলেন। রামেশ মেন্ডিস ৬ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। ১২ ওভার বল করে ২৫ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন প্রবীণ জয়াউইক্রমা। এমবুলদেনিয়া ১৫ ওভার বল করে ৩৯ রান খরচায় শিকার করেন ১ উইকেট। দিন শেষে ক্যারিবীয়রা পিছিয়ে ২৭৩ রানে।
এর আগে ২৬৭ রানে প্রথম দিন শেষ করা শ্রীলঙ্কা দলের খাতায় ১৪ রান যোগ করতেই ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে হারান। তিনি দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বল রক্ষণভঙ্গিতে খেলতে গেলে তা কিছুটা থেমে স্টাম্পের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তাড়াহুড়ো করে ব্যাট দিয়ে বল সরাতে গিয়ে স্টাম্পে হিট করেন ধনাঞ্জয়া। ৯৫ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন এই লঙ্কান ব্যাটসম্যান। আগের দিন সেঞ্চুরি তোলা দিমুথ এদিন আর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। তাকে সাজঘরে ফেরান রস্টন চেজ। মাঠ ছাড়ার আগে করুনারতেœ ১৪৭ রানের ইনিংস খেলেন। ৩০০ বলের ইনিংসে তিনি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ১৫টি। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে কিছুটা আলো ছড়িয়েছেন দিনেশ চান্দিমাল। তবে তাকে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে দেননি চেজ। তিনি ৮৩ বলে ৪৫ রান করেন। তার ইনিংসে ৫টি বাউন্ডারির মার ছিল। এরপর টানা তিন উইকেট শিকার করে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ বড় হতে দেননি জমেল ওয়ারিকেন। ১৩৩.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা ৩৮৬ রান তুলতে সক্ষম হয়। ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল রস্টন চেজ ৮৩ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। ওয়ারিকেন ৮৭ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৩ উইকেট। লঙ্কানদের বাকি ২ উইকেট শিকার করতে গ্যাব্রিয়েলের খরচ ৬৯ রান।