টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

ঠাকুগাঁওয়ে উৎপাদিত চিজ যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের উৎপাদিত মোজ্জারেলা চিজ (পনির) যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফাস্টফুডের সঙ্গে যে চিজ আমরা খাই; দুধ থেকে সেসব চিজ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে ঠাকুরগাঁও থেকে। সদর উপজেলার সালন্দরে ‘এমিনেন্ট এগ্রি ইন্ডাস্ট্রি’ নামে ওই কোম্পানি পরিচালনা করছেন নাগিনা নাজনিন কেয়া। স্থানীয় দুদ্ধ খামারিদের কাছ থেকে দুধ কিনে তা প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে চিজ তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে এ কারখানাটি। দেশের চাহিদা পূরণ করে এমিনেন্টের উৎপাদিত চিজ বিদেশেরও রপ্তানির প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানা যায়।
এমিনেন্ট এগ্রি-ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক নাগিনা নাজনিন কেয়া বলেন, ১৯৯২ সালে আমার বাবা হুমায়ুন রেজা এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। শুরুর দিকে হ্যাডস নামক এনজিও দ্বারা পরিচালিত একটি প্রকল্প থাকলেও বর্তমানে এর পরিধি ব্যাপক। প্রকল্পটির মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল পল্লী কৃষকদের দুগ্ধ এবং কৃষিজাত পণ্যগুলোর বিকাশ সাধনের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান উন্নয়নে সহায়তা করা। ওই সময় ফ্যাক্টরিতে দুধ নেয়ার ফলে ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভূমিহীন দুগ্ধ উৎপাদনকারীগণ ন্যায্যমূল্যে দুধ বিক্রি করতে পারত। ডেনমার্ক থেকে অভিজ্ঞ দুজন শিক্ষানবিস এনে তিন জন মহিলাকে মোজ্জারেলা চিজ তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদন শুরু করা হয়। ৯৮ সালে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে সোনারগাঁও হোটেলে ৫০ কেজি চিজ দিয়ে প্রথম বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। দাবি করা যায় এটিই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম মোজ্জারেলা চিজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠান চীজের পাশাপাশি ঘি, মাখন, দই ও বিভিন্ন কৃষিজাত পণ্য বিক্রি করে থাকেন।
কারখানায় গিয়ে জানা যায়, কারখানাটি পুরাতন স্থান থেকে সরিয়ে নতুন স্থানে স্থাপন করে উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। আপাতত করোনার কারণে ৭/৮ জন কর্মচারী দিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান আছে। তবে পুরোদমে উৎপাদন শুরু হতে আরো মাসখানিক সময় লাগবে বলে জানান কারখানা কর্তৃপক্ষ। ফ্যাক্টরিতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাইসাইকেল, ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরবাইকে করে দুধ এনে দিচ্ছেন খামারিরা। বর্তমানে এই চিজ কারখানাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে বলে জানা যায়। কারখানায় দুধ সরবরাহের ফলে দুগ্ধ খামারিদের দুঃখ-দুর্দশা, হয়রানি ও কষ্ট অনেকাংশে লাঘব হয়েছে।
সদর উপজেলার গড়েয়া এলাকার দুদ্ধ খামারি সাধন দাস ও হরিসাধনসহ কয়েকজন দুধের ব্যবসায়ী জানান, আগে শহরের বিভিন্ন হোটেল ও বাসা-বাড়িতে দুধ দিত তারা; দুধের দাম বাকি পড়ে থাকত দীর্ঘদিন। বর্তমানে এ ফ্যাক্টরিতে দুধ নিয়ে আর ঝামেলায় পরতে হয় না। এখানেই প্রতিদিন দুধ দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
সালন্দর ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল বলেন, নারী উদ্যোক্তা নাগিনা নাজনিন কেয়ার কারখানাটি ইতোমধ্যে পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ৬/৭ জন নারী কর্মী দিয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে চিজ। নারীদের কর্মসংস্থান ও উন্নতমানের চীজ উৎপাদন ও তা দেশে-বিদেশে বাজারজাতকরণনের মাধ্যমে এলাকার সুনাম সর্বত্র ছড়াচ্ছে এবং ঠাকুরগাঁও জেলা নতুন করে পরিচিতি লাভ করছে। আমি এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে সাধুবাদ জানাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়