টাইগ্রেসদের উড়ন্ত সূচনা পাকিস্তানকে হারিয়ে

আগের সংবাদ

খুনোখুনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুলিশ : অবৈধ অস্ত্রের পাশাপশি বেড়েছে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার > চলছে পুলিশের বিশেষ অভিযান

পরের সংবাদ

চাঞ্চল্যকর মৃত্যু হত্যা মামলা : মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) পরিবর্তন করা হয়েছে। আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা সম্প্রতি বদলি হয়ে যাওয়ায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন সংস্থার আরেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিমকে। গতকাল সোমবার পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর শাখার পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা পিবিআই পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিমকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে নতুন তদন্তকারী কর্মকর্তা এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ভোরের কাগজকে বলেন, আগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বদলি হওয়ায় আমার ওপর এই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পিবিআই চট্টগ্রাম নগর শাখা থেকে বদলি হয়ে গত বৃহস্পতিবার পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) যোগ দেন। তিনি বর্তমানে সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে পরিদর্শক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
অপরাধ দমন ও তদন্তে চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম জেলা শাখায় কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার তাকে একই সংস্থার নগর শাখায় বদলি করা হয়। এরপর গতকাল তিনি নগর শাখায় যোগ দিয়ে দেশজুড়ে আলোচিত মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি বলেন, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার দায়িত্বভার নিয়েছি। আপাতত কেস ডকেট, নথিপত্র যা যা আছে সেগুলো পর্যালোচনা করছি। এরপর তদন্ত শুরু হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। শুরু থেকেই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা মামলা তদন্ত করে আসছিলেন। মামলাটির তদন্তে দৃশ্যমান অগ্রগতিও এসেছে পিবিআইয়ের হাত ধরে। মিতু হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা এখন তদন্তাধীন আছে। এর মধ্যে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার যে মামলাটি করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে সেটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা পৃথক মামলারও তদন্ত চলছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের বেশ কিছুদিন পর থেকেই নানাভাবে স্ত্রী খুনে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ঘটনার পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ্যে আনেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।
চলতি বছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া। ওইদিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এদিকে গত ১৪ অক্টোবর কারাবন্দি বাবুল আক্তার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি দাখিল করেন। ২৭ অক্টোবর ওই আবেদনের ওপর শুনানি হয় বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে। আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে টেকনিক্যাল ত্রæটি আছে উল্লেখ করে অধিকতর তদন্ত করে আবার প্রতিবেদন জমা দিতে আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেন। ১২ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত। তবে অধিকতর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়া নিয়ে আপত্তি আছে বাবুলের আইনজীবীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়