টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

দেশে বেড়েছে ধর্ষণ-নারী নির্যাতন : ধর্ষণ-নারী নির্যাতন বেড়েছে দেশে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গত অর্থবছরের তুলনায় ২০২০-২১ অর্থবছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের হার বেড়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে এ-সংক্রান্ত মামলা বেশি হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে দেখা গেছে, এ সময়ে মামলার পরিমাণ কমেছে ৯১ হাজারের বেশি। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উত্থাপন করা হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত অর্থবছরে মোট মামলার সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার। চলতি অর্থবছরের শেষে এসে দেখা যায়, ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৬২টি মামলা হয়েছে। মামলা কমেছে প্রায় ৯১ হাজার। প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত অর্থবছরে ডাকাতির মামলা ছিল ৩৩৬টি, এ বছরে হয়েছে ৩২১টি। কমেছে ১৫টি। রাহাজানির মামলা ছিল ৯১৯টি, এ বছরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪৮টি। অস্ত্র আইনে মামলা ছিল ২ হাজার ১৬৭টি, এ বছর ১ হাজার ৭৪৭টি। খুনের মামলা ছিল ৩ হাজার ৪৮৫টি, এ বছরে ৩ হাজার ৪৫৮টি।
সাংবাদিকরা জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছরে ধর্ষণ মামলা ছিল ৫ হাজার ৮৪২টি, এ বছরে ৭ হাজার ২২২টি। নারী নির্যাতনের মামলা ছিল ১২ হাজার ৬৬০টি, এবার বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৭টি।
গত অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ১ হাজার ৩৮০টি এবং নারী নির্যাতন বেড়েছে ১ হাজার ৯৭টি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ৩০ জুন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রিপোর্ট আমাদের কাছে এসেছে। ইউপি নির্বাচন বা তেলের দাম বাড়ার ঘটনায় যেগুলো ঘটেছে, সেগুলো আসেনি। তিনি বলেন, মামলা প্রায় ৯০ হাজার কমে গেছে। ডিজিটাল কোর্ট হওয়ার ফলে বাসায় থেকে বা অন্য স্থানে থেকেও মামলাগুলো হ্যান্ডেল করা গেছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গত বছর গণহারে খাদ্য বিতরণ করা হয়। আমাদের খাদ্য মজুদের পরিমাণ কমে গিয়েছিল, এটা খুবই কমফোর্টেবল আছে। গত ৩০ জুনে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার টন, গত বছর ওই সময়ে মজুদ ছিল মাত্র ৬ লাখ টন। ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৪৭ (সাময়িক) এবং বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৯২৭ ডলার নিরুপিত হয়েছে। বর্তমানে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ৩ লাখ ২৮ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির হার ২৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। রপ্তানির পরিমাণ ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার।
সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। ২ লাখ ৭১ হাজার ২৫৪ জন বাংলাদেশি কর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৭টি একনেক সভায় ১৬৯টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১ হাজার ৯৪৯টি প্রকল্পে ব্যয় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫০ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ৮২ দশমিক ২১ শতাংশ। এডিপিতে ৩৪৫টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়। কৃষি ক্ষেত্রে সার, বিদ্যুৎ, ইক্ষু ইত্যাদি খাতে ৭ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়া হয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৪৮ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ ছিল, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ২৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ২৫ হাজার ৫১১ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়।
২০২০-২১ অর্থবছরে ২ হাজার ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠী ৯৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মূল সেতুর ৮৭ শতাংশ ভৌত অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছরের ৩০ জুন বা কাছাকাছি সময়ে যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ৭০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দেশে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ১৭ দশমিক ৫৩ কোটি এবং ইন্টারনেট গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ১০ দশমিক ৭৫ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। বর্তমানে দেশের টেলিডেনসিটি ১০৩ দশমিক ০১ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ডেনসিটি ৬৮ দশমিক ৪১ শতাংশ।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৫৩ হাজার ৩৪০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের বসবাসের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৫৪ হাজার ৪৩৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের অর্থ বরাদ্দ ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়, যা জাতীয় বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং জিডিপির ৩ দশমিক ০১ শতাংশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়